মেয়েদের মুখের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার উপায় - ব্রণের কালো দাগ দূর করার ক্রিম
মেয়েদের মাসিক হওয়ার লক্ষণমেয়েদের মুখের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে প্রত্যেক সচেতন মেয়েই
জানার আগ্রহ প্রকাশ করে। সজাগ মেয়েদের মুখে ব্রণ ও কালো দাগ হলে তারা অতিস্বত্বর
পদক্ষেপ নেয়। এক্ষেত্রে, আপনি ব্রণের কালো দাগ দূর করতে ক্রিম ব্যবহার করতে
পারেন।অনেকেই অনলাইনের যুগে গুগল সার্চ করে জ্ঞাত হতে চেষ্টা করে। আজকের আর্টিকেলে
মেয়েদের মুখের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার উপায় ও কি ক্রিম ব্যবহার করলে ব্রণ এবং
দাগ দূর হবে তা নিয়ে ধারণা দিতে সচেষ্ট হব। আচ্ছা চলুন ব্যাপারটি এক্সপ্লোর করি।
মেয়েদের মুখের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার উপায়
মেয়েদের মুখের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার উপায় নিয়ে মেয়েরা ইন্টারনেটে সার্চ করে।
আমি এখানে তত্ব ও তথ্য ভিত্তিক লিপিবদ্ধ করছি। প্রিয় পাঠক, আপনার মুখে ব্রণ বা
কালো দাগ হলে নিশ্চয় ভালো লাগার কথা না। মুখে ব্রণ ও দাগ নিয়ে সমাজে, বাজারে বা
মানুষের যেতে খারাপ লাগাই স্বাভাবিক। কারণ মানুষের মুখ হলো শরীরের সৌন্দর্য্যের
রাজধানী।
তাই নো কোনো চিন্তা না করে আর্টিকেলটিতে আপনার সুন্দর মুখের অসুন্দর ব্রণ ও কালো
দাগগুলো কিভাবে দূর করা যায় তার উপায়গুলো বিভিন্ন টাইটেলে, পয়েন্টে এবং পদ্ধতিতে
বুঝাব (আল্লাহ তৌফীক্ব দান করুন)। মেয়েরা মুখের ব্রণ ও কালো স্পট বা দাগ নিয়ে
চিন্তিত থাকে এবং চিন্তা করাটাই স্বাভাবিক, যেহেতু মুখের সৌন্দর্যই অন্যকে
ইম্প্রেস করা ও ভালো লাগার মাধ্যম।
আরো পড়ুনঃ শীতে বাচ্চাদের যত্ন - শীতে বাচ্চাদের স্বাস্থ্য
তাই মুসলিম মেয়ে ও যেই মেয়েরাই ইভটিজিং বা উত্যক্ত হওয়া থেকে বাঁতে মুখে ঢেকে
রাখার কোনো বিকল্প নেই। চলুন কথা না বাড়িয়ে নিচে ব্রণ ও দাগ দূর করার উপায়গুলো
পড়ে জেনে নিই। প্রিয় পাঠক, মুখের ব্রণ ও কালো দাগ গুলো বিভিন্ন উপায়ে দূর করা
যায়, যেমন ঘরোয়া উপায়ে, বিভিন্ন ভিটামিন ও সাপ্লিমেন্ট খেয়ে, বরফ, লেবু, বেসন এবং
বিভিন্ন ঔষধ ও ক্রিমের মাধ্যমে প্রভৃতি।
মধু ও দারুচিনি প্যাকঃ প্রিয় পাঠক, মধু ও দারুচিনি প্যাক তৈরি করার জন্য
সর্ব প্রথমে আপনি এক চা চামচ মধু এবং আধা চা চামচ দারুচিনির গুঁড়ো নেবেন এবং
দুইটাকে ভালোভাবে মিশিয়ে নিবেন। এভাবে সুন্দর একটি মধু ও দারুচিনির প্যাক তৈরি
হয়ে যাবে। আপনি এই প্যাক বা মিশ্রিত দ্রব্যটা নিয়ে মুখে লাগান। মুখে লাগানোর 10
থেকে 15 মিনিট পর পরিষ্কার করে ফেলুন। এটি আপনি এক সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে
পারেন। এটি করলে দেখবেন মুখের ব্রণ ও কালো দাগ গুলো ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাচ্ছে
এবং আপনার মুখ হয়ে যাচ্ছে সুন্দর ও মশ্রিণ।
অ্যালোভেরা জেলঃ আপনি প্রতিদিন রাত্রে আপনার মুখে এলোভেরার জেল লাগিয়ে
রাখতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনার মুখের ত্বকের কালো দাগ দূরীকরণে সহায়ক হবে এবং
ব্রণ দূর হবে। এলোভেরা জেল আপনি কেন ব্যবহার করবেন, কারণ এতে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণ ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেগুলোর ক্ষমতা হল আপনার শরীরের ভেতরও
বাহিরের যেকোনো বর্জ্য ও ময়লা নিমিষেই ধুয়ে মুছে সাফ করে ঝকঝকে তকতকে করে দিবে।
লেবু ও মধুঃ মেয়েদের মুখের ত্বকের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার উপায়গুলোর
মধ্যে অন্যতম কার্যকরী উপায় হচ্ছে লেবু ও মধু। কারণ, লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি ও
ব্লিচিং এলিমেন্ট যেগুলো ও ত্বকের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে। তো এক্ষেত্রে, আপনি
এক চা চামচ লেবুর রস ও এক চা চামচ মধু মিশ্রিত করে আপনার মুখের নির্দিষ্ট ব্রণ ও
কালো দাগগুলোতে লাগান। এরপরে ১০ মিনিট পর আপনার মুখ থেকে ধুয়ে ফেলুন। এটি আপনি ৭
দিনে দুইদিন পর পর তিনদিন ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে আপনার মুখের ত্বক অনেকটাই
ব্রণ ও দাগ মুক্ত হবে।
টমেটো মাস্কঃ একটু টমেটো হচ্ছে অত্যন্ত উপকারী একটি সবজির নাম, যার ভিতরে
রয়েছে লাইকোপিন নামে এক উপাদান। এটি আপনার মুখের ত্বক বা স্কিনের কালো দাগকে দূর
করে উজ্জ্বল করবে এবং ব্রণ দূর করতে সহায়তা করবে। এজন্য আপনি টমেটো থেকে টমেটোর
রসটা বের করে আপনার মুখের স্কিনের নির্ধারিত ব্রণ ও দাগে 15 মিনিট ধরে লাগিয়ে
রাখুন এরপরে এটিকে সুন্দর ও স্বচ্ছ করে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে আপনি দুইবার
ব্যবহার করতে পারেন, এতে করে আপনার ফেস স্কিন দাগ মুক্ত হয়ে ব্রাইটফুল হবে এবং
ব্রণ ও দূর হবে।
চন্দন ও গোলাপজলঃ চন্দন এবং গোলাপজল এই দুইটি জিনিস সঠিকভাবে আপনি ব্যবহার
করতে পারলে এগুলোর দ্বারা ও আপনার ত্বকের ব্রণ ও কালো দাগ দূরীভূত হবে এবং
গোলাপজল বিশেষ করে আপনার স্কিন বা ত্বককে কুল বা ঠান্ডা রাখবে। আর ব্যবহারের
নিয়ম হচ্ছে আপনি এক চা চামচ চন্দন গুঁড়া এবং কয়েক ফোটা গোলাপজল একসঙ্গে মিক্স
করে একটা পেস্ট তৈরি করুন। এরপর এটিকে 15 মিনিট আপনার নির্দিষ্ট ত্বকে ব্যবহার
করুন বা লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এটিও দুই-তিনবার করতে পারেন, তাহলে
আপনার ত্বক নিট এন্ড ক্লিন হয়ে যাবে।
গ্রিণ টি বা সবুজ চাঃ আপনি সবুজ চা তৈরি করতে পারেন যেই চায়ের ভিতরে
রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা ডিটক্সিফাই করতে পারে এমন শক্তি। অর্থাৎ এর দ্বারা
ও আপনার মুখের ব্রণ হালকা হতে এবং কালু দাগ দূর হতে ভূমিকা রাখবে। এক্ষেত্রে আপনি
প্রথমত সবুজ চা তৈরি করে এটিকে ঠান্ডা করে নিন, এবং কটন বা তুলার সাহায্যে আলতো
করে মুখে লাগান। এটি আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমিয়ে তুলবে এবং ব্রণ ও স্পটগুলো
