৫০ টি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ জানতে এই আর্টিকেলে ক্লিক করেছেন ঠিক কি না? আজকের
ব্লগটিতে আলোচনা করব চির সুখের জায়গা আখিরাতের চূড়ান্ত গন্তব্য চিরস্থায়ী ৮ টি
জান্নাত নিয়ে।
প্রিয় পাঠক, জান্নাত মানে বাগ-বাগিচা বা বাগান যা প্রত্যেক মুসলিম ও মু'মিনের
স্বপ্নের ঠিকানা। জান্নাতের নায-নিয়ামত সম্পর্কে জানলে এবং বিশ্বাস থাকলে কার না
যেতে ইচ্ছা করবে সেইখানে। তো চলুন আর দেরি না করে জান্নাতের ৮টি নামের লিস্ট তা
তুলে নিম্নে তুলে ধরি ইনশাআল্লাহ।
পোস্ট সূচীপত্রঃ
৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ
৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ বিষয়টি এখানে আলোকপাত করছি। জান্নাত এর ইংরেজী
শব্দ Heven (হেভেন) যার অর্থ বাগান। আর আরবী সমার্থক শব্দ হাদিক্বাতুন,
বুস্তানুন। শব্দটিকে জান্নাত বা জান্নাহ বলা হয়। জান্নাত হচ্ছে অত্যন্ত সুখ ও
শান্তির জায়গা যেখানে মানুষ ও জিন যাওয়ার জন্য দুনিয়াতে আল্লাহ ও রাসূল (সা) এর
নিয়ম মেনে চলে।
জান্নাত যে সুখের জায়গা এ ব্যাপারটি কুরআন ও হাদীসে স্পষ্টভাবে বর্ণনা হয়েছে।
আল্লাহ কুরআনে জান্নাত সম্পর্কে বলেছেন, নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ আমল করেছে
তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত যার তলদেশে রয়েছে ঝর্ণাসমূহ। আর এটাই হবে মহান
সফলতা।
ঝর্ণা বলতে কুরআনের সূরা মুহাম্মাদ এ রয়েছে এগুলো হবে স্বচ্ছ পানির নহর বা ঝর্ণা,
অত্যন্ত সুস্বাদু ও মানে অতুলনীয় দুধের ঝর্ণা, অত্যন্ত মিষ্ট নিট এন্ড ক্লিন মধুর
নহর বা নদী এবং আরো থাকবে পানকারীদের জন্য সুপেয় শরাব। অন্য জায়গায় রয়েছে শরাবান
ত্বহুরা। আবার অন্যত্র রয়েছে রহীক্বীম মাখতূম বা ইনটেক অমীয় সূধা বা শরাব।
৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ এখন লিখছি। কুরআন মাজীদে জান্নাতের ৮ টির চেয়ে বেশি
বর্ণনা এসেছে।তবে হাদীসে আল্লাহর রাসূল (সা) আটটি জান্নাতের কথা এবং জান্নাতের
আটটি নাম বা জান্নাতের আটটি দরজার নাম স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করেছেন। যেমন
আল্লাহর রাসূলের হাদিস রয়েছে যে হে উম্মাহ তোমরা সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর কাছে
আটটি জান্নাত চাও। এই হাদিসাংশটুকু দ্বারা প্রমাণিত যে জান্নাত ৮টি।
আরো পড়ুনঃ ইসলামে শিক্ষার গুরুত্ব - শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে বক্তব্য
তবে কুরআনে যারা সৎ বা নেক কর্ম করবে তাদের থাকার জায়গা জান্নাত এর বিভিন্ন নাম
বিবরণ দিয়েছে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা। যাইহোক নিচে ৮টি জান্নাতের নাম
লিখছি।
১। জান্নাতুল ফিরদাওসঃ জান্নাতুল ফিরদাওস মানে জান্নাত অর্থ বাগান আর
ফিরদাউস ফার্সি শব্দ যার স্বর্গ আর সমন্বিত অর্থ স্বর্গময় বা সীমাহীন শানিপূর্ণ
