বিনয়-নম্রতা সম্পর্কে কুরআনের আয়াত ও নাবী (সাঃ) এর হাদীছ

১০০+ স দিয়ে ছেলেদের ইসলামিক নাম অর্থসহবিনয়-নম্রতা সম্পর্কে কুরআনের আয়াত ও নাবী (সাঃ) এর হাদীছকে ঘিরে আজকের ব্লগটি। বিনয়-নম্রতা এমন গুণ যা ইসলামে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে তাঁর প্রিয় বান্দাদের চরিত্রে বিনয়ের অনন্যতা উল্লেখ করেছেন। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) তাঁর জীবনে বিনয় ও নম্রতার অসাধারণ উদাহরণ রেখে গেছেন। 

বিনয়-নম্রতা-সম্পর্কে-কুরআনের-আয়াত-ও-নাবী-(সাঃ)-এর-হাদীছ

প্রিয় পাঠক, মানবতার এই গুণগুলো মানুষকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের সাহায্য করে এবং সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় ও মজবুত করে। কুরআনের আয়াত ও হাদিসের আলোকে বিনয়-নম্রতার গুরুত্ব অপরিসীম। নিম্নে কুরআন ও হাদিস দিয়ে বিনয়-নম্রতাকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি ইনশাআল্লাহ। 

পেজ সূচীপত্রঃ

বিনয়-নম্রতা সম্পর্কে দারসুল কুরআন 

নম্রতা وضع হতে উৎপত্তি, বহু অর্থের মধ্যে একটি অর্থ হচ্ছে খাটো করা বা অপদস্থ করা। تواضع শব্দটি বিনয়-নম্রতা অর্থে ব্যবহৃত হয়। বিনয় বা নম্রতা একটি অসাধারণ গুণকে বলা হয়, যা ব্যক্তির জন্য শোভনীয়। যার অন্তরে আল্লাহর ভয় ভীতি ও দাসত্ব এবং নবীর আনুগত্য রয়েছে তার হৃদয়ে এই স্বভাব থাকাটাই স্বাভাবিক। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নবুওয়াতী জীবনের পূর্বের অবস্থার প্রতি দৃষ্টি দিলে দেখতে পারবেন, জীবন পাতায় কোন দাগ পাবেন না। 

আরো পড়ুনঃ তাহাজ্জুদের দোয়া কি এবং কখন তা বলতে হয় এটি অনেকেরই অজানা

তিনি স্বচ্ছ ও আমানতদার গুনে গুণান্বিত হওয়ার ফলে তাকে আরবের লোকেরা আলামিন উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। যেমন আল্লাহর কথা, তার নিয়ামত শেষ হবার নয়, যেন তার গুণাবলী বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না, বলেও শেষ করা যাবে না এবং কলমে লিখেও শেষ করা যাবে না। তার জীবনের প্রতিটি কথা, কার্যকলাপ কল্যাণকর। 

কুরআন মাজীদে রয়েছে, উম্মুল মুমিনিন আয়েশা রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, তার চরিত্রই কুরআন কারিম যা আপনি কুরআন পড়ে জানতে পারেনতার প্রতিটি বিষয় তিনি বাস্তবায়িত করেছেন। অর্থাৎ কোরআন থেকে তাকে আলাদা করা যায় না, কুরআন মানেই নাবী কারীম (স), কুরআনের জীবন ও চরিত্রই হচ্ছে তাঁর জীবন ও চরিত্র। আল্লাহ তাআলা তার এতিম নবীকে বাল্যকাল হতে যথাযথভাবে লালন পালন করেছেন। আল্লাহ বলেন, الم يجدك يتيما فاوى ووجدك ضالا فهدى ووجدك عائلا فاغنى 

যখন একটি সময় আপনার অতিবাহিত হয়েছে। যেটি ছিল এতিম করুন অবস্থা, দিশেহারা পথ, কষ্টকর অভাবী ও দুঃখজনক অবস্থা, সবকিছু ঘুচিয়েছেন তার রব। 