কমাতেও সাহায্য করবে। ঐটি আপনি সপ্তাহে দুইবার করতে পারেন।
রাইট ফুড হেবিট বা সঠিক খাদ্যাভ্যাসঃ আপনি যদি আপনার প্রাত্যহিক জীবনে
খাবারের ব্যালেন্স বা ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য অভ্যাস গড়া শুরু করে দেন তাহলেও
আপনার মুখের ব্রণ ও কালো দাগ গুলো আস্তে আস্তে সরে যেতে থাকবে। এক্ষেত্রে আপনি
ডেইলি রুটিন করে আপনার ত্বক কে ভালো রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন,
আপনার খাদ্য তালিকায় সবুজ শাক-সবজি এবং বিভিন্ন আইটেমের ফলফলাদি রাখুন। বিশেষ
করে বেশি পরিমাণে মসলাযুক্ত খাবার এবং ভাজাপোড়া খাওয়া এভয়েড করে চলুন। তাহলেই
আপনার ত্বক স্লোলি ঝকঝকে ও মসৃণ হতে লাগবে।
সানস্ক্রিন বা ব্যবহারঃ মিষ্টি সূর্যের আলো যেমন আপনার স্কিন বা ত্বকের জন্য
উপকারী আবার অত্যাধিক প্রখর সূর্যের আলো বা রশ্মি আপনার মুখের স্কিন বা ত্বকের
জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি যদি স্কিন খোলা রেখে প্রখর সূর্যের
রশ্মিতে হাঁটাচলা করেন তাহলে আপনার ত্বকের দাগ আরো বাড়াতে পারে এবং ব্রণ বেশি
হয়ে যেতে পারে। তাই আপনি বাড়ির বাইরে যাওয়ার আগেই সূর্য রশ্মি থেকে বাঁচতে
সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন যেটি আপনার ত্বকের জন্য সেফটি মেইনটেন করবে।
ভিটামিন ও সাপ্লিমেন্ট আপনার ত্বক সুন্দর রাখার জন্য ভিটামিন এ, সি, এবং ই
অত্যাধিক উপকারী।
১। ভিটামিন এ আপনার ত্বকের মৃত সেল বা কোষ পুনর্জিবিত করতে সহায়ক হবে এবং
গ্রহণ কমাতে সাহায্য করবে।
২। ভিটামিন সি এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে এবং স্পট বা দাগ লাইট বা
হালকা করতে দারুন ভাবে হেল্প করবে।
৩। ভিটামিন ই এটি আপনার ত্বকের মশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এছাড়াও, এটি
জিংক এবং বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট হিসেবে কাজ করবে যেটি ব্রণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা
রাখবে। তবে কোনটা কি মাত্রায় খেতে হবে এটি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণের
কোনো বিকল্প নেই।
বেসন ও দইয়ের মিশ্রণঃ বেসন আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করে ময়লা
পরিষ্কার করবে। এবং দই আপনার ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃন করবে। তো এক্ষেত্রে আপনি ২
টেবিল চামচ বেসন এবং এয়ার টেবিল চামচ দই এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে একটা
পেস্ট তৈরি করে মুখে ব্যবহার করুন। এরপর এটি শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে
পরিষ্কার করে ফেলুন। এটি ৭ দিনে ২-৩ বার করলে আপনার ত্বকের কালো দাগ ও ব্রণ কমাতে
সাহায্য করবে।
বরফের ব্যবহারঃ বরফ রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং স্কিন বা ত্বকের প্রদাহ
বা জ্বালাপোড়া কমায়। তো এক্ষেত্রে আপনি একটি ধোয়া ও পরিষ্কার করা কাপড়ে বরফ