বাগিচা। কুরআনে সূরা কাহফে ১০৭-১০৮ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতুল ফিরদাওস
সম্পর্কে বলেন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছেন (এক আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি এবং
অন্যান্য বিষয়ের প্রতি) এবং সৎকর্ম সম্পাদন করেছে তাদের অভ্যর্থনার জন্য
জান্নাতুল ফেরদাউস রয়েছে। আর তারা সেখান থেকে অন্য কোথাও ফিরে যাওয়ার বাসনা
ও করবে না।
সূরা মুমিনুন ১-১১ নং আয়াতে রয়েছে "মুমিনগণ সফলকাম হয়েছে। যারা বিনীতভাবে
সালাত আদায় করে। এবং অনর্থক বিষয় থেকে বিরত থাকে। এবং সদা যাকাত দিতে
তৎপর থাকে। আর নিজেদের লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে। তবে, নিজেদের বৈধ
স্ত্রী এবং দাস-দাসী ব্যতীত অন্য কোথাও তাদের লজ্জাস্থানকে ব্যবহার করে। এ কারণে
তারা তিরস্কৃত হবে না।
আর যারা এ ছাড়া অন্য তাদের লজ্জাস্থানকে ব্যবহার করে তারা সীমালংঘনকারী। আর যারা
নিজেদের আমাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের সলাতের উপর
যত্নবান। তারাই হবে জান্নাতের উত্তরাধিকারী। আর তারা যে জান্নাতের উত্তরাধিকারী
হবে সেটা হচ্ছে জান্নাতুল ফিরদাউস। আর তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।"
আর হাদিসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী রয়েছে
এরকম যে, মহানবী বলেন নিশ্চয়ই জিহাদকারীদের জন্য জান্নাতের ভিতরে
১০০টি দরজা ( মরতবা ) রয়েছে। আর এখানে দুটি দরজার পার্থক্য হচ্ছে আসমান
জমিনের ফাঁকা সমপরিমাণ। আর তোমরা জান্নাত চাইলে জান্নাতুল ফেরদাউস চাও। কেননা,
এটি জান্নাতের মধ্যে ও সর্বোচ্চে অবস্থিত, আর যার উপরে রয়েছে আল্লাহ
সুবহানাহুওয়া তা'আলার সুমহান আরশ।
২। জান্নাতু আদনঃ জান্নাতু আদন মানে জান্নাত অর্থ বাগান আর আদন অর্থ
স্থায়ী আর সমন্বিত অর্থ স্থায়ী বাগিচা। জান্নাতুল আদন সম্পর্কে কুরআনে সূরা
নাহলে-৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ সুবহানাল্লাহু তাআলার ঘোষনা রয়েছে, " জান্নাত আদন
হচ্ছে এমন জান্নাত যেখানে মুত্তাকিরা প্রবেশ করবে আর যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত
থাকবে বিভিন্ন নদী সমূহ আর তারা সেখানে যা চাইবে তাই পাবে আর এভাবেই আল্লাহ
মুত্তাকী তথা আল্লাহ ভীরুদের পুরস্কার দিয়ে থাকেন"
আর সূরা ফাতির ৩৩ নম্বর আয়াতে রয়েছে জান্নাত আদন বা স্থায়ী জান্নাতে
যারা প্রবেশ করবে তাদেরকে স্বর্ণ ও মুক্তার কঙ্কন বা চুরি দ্বারা অলংকৃত করা হবে
আর আর তাদের পোশাক হবে রেশমের। সূরা মারয়াম এর ৬১ নম্বর আয়াতে রয়েছে
জান্নাত আদন তথা স্থায়ী জান্নাতকে দয়াময় আল্লাহ তা'আলা অদৃশ্য ভাবে
দেওয়ার ওয়াদা করেছেন। আর নিশ্চয় তার ওয়াদার বাস্তবায়ন হওয়া অবশ্যই আগমন
সম্ভব।
হাদিসে বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে আল্লাহর রাসূল (সা) বলেছেন, দুইটি জান্নাত চাঁদির
