আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার ১৫ স্বাস্থ্য উপকারিতার বিস্তারিত
১০টি ঔষধি গাছের নাম ও উপকারিতাআপেল সিডার ভিনেগার ১৫ স্বাস্থ্য উপকারিতা - ভিনেগার সম্পর্কে অনেকের ধারণা নেই। আজকে আপেল ফলের এর ভিনেগার নিয়ে উপকারিতাগুলো ১৫টি থাকবে।
পাশাপাশি অ্যাপেল ভিনেগারের খাওয়ার নিয়ম ও সময় এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ও ধারণা দিব। Apple Cider Vinager এর বাংলা অর্থ হলো আপেল এর সুরা বা সিরকা বা রস সহকারে চলুন নিচে আলোচনা করি বিস্তারিত।
পেজ সূচীপত্রঃ আপেল সিডার ভিনেগার ১৫ স্বাস্থ্য উপকারিতাআপেল সিডার ভিনেগার ১৫ স্বাস্থ্য উপকারিতা
আপেল সিডার ভিনেগার ১৫ স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে এখানে লিখছি। প্রিয় পাঠক, অনেক আগে থেকেই আপেল সিডার ভিনেগার স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন উপকারে ব্যবহার হয়ে থাকে এবং এ জন্য জনপ্রিয় বটে।আপেল সিডার ভিনেগারের বিভিন্ন হেলথ বেনিফিট বা স্বাস্থ্য উপকারিতা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এক্ষেত্রে, আপনি এটা আপনার নিত্যদিনের লাইফ স্টাইলে ব্যবহার করতে পারলে আপনি সুস্থতার সাথে পথ চলতে পারবেন। নিম্নে আপেল সিডার ভিনেগারের ১৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা বর্ণনা করা হলো।
ওজন কমাতে সাহায্য করাঃ আপেল সিডার ভিনেগার ওজন কমানোর জন্য অত্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড একটি ভিনেগার। শরীরের মেটাবলিজম বা বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধি করে এবং প্রয়োজনীয় ক্যালোরি বার্ন করে এবং ক্ষধা কমাতে সহযোগিতা করে। পাশাপাশি আপেল সাইডার ভিনেগার এ থাকা এসিটিক অ্যাসিড শরীরের ফ্যাট বার্ন করতেও সাহায্য করে।
আর সব হচ্ছে ওজন হ্রাস করানোর মাধ্যম। প্লাস আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে
এক গ্লাস পানিতে এক চামচিকার ভিনেগার মিশিয়ে পান করলে ওজন কমানোর জন্য
অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণঃ আপনি প্রতিদিন আপেল সিডার ভিনেগার নিয়মিত
খেলে এর মাধ্যমে আপনার রক্তে প্রচুর পরিমাণ শর্করা থাকা ব্যাপারটি নিয়ন্ত্রনে
আমাদের কার্যকরী হয়। যেটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে তুলে যা ডায়বেটিস
বা বহুমূত্র রোগীদের জন্য উপকারী। গবেষণা বলছে প্রত্যেকদিন খাবারের সঙ্গে
আপেল সিডার ভিনেগার গ্রহণ করলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখা সহজ
হয়।
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ আবে সিডার ভিনেগার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে হজম
ক্ষমতাটা বাড়িয়ে তুলে।এটি শরীরের পাচক রস যেটি হজমের জন্য খুবই সহযোগী তা
উৎপাদনে সহায়তা করে, ফলে হজমের ব্যাপারটি অত্যন্ত দ্রুততর
হয়। এসিডিটি বা গ্যাস বা বুক জ্বালাপোড়া থেকে বাঁচতে অ্যাপল সাইডার
ভিনেগার এর কোন বিকল্প নেই।
হৃদরোগ প্রতিরোধঃ আপেল সিডার ভিনেগারের মধ্যে থাকা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্ট ডিজিজ বা হৃদরোগ রিস্ক কমায়। এবং আরো এটি
দেহের রক্তচাপ এবং হার্টের কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে সহযোগিতা করে, আর যে
বিষয়গুলো হার্টকে সুস্থ রাখতে অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম হিসাবে কাজ
করে।
আরো পড়ুনঃ কি খেলে শরীরের ব্যথা কমে - সারা শরীর ব্যথা করে কেন?