নিয়ে দুই তিনবার আপনার নির্দিষ্ট মুখের ত্বকের কালো দাগ এবং ব্রণের উপরে লাগাতে
থাকুন। এটি করলে বরফ এর ঠান্ডা ব্যাপারটা আপনার স্কিন বা ত্বককে শান্ত ও মসৃণ
করবে এবং ব্রণ দ্রুত শুকাতে ও দূর করতে সাহায্য করবে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারঃ আপনার ত্বকের কালো দাগ এবং ব্রণ কমানোর
জন্য সবচেয়ে ডিটক্সিফাইং বা টক্সিন বা বা দৈহিক আভ্যন্তরী ময়লা দূর করার জন্য
উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে শাক-সবজি, ফলমূল, এবং গ্রিন টি বা
সবুজ চা পান করতে পারেন। এই খাবারগুলো আপনার ত্বকের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা বাড়াবে
এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট দেহকে প্রদান করবে যা আপনার ত্বককে বিভিন্ন ফ্রি রেডিক্যাল
বা ত্বকের ক্ষতিকারক পদার্থ থেকে মুক্ত করে মসৃণ, উজ্জ্বল করবে এবং ব্রণ ও কালো
দাগ মুক্ত করবে।
মেয়েদের মুখের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার উপায়গুলো নিয়মিত ফলো করলে ত্বকের ব্রণ ও
কালো দাগ বা স্পটগুলো ধীরে কমে ও হালকা হয়ে একিবারে ভ্যানিশ হয়ে যাবে। তাই
রেগুলারিটি মেইন্টেইন করে উপায়গুলো ব্যবহার, খাওয়া এবং মেইন্টেন্যান্স করুন।
ব্রণের কালো দাগ দূর করার ক্রিম
ব্রণের কালো দাগ দূর করার ক্রিম ব্যবহার করেও স্পট ও দাগ এবং ব্রণ দূর করা যায়।
প্রিয় পাঠক, বাজারে মুখের ত্বকের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার বিভিন্ন ক্রিম
দেখা যায় এবং পাওয়া যায়। তবে, দেখে শুনে মান উন্নত ও গুনাগুণ সমৃদ্ধ ক্রিম
ব্যবহার না করলে উলটো উপকারের বদলে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এই জন্য কোম্পানী
ও গুণোমান যাচাই-বাছাই করে ক্রিম ক্রয় করুন। নিম্নে বাছাইকৃত কয়েকটি ক্রিমের
আইডিয়া ও এ সংক্রান্ত তালিকা দেওয়া হলো।
ক্র | ক্রিমের নাম | উপাদান | উপকারিতা | আনুমানিক মূল্য |
---|---|---|---|---|
১ | মেলাড্রাম স্কিন লাইটেনিং ক্রিম | কোজিক এসিড ও ল্যাকটিক এসিড | ত্বকের কালো দাগ দূর করতে সহায়ক ক্রিম | প্রায় ১৫০০-২০০০ টাকা |
২ | ডার্মাটোলজি হাইড্রো কুইনোন | হাইড্রোকুইনোন ২% রয়েছে | ব্রণের দাগ ও মেলানিন কমায় | প্রায় ৫০০-১০০০ টাকা |
৩ | পন্ডস ব্রাইট বিউট | ভিটামিন বি৩ ও গ্লুটাথাইওন রয়েছে | ত্বক উজ্জ্বল ও দাগ হালকা করে | প্রায় ২০০-৪০০ টাকা |
৪ | গার্নিয়ার লাইট কমপ্লিট | ভিটামিন সি ও লেমন এসেন্স | কালো দাগ ও হালকা ত্বক উজ্জ্বল করে | প্রায় ২৫০-৪৫০ টাকা |
৫ | ল্যাকমে পারফেকট রেডিয়েন্স | মাইক্রো ক্রিস্টাল ভিটামিন ই | ত্বকের স্পট দূর করে ও উজ্জ্বলতা আনে | ৫০০-৭৫০ টাকা |
৬ | নিউট্রিজিনা র্যাপিড ক্লিয়ার | স্যালিসাইলিক এসিড রয়েছে | ব্রণ দ্রুত শুকিয়ে দাগ কমায় | প্রায় ৭০০-৯০০ টাকা |
৭ | প্যান অক্সিল ১০% জেল | বেনজয়েল পার অক্সাইড | ব্রণ দূর করতে দ্রুত কার্যকর | প্রায় ৬০০-৮০০ টাকা |