আর তার অভ্যন্তরে অবস্থিত পাত্রগুলো ও সব কিছু চাঁদির। আর দু'টি জান্নাত স্বর্ণের
এবং তার ভিতরের পাত্র ও সব কিছু স্বর্ণের। আর জান্নাতে আদনে জান্নাতীদের চেহারার
উপর আল্লাহর দীদার বা সাক্ষাতের কারণে গৌরব এর চাদর থাকবে।
৩। জান্নাতুল খুলদঃ জান্নাতুল খুলদ মানে জান্নাত মানে বাগিচা আর খুলদ মানে
চিরস্থায়ী আর সমন্বিত অর্থ চিরস্থায়ী বাগিচা। সূরা ফুরফান এর ১৫ নম্বর
আয়াতে আল্লাহ বলেছেন "হে নবী আপনি বলে দিন যে এটিই কি সর্বোত্তম নাকি জান্নাতুল
খুলদ বা চিরস্থায়ী বাগিচা যার ওয়াদা দেওয়া হয়েছে মুত্তাকী বা আল্লাহ
ভীতি অর্জনকারীদের। এটিই হচ্ছে তাদের জন্য প্রতিফল এবং প্রত্যাবর্তনের
স্থান"।
হাদিসে সিলসিলা সহীহাহায় আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) দুয়া করতে গিয়ে বলেন,
হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে এমন ঈমান চাই যে ঈমান ফিরে যায় না, এমন
নিয়ামত চাই যে নিয়ামত শেষ হয় না, আর নবী (সা) এর সাথে জান্নাতুল খুলদের
সর্বোচ্চ কক্ষে একসঙ্গে থাকতে চাই।
৪। জান্নাতুন নাঈমঃ জান্নাতুন নাঈম মানে জান্নাত মানে হেভেন বা বাগিচা আর
নাঈম মানে নেয়ামতে ভরা আর সমন্বতি অর্থ হচ্ছে নেয়ামতে ভরপুর বাগিচা। সূরা
ইউনুস ৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, "নিশ্চয় বিশ্বাস স্থাপন
করেছে এবং সৎ আমল করেছে আজ তাদের প্রভু তাদেরকে বিপথে পরিচালিত করবেন তাদের ঈমান
বা বিশ্বাসের কারণে। নেয়ামতে ভরপুর বা সুখময় কানন বা উদ্যানে তারা থাকবে যার
নিম্নদেশ দিয়ে নদীসমূহ জারি থাকবে।"
সূরা লুকমান ৮ নং আয়াতে রয়েছে নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে ও সৎ আমল করেছে তাদের
জন্য জান্নাতুন নাঈম রয়েছে। সূরা ক্বলাম ৩৪ নাম্বার আয়াতে রয়েছে " নিশ্চয়ই
আল্লাহভীরুদের জন্য রয়েছে জান্নাতুন নাঈম"। সূরা শুয়ার ৮৫ নং আয়াতে রয়েছে" হে
আল্লাহ তুমি আমাকে জান্নাতুন নাঈম বা সুখকর বাগিচার মালিক বানিয়ে দাও।"
৫। জান্নাতুল মা'ওয়াঃ জান্নাতুল মা'ওয়া মানে জান্নাতুল অর্থ উদ্যান আর
মা'ওয়া অর্থ আশ্রয়স্থল আর সমন্বিত অর্থ আশ্রয়ের উদ্যান বা উদ্যানময় আশ্রয়স্থান।
সূরা সাজদাহর ১৯ নং আয়াতে রয়েছে, আর যারা ঈমান এনেছে ও সৎ আমল করেছে তাদের
অভ্যর্থনা বা মেহমানদারীর জন্য তাদের কৃত আমলের বদলা স্বরুপ জান্নাতুল
মা'ওয়া বা উদ্যানময় ঠিকানা রয়েছে।
আর সূরা নাজমের ১৩, ১৪ ও ১৫ নং আয়াতে রয়েছে আর তিনি মুহাম্মাদ (সা) তাকে (জিববাঈল
আঃ) কে আরেকবার দেখেছিল। আর তাকে দেখেছিল সিদরাতুল মুনতাহার নিকট। যার নিকট রয়েছে
জান্নাতুল মা'ওয়া বা বাস উপযোগী উদ্যান।
৬। দারুস সালামঃ দারুস সালাম মানে দার অর্থ ঘর আর সালাম অর্থ শান্তি আর
সমন্বিত অর্থ হচ্ছে শান্তির ঘর। সূরা আনয়াম ১২৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, তাদের