দাওয়াতে শুরুতে যখন নিজ গুষ্টির লোকদের সমবেত করে বললেন, তোমাদেরকে যদি আমি বলি, পাহাড়ের ওপার থেকে তোমাদের শত্রু তোমাদের প্রতি আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে, সকালে কিংবা বিকালে তোমাদের প্রতি আক্রমণ করতে পারে, তাহলে তোমরা কি তাহা বিশ্বাস করবে? সকলে সমস্বরে কথা উত্তর দিয়েছিল ما جربنا عليك كذبا قط

অর্থাৎ তোমাকে তো আমরা কখনো মিথ্যুক পাইনি। 

এখন আরম্ভ করতে চাই ওই গুণের কথা বা ঐ স্বভাবের আলোচনা যার অভাবে আমাদের মধ্য হতে বিদায় পেয়েছে ভ্রাতৃত্ব, সদয়, ভালোবাসা ও সহানুভূতি। প্রেম, স্নেহ, শ্রদ্ধা যা ঈমানের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত; এই মহান গুণাবলীর জন্য আল্লাহ তাআলা তার শেষ নবী মুহাম্মদ (সঃ) কে প্রথমে আদেশ করেন واخفض جناحك للمؤمنين আর মুমিনদের জন্য আপনার বাহু নম্র করুন। অপর আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন, واخفض جناحك لمن اتبعك من المؤمنين 

আর সে সমস্ত লোকদের সাথে নম্র ব্যবহার করুন যারা মুসলমানদের দলভুক্ত হয়ে আপনার পথে চলে। সূরাঃ শুআরা ২৬, আয়াত ২১৫)।

جناح শব্দটি ব্যবহারের উদ্দেশ্য হলো তাদের জন্য কমল এবং ভালবাসার আচরণ করার জন্য, পাখি যেমন তার ছানাদের প্রতি দয়া ও কোমলতায় আশ্রয় নিতে ইচ্ছা করে তখন সে তার ডানাদ্বয় দ্বারা আবৃত করে নেয়। পাখির ডানাকে جناح বলে, আর এই জন্য এখানে পাখির ডানার সাথে নম্রতাকে তুলনা করা হয়েছে। 

প্রকৃতভাবে আল্লাহ তা'আলা তাঁর নবীর গুণ বর্ণনা করে বলেন ঃ

لقد جاءكم رسول من انفسكم عزيز عليه ما عنتم حريص عليكم بالمؤمنين رؤوف رحيم 

(সূরা তাওবাহ ১২৮ নং আয়াত)। 

অর্থাৎ, তোমাদের নিকট এমন এক রাসূল আগমন করেছেন যিনি তোমাদের মধ্যে একজন বার্তাবাহক বা পয়গম্বর, যার নিকট তোমাদের জন্য  ক্ষতিকর বিষয় তা অতি দুর্বহ মনে হয়। যিনি এসেছেন তোমাদের মধ্য হতে অতিশয় হিতাকাঙ্খী এবং মুমিনদের প্রতি বড় স্নেহশীল ও করুণা পরায়ণ হিসেবে। সূরা আত তওবা/১২৮। তার দয়া মায়ের তুলনা করা যায় না। তিনি ছিলেন অনুপম ও অতুলনীয় দয়ার অধিকারী। তবে তুলনা এখানে শিরকের পর্যায়ে নয় এটা খেয়াল রাখতে হবে, আর না হলে আমল বরবাদ হয়ে যাবে শিরক করার কারণে।

নম্রতা-বিনয় সম্পর্কে হাদিসের দারস 

১টি হাদিসের মর্মার্থ হলো এমন, জারির বিন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা দিনের প্রথম বেলায় রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশে বসে ছিলাম, একপর্যায়ে কতিপয় লোক আগমন করলো খালি গায়ে এক্ষেত্রে শুধু পরনে পশমের কম্বল জাতীয় বস্ত্র ছিল, অথবা আবা পরিধানে ছিল। আর এরা সবাই তরবারি ঝুলানো অবস্থায় ছিল এবং এদের অধিকাংশ ছিল মুজার গোষ্ঠীর বরং বলা যায় সবাই মুজারী। 