বিঃদ্রঃ তালিকায় দেওয়া দামগুলো বিভিন্ন সোর্স থেকে সংগ্রহীত, তাই স্ব স্ব পণ্যের ওয়েবসাইটের হিসাবে ও সময়ে পরিক্রমায় দামগুলো বেশ কম হতে পারে তালিকায় প্রদত্ত দামের চেয়ে।
১ দিনে ব্রণের দাগ দূর করার উপায়
একদিনে ব্রণের দাগ দূর করার উপায় আসলে অকল্পনীয়। একটা শারীরিক সমস্যা হয়ে গেছে
যেহেতু এটা শর্টকাটে দূর করা খুব মুশকিল ব্যাপার। বাট একটু সচেতনতার সাথে ঘরোয়া
ও অন্যান্য উপায়গুলো অবলম্বন করলে খুব দ্রুতই বনের দাগ দূর হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা
রয়েছে। প্রিয় পাঠক, আপনি এক্ষেত্রে ব্রনের দাগ কমাতে চাইলে লেবুর রহস্য মধুর
মিশ্রণ নিয়মিত মাখতে থাকুন যা খুবই কার্যকর।
লেবুর রসে রয়েছে ভিটামিন সি যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং মধু ত্বককে আদ্র
রাখে। যার ফলে ব্রনের স্পট বা দাগ দ্রুতই কমতে লাগে। আপনি সাধারণত একটু তুলা
নিয়ে যাতে লেবুর রস যুক্ত করুন এবং আপনার ব্রণের দাগে ১০-১২ রেখে ধৌত করে ফেলুন।
আপনি পাশাপাশি বরফের টুকরো দিয়ে দাগগুলোকে হালকা করে ঘষতে পারেন যা আপনার দাগের
নিরসনে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়াও আপনি টি ট্রি ওয়েল ব্যবহার করতে পারেন যা ব্রণের প্রদাহ কমাবে এবং
ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক বা অনুজীব বা জীবাণু দূর করতে সহায়ক হবে। তবে এটি
ডাইরেক্ট না ব্যবহার করে নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে দাগ গুলোর উপর আলতো করে
ব্যবহার করুন। এই উপায়টি ন্যাচারাল বা প্রাকৃতিক হওয়ায় ত্বক না শুকাইয়া দ্রুত
স্পর্ট বা দাগ দূর করতে ভূমিকা রাখবে।
৭ দিনে ব্রণের দাগ দূর করার উপায়
৭ দিনে ব্রনের দাগ দূর করার উপায় ব্যাপারটি আদৌও যৌক্তিক নয়। তবে খুব সজাগের
সাথে যদি নির্দিষ্ট উপায় ফলো করা যায় তাহলে দাগগুলো প্রায়ই সেরে যাবে।
এক্ষেত্রে আপনি এই অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন যেটি ত্বকের ভেতরে প্রবেশ
করে ত্বকের ক্ষতিকর অংশকে ঠিক করে এবং দাগ দূর করে।
সপ্তাহে মিনিমাম তিনবার মুলতানি মাটি এবং গোলাপজল মিক্স করে আপনার নির্ধারিত
ব্রণের উপর লাগান। এটি আপনার ত্বকের মৃত কোষ দূরীকরণে সাহায্য করবে এবং খুব অল্প
সময়ে দাগ দূর হয়ে যাবে। এগুলোর পাশাপাশি আপনি দিনে দুইবার নিমের পেস্ট ব্যবহার
করতে পারেন, যাতে রয়েছে এন্টিব্যাকটিরিয়াল বৈশিষ্ট্য।
এটি ত্বকের স্পট দূর করে এবং অবশ্যম্ভাবী ব্রণ প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও
আপনার স্কিনে আপনি অ্যালোভেরা ও শসার রসের মিশ্রণ লাগাতে পারেন যে আপনার ত্বককে
রাখবে শীতল এবং দ্রুত কমাবে আপনার দাগগুলো।
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায়
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায় হিসেবে যা বলব তা হচ্ছে আপনি মুলতানি মাটি
আপনার ত্বকে লাগাতে পারেন যেটি ত্বকের যে অতিরিক্ত তেল বা তৈলাক্ত ভাব তা শোষণ