জন্য তাদের প্রভুর কাছে দারুস সালাম রয়েছে আর এক্ষেত্রে তিনি তাদের বন্ধু হবেন এই
জন্য যে তারা কাজ করত (আল্লাহর জন্যই)।
সূরা ইউনুস ২৫ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, আল্লাহ তাআলা মানুষদেরকে দারুস সালাম
জান্নাতের দিকে ডাক দেন আর তিনি যাকে ইচ্ছা সহজ সরল পথে পরিচালিত করেন।
৭। দারুল মুক্বামাহঃ দারুল মুক্বামাহ মানে দার অর্থ ঘর আর মুক্বামাহ মানে
স্থায়ী তাহলে সমষ্টিগত অর্থ হচ্ছে স্থায়ী ঘর। আল্লাহ সূরা ফাতির ৩৫ নং আয়াতে
বলেছেন, যিনি তার অনুগ্রহেই আমাদের জন্য বৈধ করে দিয়েছেন দারুল
মুক্বামাহ নামক জান্নাত যেখানে আমাদেরকে কোন ক্লান্তি স্পর্শ করবে না এবং কোনো
ক্লেশ বা কষ্ট ও স্পর্শ করেনা।
৮। দারুল ক্বরারঃ দারুল ক্বরার মানে দার অর্থ ঘর আর ক্বরার অর্থ স্থায়ী
তাহলে সমন্বিত অর্থ হলো স্থায়ী বাস গৃহ। মহান আল্লাহ সূরা মু'মিন ৩৯ নং
আয়াতে বলেন, হে আমার জাতি! কেবলমাত্র এই জগৎটি হচ্ছে অল্প উপভোগের
জন্য। আর নিশ্চয় আখিরাত এটাই হচ্ছে দারুল করার বা স্থায়ী বসবাসের একটি
জায়গা। এই আয়াতে দারুল করার জান্নাতের একটি নাম।
জান্নাতের এই ৮টি নাম ছাড়াও আরো কিছু নাম কুরআন ও হাদিসে এসেছে যেগুলো নিম্নে
আলোকপাত করছি। রাইয়্যান যার অর্থ তৃপ্ত। আল আখিরাহ মানে অন্তিম ঠিকানা। দারুল
হায়াওয়ান মানে চিরস্থায়ী জীবনের বাসস্থান। মাক্বামুন আমীন বা নিরাপদ জায়গা।
মাক্বয়াদে সিদক্ব মানে যথাযথ আবাস গৃহ। তুবা মানে সুখময় স্থান।
জান্নাত নামের তালিকা
জান্নাত নামের তালিকা এখন এখানে প্রকাশ করছি। যদিও ইতিমধ্যেই আমরা জান্নাতের
নামগুলো বর্ণনা করেছি উপরোক্ত বিবরণে। এই জায়গায় জান্নাত বা জান্নাহ এর নামগুলো
লিস্ট বা তালিকা আকারে প্রকাশ করতেছি। জান্নাত হাদিস এর ভাষায় আটটি যা অনেক হাদিস
দ্বারা প্রমাণিত। আর আলকুরআনে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের বিভিন্ন নাম একাধিক শব্দে
বর্ণিত হয়েছে।
- জান্নাতুল ফিরদাউস
- জান্নাতু আদন
- জান্নাতুল খুলদ
- জান্নাতুন নাঈম
- জান্নাতুল মাওয়া
- দারুস সালাম
- দারুল মাকাম
- দারুল করার
8 ta jannat er naam in english
8 ta jannat er naam in english এখানে বর্ণনা করছি। জান্নাত এর ইংরেজি হচ্ছে
হেভেন - Heven বা Paradis বা বাংলাতে কানন, উদ্যান কিংবা বাগান। আর ফার্সিতে বাগ
বা বাগিচা বা ফিরদৌস শব্দটি ও ফারসি ভাষাতে জান্নাতের অর্থে ব্যবহৃত হয়। আর
বিধর্মীদের কাছে জান্নাতকে বাংলা ভাষায় স্বর্গ বলা হয়। চলুন নিম্নে
জান্নাতের নামগুলোকে ইংরেজিতে লেখার ট্রাই করি।
- Jannatul Firdaws
- Jannatu Adn
- Zannatul Khuld
- Zannatun Naeem
- Jannatul Mawa
- Darus Salam
- Darus Maqam
- Darul Qarar
৮টি বেহেশতের নাম ইংরেজীতে
৮টি বেহেশতের নাম ইংরেজীতে এই স্থানে লিখছি। বেহেশত শব্দটি ফারসি ভাষাতে ব্যবহার
হয়। বেহেশত মানেই জান্নাত বা বাগিচা। আরবীতে বুস্তান বা হাদিকাহ ব্যবহৃত হয়। তো