তাদের এই দুরাবস্থা দেখে নবীর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। কারণ যা স্বচক্ষে তিনি দেখে চাঁদের অভাবের করুন দুর্দশা অনুভব করলেন। যেটা দেখে তিনি গৃহে প্রবেশ করলেন, অতঃপর বের হলেন এবং বেলালকে সলাতের জন্য আযানের আদেশ করলেন, বেলাল রাঃ আযান দিলেন এবং একামতও দিলেন, অতঃপর সুন্নত আদায় করলেন। এরপর বক্তব্য রাখলেন, হে লোক সকল! 

তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে একই আত্মা থেকে সৃষ্টি করেছেন। অবশ্যই তিনি তোমাদের অবস্থানের প্রতি দৃষ্টি রাখেন... শেষ আয়াত পর্যন্ত বল্লেন। সুরা হাশরে রয়েছে, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর আর প্রত্যেক মানুষকে লক্ষ্য করা উচিত যে আগামী কালের জন্য সে কি প্রেরণ করেছে? এ নসিহত শুনে, এক ব্যক্তি তার কিছু স্বর্ণ মুদ্রা দান করল। 

কেউ দিরহাম হতে, কেউ কাপড় হতে, কেউ খাদ্যদ্রব্য হতে একসা গম, কেউ জব হতেও দান করল। এ উৎসাহ বক্তব্যের শেষে গিয়ে বললেন, যদি একটি খেজুরের অংশও হয় তা থেকে তোমরা দান কর। অবশেষে এক আনসার ব্যক্তি একটি থলে ভর্তি সম্পদ নিয়ে আসছিল, মনে হচ্ছিল যেন তার দুখানা হাত তা বহন করতে অপারগ হয়ে যাবে,

আর তাই হলো, এবং লোকেরা ধরাধরি করে নিয়ে এলো; হাদিসের রাবি বর্ণনাকারী বলছেন, একপর্যায়ে দেখলাম, দুইটি খাদ্যদ্রব্যের এবং বস্ত্রের বস্তা। শেষে লক্ষ্য করলাম, আল্লাহর রাসূল (সাঃ) চেহারা খুশিতে স্বর্ণের উজ্জ্বল ও প্রফুল্ল দেখাচ্ছিল। (মুসলিম হা/২৩৯৮)।

মানুষের আনন্দে আনন্দিত, লোকেদের কষ্টে মনে ব্যথা ও অস্থিরতা বোধ করতেন। এই গুণের অধিকারী কে হবে? শান্ত মনে ভেবে দেখলে মনে হবে সহজ ব্যাপার কিন্তু বাস্তবে তা সহজ নয়। আল্লাহ তাআলা এ কাজটি জটিল হলেও লাভ ও ফলপ্রসূ হিসেবে আলোকপাত করেছেন। 

لا تستوي الحسنة ولا السيئة ادفع بالتي هي احسن فاذا الذي بينك وبينه عداوة كانه ولي حميم 

অর্থাৎ, সৎকাজ এবং পাপ কাজ সমান নয়। বরং আপনি সব ব্যবহার দ্বারা অসদ্ব্যবহার প্রতিহত করুন, অনন্তর হঠাৎ দেখতে পাবেন যে, আপনার মাঝে এবং তার মাঝে যে শত্রুতা ছিল সে এমন হয়ে যাবে যে, সে যেন আপনার এক অন্তরঙ্গ বন্ধু। (সূরা হামিম সিজদা আয়াত/৩)। বিনয়-নম্রতা থাকলেই আয়াতের বিশেষ নির্দেশটি পালন করা সম্ভব।

উক্ত আয়াতের মর্মে হাদীসে রাসূল (সাঃ) বলেন, 

عن عقبة ابن عامر قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول صل من قطعك واعف من ظلمك واحسن من اساء اليك 