করবে এবং ব্রণের সংখ্যা গুলো হ্রাস করবে। আপনার ত্বকে যদি আপনি রেগুলার
গোলাপজল ও চন্দন গুঁড়া লাগান এতেও ত্বকের তৈলাক্ততা দূর হবে এবং ব্রণ ধ্বংস
হবে।
পাশাপাশি আপনি স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার ত্বকের গভীরের টক্সিন বা
মহিলা দূর করবে এবং ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা কমাবে। পাশাপাশি আপনি তৈলাক্ত ত্বকের
ব্রণ নিয়ন্ত্রণ করতে চা পাতার পানির স্প্রে করতে পারেন, যেটি করার পদ্ধতি হচ্ছে
গরম জলে বা পানিতে চা পাতা ভিজিয়ে রাখুন এবং সেই চা পাতা ভিজানো পানিটা আপনার
ত্বকে স্প্রে করুন বা ছিটান।
এতে চা পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ। আপনি এটি
সপ্তাহে দুইবার বেসন ও হলুদ মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন যা অতিসত্বর আপনার ত্বকের
ময়লা দূরীভূত করতে এবং ব্রণের নাশকতায় কার্যকরী হবে।
ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায়
ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায় নিয়ে এখানে লিখতে চেষ্টা করছি। প্রিয় পাঠক,
আপনি যদি একজন ছেলে হয়ে থাকেন এবং আপনার মুখের ত্বকে ব্রণ হয়ে থাকে তাহলে এই
জায়গাটি আপনি মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারেন। আপনার ত্বকের ব্রোন কমানোর অন্যতম উপায়
হচ্ছে নিয়মিত ত্বক ওয়াশ করুন। আর আপনার জন্য ন্যাচারাল বা প্রাকৃতিক উপাদান
হচ্ছে যেমন ওটমিল এবং চন্দন গোঁড়ার স্ক্রাব
যদি আপনি আপনার ত্বকে নিয়মিত লাগাতে থাকেন তাহলে খুব সহজে এবং অল্প সময়ে আপনার
ত্বকের ময়লা দূর হবে এবং ব্রণ গুলো কমতে থাকবে। আপনি নিম পাতার পেস্ট তৈরি করে
আপনার ব্রণে লাগাতে পারেন, এতে আপনার ব্রণের দাগ দূর করতে সহায়ক হবে। আরো আপনি
ত্বকে নিয়মিত মুলতানি মাটি ব্যবহার করতে পারেন যা আপনি একজন ছেলে হিসেবে আপনার
ত্বকে জমে থাকা তৈলাক্ত ভাব ও দূর হবে এবং ব্রণ ও কমবে।
এছাড়াও আপনি দিনে অন্তত দুইবার চারকোল ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। যেটি আপনার
ত্বক থেকে ময়লা, তৈলাক্ততা এবং ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক দূর করবে। আর রেগুলার
নিমপাতা ও মুলতানি মাটির প্যাক লাগাতে থাকবেন আপনার ত্বকে তাহলে ত্বকের যে
জ্বালাপোড়া ভাব এটা কমতে থাকবে এবং ব্রণ ও দ্রুত সেরে উঠবে। যেকোনো ছেলের
তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা দূরীকরণে মুলতানি মাটি অত্যন্ত উপকারী যা ত্বকের ছিদ্র
পরিষ্কার করবে এবং ব্রণ কমতে কমতে দূর হয়ে যাবে।
মেয়েদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায়
মেয়েদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায় আমরা ইতিমধ্যেই লম্বা করে লিখেছি এরপরও আবারও
এখানে সারসংক্ষেপ লিখার চেষ্টা করছি। প্রিয় পাঠিকা, আপনার মুখের নির্ধারিত ব্রণ
দূর করার জন্য আপনি নিয়মিত ও রুটিন মেইনটেন করে যদি স্কিনকেয়ার করতে পারেন
তাহলে খুব নিমিষেই আপনার ব্রণগুলো আপনার ত্বক থেকে চলে যাবে। এক্ষেত্রে আপনি রেগুলার