এখানে ৮টি জান্নাতের যে নাম গুলো হয় এবং সেগুলোর যে অর্থ হয় সেগুলোকে ইংরেজি
অর্থে কি বলা যায় সেগুলো এই ৮টি বেহেশতের নাম ইংরেজীতে টাইটেলে লিখছি।
- Heven of paradis
- Permanent Heven
- Eternal Garden Or Heven
- Joyful Heven
- Livable Paradis
- Peaceful Heven
- Eternal Paradis
- Everlasting Garden or paradis
জান্নাতের সুগন্ধির নাম
জান্নাতের সুগন্ধির নাম সম্পর্কে হাদিসে ব্যাপক বর্ণনা রয়েছে।
নিম্নে জান্নাতের সুগন্ধি সম্পর্কে আলোচনা আলোকপাত করার চেষ্টা করছি প্রিয়
নবীজির হাদিস অনুসারে। জান্নাতের সুগন্ধীর ক্ষেত্রে যে কথাগুলি এসেছে সেগুলো
দ্বারা প্রমাণিত হয় যে জান্নাতের ভিতরে তো সুগন্ধ অবশ্যই বিদ্যমান এমনকি
জান্নাতের বাইরে ও সুগন্ধ পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় অনেক দূর দুরন্ত
পর্যন্ত জান্নাতের সুগন্ধ ছড়িয়ে যায়।
সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব অনুযায়ী জান্নাতের সুগন্ধি ৭০ অথবা ১০০ বছরের রাস্তা
অতিক্রম করলে যে সময় লাগে এবং যতটুকু দূরত্ব সে জায়গা পর্যন্ত সুগন্ধি ছড়িয়ে যায়।
বখারী ও নাসায়ী ও অন্যান্য হাদিসে রয়েছে, যে ব্যক্তি সন্ধিযুক্ত কোন
ব্যক্তিকে অথবা জিম্মি বা চুক্তিবদ্ধ কোন ব্যক্তিকে হত্যা করবে সে জান্নাতে তো
যাবেনা এমনকি জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধি ৪০ বছরের
অতিক্রমযোগ্য দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ স্থায়ী জাহান্নামে যাওয়ার ১০টি কারণ - জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য
আমাদ, ইবনে মাজাহ এবং সহীহুল জামে' হাদিস গ্রন্থে রয়েছে, "যে ব্যক্তি পরের
পিতাকে আপন পিতা হিসাবে দাবি করবে সে ব্যক্তি জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না অথচ
জান্নাতের সুগন্ধি ৫০০ বছরের দূরবর্তী জায়গা হতেও পাওয়া যাবে। সহীহ আত
তারগীব এর আরেক জায়গায় রয়েছে জান্নাতের সুগন্ধি ৭০ বছরের দূরের জায়গা থেকেও পাওয়া
যাবে।
জান্নাতের হুরদের নাম
জান্নাতের হুরদের নাম সম্পর্কে কোরআন এবং হাদিসে তেমন কিছু বলা হয়নি অর্থাৎ
বিশেষ করে বা নির্দিষ্ট করে হুরদের নাম গুলো উল্লেখ করা হয়নি। তবে
হুরদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে কোরআন এবং হাদিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে। নিম্নের
কুরআন ও হাদিস অনুসারে হুরদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা যাচ্ছে।
কুরআনে হুর সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালার বলা যে তথ্যগুলো দেওয়া সেগুলো বিভিন্ন সূরায়
রয়েছে সেগুলো মিলিয়ে সার সংক্ষেপ লিখছি। হুরেরা হবে অত্যন্ত সুন্দরী। তাদের চোখ
হবে ডাগর চোখ। আচরণে হবে চমৎকার। তারা হবে অনুপম সুরক্ষিত। তাদেরকে কোনো মানব ও
দানব (জিন) কোনো দিন স্পর্শ করে নাই। তারা সুরক্ষিত ও লুকিয়ে রাখা মুক্তার মত