উক্ববাহ বিন আমের রাঃ হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রসূল সঃ কে বলতে শুনেছি যে, তুমি তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্নকারীদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখো, তোমার প্রতি যে অন্যায় করে তাকে তুমি ক্ষমা কর, এবং তোমার সাথে যে দুর্ব্যবহার করে তুমি তার সাথে সদাচরণ কর। শায়খ আলবানী রহঃ তার সিলসিলাতুল আহাদীছ আস সহীহাহতে বলেন অত্র হাদিসের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ গুণের কথা। তিনি বলেন এটি অসাধারণ লোকের কাজ, এটা ওই ব্যক্তির দ্বারা সম্ভব যার মধ্যে রয়েছে ধৈর্যের পাহাড়। উত্তম চরিত্র অর্জনে এর বিকল্প নেই। 

এই মহৎ গুণের অধিকারী কারা হবে এ ব্যাপারে আল্লাহ পাক বলেন, 

وما يلقاها الا الذين صبروا وما يلقاها الا ذو حسن عظيم

অর্থাৎ, ইহা সেই ব্যক্তির ভাগ্যেই ঘটে যারা অতি অটল ও দৃঢ় (চরিত্রবান), আর ইহা সেই সকল ব্যক্তির ভাগ্যে জোটে যে মহা ভাগ্যবান। (জান্নাতি ব্যক্তি)। (সূরা হামিম সাজদা আয়াত/৩৫।)

অত্র আয়াতে, ধৈর্যের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বলা হয়, এক হাতে তালি বাজে না, এ কথাটা কিছুটা মানতেই হবে। এটা সত্য যে এক হাতে তালি হয় না প্রবাদ বাক্যে তা বলা হয়েছে। তারমানে কিছু পেতে হলে তো ত্যাগ স্বীকার করতেই হবে। আর মানুষদের বিরাট অংশ জান্নাতের লোভে সব হারিয়ে ফেলবে, ভুলে যাবে অর্থের মোহ, এবং এক্ষেত্রে নবীর আনুগত্য এবং আল্লাহর হুকুমের কাছে মাথা নত করতঃ সকল আত্মাকে বাধ্য করবে এই আমল করার জন্য। বিনয়-নম্রতা থাকলেই এ আমলটা করা যায়।

যদি আমার প্রতি কেউ অন্যায় করে তবে আমি তা চোখ বুঝে মেনে নিব এটা অসহ্য ব্যাপার। তবে এক্ষেত্রে, আমি আত্মাকে বাধ্য করবো আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নবীর আনুগত্য প্রদর্শনপূর্বক ক্ষমা করতে।  এভাবে নিরবে আমরা উত্তর দিয়ে যাব। কিন্তু আল্লাহর নির্দেশের কাছে নত হয়ে যে খারাপ ব্যবহার করছে সেটি তার ব্যাপার, আমাকে ভালো ব্যবহার করতে হবে কারণ এটি আমার অধীনে। আর আমরা অবাধ্য হত্যা তাকে সহ্য করার জন্য বাধ্য করছি, এক্ষেত্রে আমাদের জন্য ফলাফল অদূরে অপেক্ষা করছে। 

ধৈর্যের প্রতীক মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তিনি ক্রোধ দমন করেছেন। আল্লাহর বিরুদ্ধে, দ্বীনের বিরুদ্ধে তিনি ক্রোধান্বিত হতেন বটে কিন্তু ব্যক্তিগত বিষয়ে রাগতেন না, সহ্য করতেন আর পালন করতে আল্লাহর আদেশ। এখানে তিনি বিনয় নম্রতার বিশেষ ভাবটা ফুটিয়ে তুলেছেন।

আরেকটি হাদিসের মর্ম অর্থ 

আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ হতে বর্ণিত, কোন একদিন আল্লাহর রাসূল সাঃ অন্যান্য দিনের (কিছু) বিতরণের মত বিতরণ করছিলেন, তোমায় ক্ষেত্রে আনসারদের জনৈক ব্যক্তি বলল, এই বিতরণ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হয় নাই। আমি মনে মনে বললাম, অবশ্য আমি নবী (ছঃ) কে বিষয়টি জানাবো। অতঃপর নবী সাঃ এর নিকটে এলাম, এমতাবস্থায় তিনি সাহাবীদের মাঝে অবস্থান করছিলেন। 