- ক্লিনজার
- টোনার,
- ময়েশ্চারাইজার
- এবং অন্যান্য ব্রণ দূরকারী উপাদানগুলো
ব্যবহার করলে এতে অল্প সময়ে আপনি রেজাল্ট পাবেন বলে আশা করা
যায়। আপনি পাশাপাশি
- বেসন,
- হলুদ
- ও দুধ
মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে পারেন এবং এটি
সপ্তাহে তিনবার আপনার মুখের ব্রণের উপরে লাগালে ত্বকের ময়লা ও অতিরিক্ত
তৈলাক্ততা দূর করবে।
আরো আপনি রাতে ঘুমানোর পূর্বে এলোভেরা জেল দিয়ে মুখের ত্বকের ব্রণের উপর লাগিয়ে
রাখবেন যেটি ব্রনের দাগ কমাবে এবং ত্বক উজ্জ্বল করবে। হলুদের রয়েছে anti-সেপটিক
বৈশিষ্ট্য যেটি যেকোনো ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই আপনি নিয়মিত
বিশেষ করে আপনার মুখে ত্বককে সুস্থ রাখতে হলুদ, দুধ এবং মধুর প্যাক লাগাবেন যা
সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার করবেন।
এতে আপনার ত্বক সজীব থাকবে এবং ব্রণ আস্তে আস্তে কমতে থাকবে। আর বেশি বেশি মুখ
ধৌত করবেন বা ফেসওয়াশ করবেন এবং এরপর ঠান্ডা পানির সাথে গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে
স্প্রে করলে বা ছিটালে আপনার দাগ ও ব্রণ দুটোই কমতে থাকবে।
এক রাতে ব্রণের দাগ দূর করার উপায়
এক রাতে ব্রণের দাগ দূর করার উপায় বিষয়টি অনেকটা অসম্ভব তবে নিয়মিত রাতে
নির্দিষ্ট উপায় গুলো অবলম্বন করলে আস্তে আস্তে ব্রণের দাগ দূর হতে থাকবে। তো
এক্ষেত্রে আপনি টুথপেস্ট ব্যবহার করতে পারেন যা ত্বকের ব্রণের দাগ দূর হতে
কার্যকর হতে পারে যেটি ঘরোয়া উপায়ের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছে।
তবে এটি সরাসরি আপনার ত্বকে লাগাবেন না যাতে করে আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে
তাই একটু সাবধানে আপনার মুখের ব্রণের উপরে লাগাবেন। এছাড়াও আপনি খুব অল্প পরিমাণ
এপল সিডার ভিনেগার এবং পানি একসাথে মিক্স করে ব্রণের উপরে লাগাতে পারেন যেটি
আপনার ব্রণের প্রদাহ বা জ্বালা ভাব কমাবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াবে।
আরো পড়ুনঃ শরীর দুর্বল হলে কি ভিটামিন খেতে হবে যেটি না জানলে নয়
একদিন রাত্রে ব্যবহার না করে সপ্তাহে অন্তত একবার ব্যবহার করে এটি ত্বকের ওপরে
নির্দিষ্ট প্রভাব ফেলবে এবং আপনার ত্বকের জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। আর
হ্যাঁ, পাশাপাশি আপনি বরফ ও চা গাছের তৈল ব্যবহার করতে পারেন, যেটি ব্যবহারের
পদ্ধতি হলো আপনি বড় ব্রণের দাগের উপর আলতোভাবে ম্যাসেজ করবেন
তাহলে এটি আপনার ত্বকের প্রদাহ কমিয়ে তুলবে আর সাথে টি ট্রি অয়েল ও ব্যবহার
করতে পারবেন যেটি ত্বকের অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করবে এবং আপনার দাগকে দ্রুতই
সারিয়ে তুলবে। তবে আপনি যখন আইস বা বরফ ব্যবহার করবেন তখন বেশি চাপ দিবেন না,
তাহলে আপনার ত্বকের লাভের বিপরীতে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণের দাগ দূর করার উপায়