হবে।
জান্নাতে হুরদে নাম সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম এর ধারনা প্রসূত কিছু নাম নিম্নে পেশ
করা হলো।
- আরবী য-হিকাহ, বাংলায় সুহাসিনী
- আরবী আয়মান, বাংলায় সৌভাগ্যবতী
- আরবী খাদিমাহ, বাংলায় সেবিকা
- আরবী লুবাবাহ, বাংলায় বুদ্ধিমতী
- আরবী শাকিরা, বাংলায় কৃতজ্ঞিনী
- আরবী রাহমা, বাংলায় দয়াবতী
জান্নাতের ৮টি দরজার নাম
জান্নাতের ৮টি দরজার নাম এখানে আলোকপাত করছি। জান্নাত মূলত একটি
কিন্তু তার স্তর বা শাখা হচ্ছে আটটি বিষয়টি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। জান্নাতের
বিভিন্ন নাম রয়েছে যা একেক আমলকারী একেক জান্নাতে যাবে। যেমন আল্লাহর পথে জিহাদ
বা সংগ্রামকারীদের জন্য ১০০ গেট বা জান্নাতের ডোর বা দরজা রয়েছে। আর রোযাদার
ব্যক্তিরা যে দরজা দিয়ে ঢুকবে তার নাম রাইয়ান বা তৃপ্ত দরজা মানে প্রবেশ করলে পেট
তৃপ্তিময় থাকবে।
হাদিসের আলোকে যেটি বোধগম্য তা হচ্ছে উপরে যে জান্নাতের নামগুলো বলা হয়েছে সেগুলো
প্রকারান্তরে একেকটি দরজার নাম। সেগুলো হচ্ছে জান্নাতুল ফিরদাউস, জান্নাতে আদন,
জান্নাতুল খুলদ, জান্নাতুন নাঈম, জান্নাতুল মাওয়া, দারুস সালাম, দারুল মাকম এবং
দারুল করার। এ জান্নাত গুলো চাইতে বলেছেন রাসূলে পাক (সা) সকাল ও সন্ধ্যায় ৮বার
করে এই দোয়া পড়ে।
"আল্লাহুমা ইন্নি আসআলুকা জান্নাতাল ফিরদাউস"
সাতটি জান্নাতের নাম
সাতটি জান্নাতের নাম নয়, প্রকৃতপক্ষে জান্নাত হলো মোট ৮টি। তবে জান্নাতের বিপরীত
জাহান্নাম হলো ৭টি। জান্নাত সুখের জায়গা আর জাহান্নাম অত্যন্ত দুঃখ বা কষ্টের
স্থান। জান্নাতে যেতে হলে ঈমান সহ সৎ আমলের কথা বলা হয়েছে কুরআন ও হাদিসের অসংখ
জায়গায়। সবচেয়ে ভালো ও উত্তম জান্নাত জান্নাতুল ফিরদাউস পেতে চাইলে সকল ছোট বড়
পাপ থেকে বেঁচে থাকতে হবে এবং ফরজ এর পাশাপাশি ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল আমলগুলো ও
ছাড়া যাবে না।
আর জান্নাতুল ফিরদাউস ছাড়া অন্যান্য জান্নাতগুলো পাওয়া যাবে ভালো ও সৎ কাজ করতে
হবে। ঈমান ভঙ্গ হয় এমন কাজ করা যাবেনা। পাপ হলে সাথে তাওবা ও ইস্তিগফার করতে হবে
তাহলে নিম্নের জান্নাতগুলো পাওয়া যাবে। এখানে বাকী সাতটি জান্নাতের নাম লিখছি।
- জান্নাতে আদন
- জান্নাতুল খুলদ
- জান্নাতুন নাঈম
- জান্নাতুল মাওয়া
- জান্নাতু দারিস সালাম
- জান্নাতু দারিল মাকাম
- জান্নাতু দারিল কারার
8 Gates of Jannah in English wih meaning
8 Gates of Jannah in English wih meaning is written here. Infact Jannah is
only one but division of jannah is 8. Jannah the word is arabic that means in
english is paradis or heven and in bengali meaning is bagan. This jannah is
place of happiness for them who taken eman and did good objects. Let's say
about gate of jannah and try to write below.