ত্বকের যত্নঃ আপেল সাইডার ভিনেগার ত্বকের সমস্যার সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা
পালন করে। এটি ন্যাচারাল টোনার হিসেবে কাজ করে এবং ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স
বজায় রাখতে সাহায্য করে।তাছাড়াও, মুখের ব্রণ এবং শারীরিক বিভিন্ন ফাংগাল ও
ইনফেকশন হতে বাচাতে আপেল সিডার ভিনেগার বহুল ব্যবহৃত হয়।
খুশকি দূর করাঃ আপেল সিডার ভিনেগার আপনি মাথায় ব্যবহার করতে পারবেন আর যেটি করার দ্বারা আপনার মাথার খুশকি দূর হবে। এবং মাথায় থাকা বিভিন্ন ফাঙ্গাসের এন্টি-ফাঙ্গাল হিসেবে কাজ করবে যা মাথার ত্বকের বিভিন্ন ফাঙ্গাস এবং ইনফেকশন জাতীয় সমস্যা দূরীভূত করবে। সাথে আপেল সিডার ভিনেগার পানির সঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগালে খুশকি প্রতিরোধ করে এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণঃ ভিনেগার কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে। এবং এতে থাকা এসিটিক এসিড এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমায় এবং এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে। এবং এইভাবে ভিনেগারটি কোলেস্টেরলের ভারসাম্য বজায় রাখে।
সংক্রমণ প্রতিরোধঃ আপেল সিডার ভিনেগারের মধ্যে রয়েছে
এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য যেটি সংক্রমণ প্রতিরোধে স্ট্রং কার্যকরী ভূমিকায়
রাখে। পাশাপাশি এটি ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক এবং জার্ম বা জীবাণুর বিরুদ্ধে
লড়াই করে সংক্রমণ হ্রাস বা প্রতিরোধ করে।
প্রদাহ কমানোঃ আপেল সিডার ভিনেগারের মধ্যে থাকা প্রদাহ বিরোধী শক্তি
শারীরিক বিভিন্ন ধরনের অথবা যেকোনো ধরনের প্রদাহ কমাতে সহায়ক হয়। পাশাপাশি
আর্থ্রাইটিস বা বাত এর মত খারাপ ক্রণিক বা স্থায়ী রোগ এর প্রদাহ থেকে রক্ষা পেতে
কার্যকর ভূমিকা নেয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়কঃ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে এবং দেখা
গিয়েছে যে আপেল সিডার ভিনেগারের মধ্যে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তা
ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধিকে বাধা দেয়। এবং এটি শরীরের ভিতরে থাকা টক্সিন বা
বিষ-পদার্থ বের করতে সাহায্য করে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
নেয়।
চুল পড়া রোধঃ আপেল সিডার ভিনেগার চুল পড়া রোধে সহায়ক ভূমিকা পালন
করে। এটি চুলের গোড়াকে যেমন শক্তিশালী করে তদ্রূপ চুলের বৃদ্ধি
বাড়াতেও মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। আপনি সপ্তাহে্র মাঝে দুই বার আপনার
চুলে আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করলে বা লাগালে আপনার চুল পড়া কমার নিশ্চয়তা
রয়েছে।
দেহের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখাঃ আপেল সিডার ভিনেগার দেহের পিএইচ
PH এর ভারসাম্য বজায় রাখে যা বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে। এবং
এটি একটি হেলদি পি এইচ বা স্বাস্থ্যকর পি এইচ লেভেল শরীরের বৈচিত্র্যময়
অঙ্গকে সুস্থ রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে।
এসিড রিফ্লাক্স নিয়ন্ত্রণঃ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার এসিড রিফ্লাক্স
কমাতে মানে গ্যাসের বিপরীত দিকে উঠার অন্তরায় হিসাবে বাস্তবসম্মত ও কার্যকরী
ভূমিকা রাখে। এবং এটি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে পাশাপাশি স্টোমাক বা
পাকস্থলীর এসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে যেটি বুক জ্বালাপোড়া করার
মাধ্যম এবং অবশেষে এটি বুক জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি দেয়।
টক্সিন থেকে মুক্তিঃ ভিনেগার শরীরের ডিটক্সিফিকেশন বা টক্সিন দূর
করতে বা বের করতে ন্যাচারাল সল্যুশন বা প্রাকৃতিক সমাধান হিসেবে কাজ
করে। আবার এটি দেহ থেকে বিভিন্ন ক্ষতিকর টক্সিন বা বিষ পদার্থ বা
উপাদান বের করে দিতে সহায়ক হয় এবং লিভারকে সুস্থ রাখে।
এনার্জি বৃদ্ধিঃ অ্যাপল সিডার ভিনেগার দেহের এনার্জি বা শক্তি
বাড়াতে সহযোগিতা করে। শুধু তাই নয়, দেহের যে বিভিন্ন সময় ক্লান্তি আসে তা দূর