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণের দাগ দূর করার উপায় আমরা ইতিমধ্যে লিখেছি আবারও সুস্পষ্ট
করছি। তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণের দাগ কমাতে আপনি রেগুলার টি ট্রি ওয়েল লাগাবেন। এটি
ত্বকের অ্যান্টিসেপটিক বা প্রদাহ নাশক হিসেবে কাজ করবে এবং ত্বকের ও অতিরিক্ত
তৈলাক্ততা শোষণ করবে যেটি ব্রণ ও দাগ উভয়ই কমাবে।
তবে টি ট্রি ওয়েল ব্যবহারের পূর্বে এর সাথে একটু পানি মিশিয়ে নিলে কোন সাইড
ইফেক্ট বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। এছাড়াও আপনি গোলাপজল
ব্যবহার করতে পারেন যেটি টোনার হিসেবে কাজ করবে এবং আপনার ত্বকে শীতল রাখবে আর
তৈলাক্ততা কন্ট্রোলে আনবে। তৈলাক্ত ত্বকে নিয়মিত আপনি গ্রিন টি বা সবুজ চা
লাগাতে পারেন যেটি খুব কার্যকরী হবে।
গ্রিন টি এন্টিঅক্সিডেন্ট গুণ সমৃদ্ধ যেটা আপনার ত্বকের তৈলাক্ত বা ভিজা ভাব দূর
করবে এবং ত্বককে রাখবে সজীব ও সতেজ। আর আপনি টি ট্রি ওয়েল এবং গ্রিন টি একসাথে
মিশিয়ে রাতে শোয়ার সময় মুখে ব্যবহার করলে আপনার ত্বক থাকবে শুষ্ক এবং দাগ
দ্রুত কমাতে সাহায্য করবে আর ব্রণগুলো নিমিষেই চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
মেয়েদের মুখের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার উপায় এবং সংশ্লিষ্ট বিষয় সংক্রান্ত
উপায়গুলো উক্ত ব্লগ বা আর্টিকেলটিতে লিখেছি। প্রিয় পাঠক, আপনি যদি উপরে
উল্লেখিত ঘরোয়া নিয়ম, ভেষজ নিয়ম, মুখের ব্রণ এবং দাগ দূর করতে নির্দিষ্ট ক্রিম
ব্যবহারে সতর্ক হোন এবং নিয়মিত মুখের লাগাতে থাকেন এবং ব্যবহার করতে থাকেন তাহলে
আশা করা যায় অচিরেই এবং অতিসত্বর আপনার মুখের দাগ অগ্রণগুলো বিনাশ হয়ে
যাবে।
আপনি যদি আমাদের সাথে থাকেন তাহলে আমরা আশা করছি আরও আপনাদের সামনে
নিত্যনতুন উপকারী ও সমৃদ্ধশালী আর্টিকেল আনব যেগুলো ফলো করলে দৈনন্দিন জীবনে
আপনার এবং আপনাদের উপকার পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে, আপনি আমাদের
ওয়েবসাইট আব্দুন নূর আইটির সাথেই
থাকুন ইনশাআল্লাহ।
অধিক জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তরঃ FAQ
কোন ক্রিম ব্যবহার করলে মুখের দাগ দূর হবে?
আপনি মুখের দাগ দূর করতে রেটিনলের ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। যেটি ত্বককে রাখবে শুষ্ক এবং করবে উজ্জ্বল আর বিভিন্ন স্পট দূর করবে।
বেটনোভেট এন ক্রিম কি কালো দাগ দূর করে?
না, তবে মোটা কমায়। কিন্ত আপনি বেটনোভেট সি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। যেটি ভালো কাজ করার আশা করা যায়।
ব্রণ এবং ব্রণের দাগ কিভাবে দূর করা যায়?
আপনি বিভিন্ন ঘরোয়া নিয়ম প্রয়োগ করতে পারেন। যেমন চন্দন গুঁড়া ও গোলাপ জল মিশ্রণ
অথবা দারুচিনির গুঁড়া এবং মধুর পেস্ট প্রয়োগ করে দেখতে পারেন, এতে দাগ ও ব্রণ বা
ব্রণের দাগ অনেকটাই কমে যাবে।
আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url