তো তাকে গোপনে বললাম, এটি শোনার সাথে সাথে নবী সাঃ এর মনে কষ্ট হলো, চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল এবং তিনি ক্রোধান্বিতও হলেন। ভাবলাম যে যদি তাকে ওই সংবাদ নাই দিতাম! অতঃপর তিনি বললেন এর চাইতে মূসা আলাইহিস সালামকে বেশি কষ্ট দেয়া হয়েছে। অতঃপর সবর করলেন। বোখারী দ্বিতীয় খন্ড ৯০১ নম্বর পৃষ্ঠা।

আরো পড়ুনঃ পরিবারের সলাত ত্যাগকারী লোকদের সাথে মিলেমিশে বসবাস করার বিধান কি?

অন্যায়ের প্রতিশোধ না নেওয়া উত্তম কাজ, প্রতিশোধ নেওয়ার অধিকার রয়েছে, ক্ষমতাও রয়েছে। তথাপি আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের ধৈর্য ধারণ করতে এবং ক্ষমা করার আদেশ করেছেন, এটি বিনয়-নম্রতার পরিচয়ক হবে। যদিও অধিকারের দিকটাও বজায় রাখা হয়েছে। শয়তান ভালো কাজ হতে দেয় না, মেজাজ গরম করে তুলে এই বলা যে আমি কারো থেকে কম নই। এটি তার গর্ব ও অহংকার ফুটিয়ে তোলে। কিন্তু আল্লাহ আমাদেরকে কি বলেছেন? আল্লাহ আমাদের বলেছেন, 

وان عاقبتم فعاقبوا بمثل ما عوقبتم به ولئن صبرتم له خير للصابرين 

অর্থাৎ, আর তোমরা যদি প্রতিশোধ গ্রহণ করতে উদ্যত হও, তবে ওই পরিমাণই প্রতিশোধ গ্রহণ করো যে পরিমাণ তোমরা অত্যাচারিত হয়েছো। আর যদি ধৈর্য ধারণ করো তবে ওরা ধৈর্য ধারণকারীদের জন্য অতি উত্তম কাজ। মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশ আমাদের জন্য নিশ্চয়ই কল্যাণকর এই নিশ্চয়তা দেয়। 

শেষ কথাঃ এই নসিহত মূলক নির্দেশকে হৃদয়ে ধারণ করে এই মহৎ গুণ বিনয় বা নম্রতার অধিকারী হওয়ার জন্য আমরা আগ্রহী হই। আমরা যেন এ গুণের অধিকারী হতে পারি, আল্লাহ তায়ালার সেই তৌফিক দান করুন, আমিন!

লেখকের শেষ মন্তব্য

বিনয়-নম্রতা সম্পর্কে কুরআনের আয়াত ও নাবী (সাঃ) এর হাদীছ কে সামনে রেখে ব্লগটি সংকলন করেছি। সম্মানিত পাঠক, বিনয় নম্রতার শুধু ইসলামী আদর্শের অংশ নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনধারা।কুরআন ও হাদিসের শিক্ষাগুলো আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এই গুণাবলী বাস্তবায়নের জন্য উদ্বুদ্ধ করে। 

আমাদের উচিত মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পথ অনুসরণ করে বিনয়কে হৃদয়ে স্থান দেওয়া এবং মানবজাতির কল্যাণে কাজ করা। এতে আমরা দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা অর্জন করতে পারব। উপরে উল্লেখিত বিষয়টির পুরোটা বুঝে প্রথমে আমাকে এবং আপনাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন! আরও এমন ব্লগ বা লিখা বা সংকলন বা সংগ্রহ পেতে সাথেই থাকুন ইনশাআল্লাহ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url