করতেও কার্যকর হয় এবং দেহকে ফুরফুরা ও চাঙ্গা রাখে। আবার, যেকোনো ধরনের কায়িক
পরিশ্রমের পর অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার পান করলে শরীরে দ্রুত শক্তি ফিরে আসে এবং
মনোবল বৃদ্ধি পায়।
এছাড়াও, আরো নানান উপকারিতা রয়েছে যা একটি সার্চ বা রিসার্চ করলেই বুঝতে পারবেন। এক্ষেত্রে, ড জাহাঙ্গীর কবির ও মজিবুর রহমান স্যার দ্বয়কে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলো করতে পারেন। যা করলে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার সম্পর্কে আরো বিভিন্ন কথা জানতে পারবেন।
আপেল সিডার ভিনেগার এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
০১ | ০২ | ০৩ | ০৪ | ০৫ | ০৬ |
---|---|---|---|---|---|
অতিরিক্ত এসিডিক হওয়ায় দাঁতের এনামেল বা শুভ্রাং নষ্ট করতে পারে। | অতিরিক্ত গ্রহণে পেট ফাঁপা, গ্যাস্ট্রিক ও ডায়রিয়া হতে পারে। | বেশি পরিমাণে ভিনেগার গ্রহণ করলে শরীরের পটাশিয়াম লেভেল কমিয়ে দিতে পারে। | অপরিষ্কারভাবে পান করলে গলা ও খাদ্যনালীতে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে। | কতিপয় ঔষধের সাথে বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে যেমন ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ। | সরাসরি ত্বকের প্রয়োগ করলে ত্বক জ্বালা-পোড়া বা লালচে ভাব দেখা দিতে পারে। |
আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার সময়
আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
- আপেল সিডার ভিনেগার খেলে ওজন নিয়ন্ত্রিত হবে
- রক্তের শর্করা কমবে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।
- হজমে সহায়ক হবে যেটা জ্ঞান এবং খুব জ্বালাপোড়া থেকে রক্ষা করবে।
- কলেজ নিয়ন্ত্রণ করবে অর্থাৎ এলডিএল(LDL) কমিয়ে এইচডিএল(HDL) বাড়াবে।
- এবং ত্বকের যত্নে ভীষণভাবে কাজ করবে যেটি PH এর ভারসাম্য বজায়ের মাধ্যমে হবে।
আপেল সিডার ভিনেগার কোনটা ভালো
আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার উপকারিতা
- হজমে সহায়তা করে।
- ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- ব্লাডের শর্করা নিয়ন্ত্রণ ক।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করে ।
- এবং ত্বকের সুস্থতার জন্য স্বাস্থ্যকর মাধ্যমে হিসেবে নির্দেশিত হ।
আপেল সিডার ভিনেগার কতদিন খাওয়া যায়
আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার খাওয়ার নিয়ম
আরো পড়ুনঃ শরীর দুর্বল হলে কি ভিটামিন খেতে হবে যেটি না জানলে নয়
ওজন কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম
apple cider vinegar
লেখকের শেষ মন্তব্য
আপেল সিডার ভিনেগার ১৫ স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করেছি।প্রিয় পাঠক, উক্ত ব্লক বা আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং আপেল সিডার ভিনেগার সম্পর্কে অবহিত হয়ে তার যে ফায়দা বা উপকারিতা গুলো সেগুলো এনজয় বা উপভোগ করুন। আরো এরকম সমৃদ্ধ ও উপকারী ব্লগ পেতে আমাদের আব্দুন নূর আইটি ওয়েবসাইটটির সাথেই থাকুন ইনশাআল্লাহ।
প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তরঃ FAQ
অ্যাপেল সাইডার ভিনেগারের কাজ কি?
ওজন নিয়ন্ত্রণ, হজম শক্তির উন্নতি এবং রক্তে শর্করার কন্ট্রোল করে।
ভিনেগার খেলে কি উপকারিতা আছে?
ত্বকের ভাঙ্গাস এবং ইনফেকশন দূর করে, হার্ট সুস্থ রাখে এবং ডায়াবেটিস রোগীদের ভালো করে।
আপেল সিডার ভিনেগার কি ঠান্ডা পানি দিয়ে খাওয়া যায়?
হ্যা ঢান্ডা ও গরম উভয় পানিতে খাওয়া যায়, তবে কুসুম গরম পানিতে বেশি খাওয়া ভালো।
ভিনেগার খেলে কি ক্ষতি হয়?
অতিরিক্ত খেলে বেশি এসিডিক হওয়ায় গলা জ্বালাপোড়া ও ডায়রিয়া এবং বদ হজমের সমস্যা হতে পারে।
আপেল সিডার ভিনেগার কখন খাওয়া উচিত?
সকালে খালি পেটে খাওয়াটাই উচিত। তবে, যে কোন খাবারের আগে বা খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে পানি দিয়ে খাওয়া যায়।
সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ভিনেগার কোনটি?
সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ভিনেগার হলো অ্যাপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার।
আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url