- Jannatul firdous that means paradis heven
- Jannatu Adan that means permanental heven
- Jannatul khuld that means everlasting garden
- Jannatun naeem that means happy heven or paradis
- Jannatul mawa that means livable paradis
- Janntu daris salam that means peaceful hous of paradis
- Jannatu daril makam that means living home of heven
- Jannatu daril qarar that means permanent place of heven
লেখকের শেষ মন্তব্য
৮ টি জান্নাতের নাম অর্থসহ এই আর্টিকেলে লেখার চেষ্টা করেছি। প্রিয়
পাঠক, আপনি যদি উক্ত ব্লগ বা আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন
তাহলে আশা করা যায় জান্নাত সম্পর্কে বিভিন্ন তত্ত্ব ও তথ্য বুঝতে
পেরেছেন। বিশেষ করে জান্নাত কয়টি জান্নাতের সংখ্যা কয়টি এবং কি কি বিষয়টি
সুস্পষ্ট ধারণা রয়েছে। আরও এরকম নিত্য নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের
ওয়েবসাইটটির সাথেই থাকুন ইনশাআল্লাহ।
আরো কিছু প্রশ্ন ও উত্তরঃ FAQ
প্রথম শ্রেণীর জান্নাতের নাম কি?
প্রথম শ্রেণীর জান্নাতের নাম কি বিষয়টি এখানে আলোকপাত করছি। আল্লাহর
রাসূল (সা) হাদিসের ভিতরে বলেছেন যদি তুমি জান্নাত চাও তাহলে বড় জান্নাত
তাই চাও আর বড় জান্নাত বা প্রথম শ্রেণীর জান্নাত সম্পর্কে তিনি বলেছেন তা হচ্ছে
জান্নাতুল ফেরদাউস।
জান্নাতের দরজা কয়টি ও তার নামগুলো কি?
জান্নাতের দরজা কয়টি ও তার নামগুলো কি বিষয়টি এখানে লিখছি। মূলত
জান্নাত একটি কিন্তু তার জান্নাতের দরজা আটটি যা হাদিস দ্বারা সুস্পষ্টভাবে
প্রমাণিত। ৮টি নাম হচ্ছে যথাক্রমে, ফিরদাউস, আদন, খুলদ, মাওয়া, দারুস
সালাম, দারুল ক্বরার, দারুল মাকাম এবং জান্নাতুন নাঈম।
রোজাদারের জন্য জান্নাতের দরজার নাম কি?
রোজাদারের জন্য জান্নাতের দরজার নাম কি বিষয়টি এখানে লিখছি। রোজাদার সারাদিন কষ্ট
করে রোজা রেখে ক্লান্ত হয়ে আর এটি রাখে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। আর এই
কারণে রোযাদার জান্নাতের যে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে সেটির নাম হলো রাইয়ান যার অর্থ
পরিতৃপ্ত। মানে এই দরজা ঢুকে তৃপ্ত-পরিতৃপ্ত হয়ে যাবে।
জান্নাতের দরজাগুলোতের কি লেখা থাকবে?
জান্নাতের দরজাগুলোতের কি লেখা থাকবে এখন লিখছি। মূলত যেহেতু জান্নাত একটি আর
জান্নাতের দরজাগুলো আলাদা আলাদা। সেহেতু আমরা যে জান্নাতের নাম ৮টি জানি এই গুলোই
প্রত্যেক দরজায় লেখা থাকবে। সেগুলো ছাড়াও অন্যান্য হাদিস অনুযায়ি জান্নাতীর বিশেষ
গুণ অনুসারে অন্য কিছু নাম ও লিখা থাকবে। যেমন, তুবা, মাকামুন আমীন এবং
মাক্বয়াদে সিদক্ব ইত্যাদি।
জান্নাতের সকল দরজা থেকে কাকে ডাকা হবে?
জান্নাতের সকল দরজা থেকে কাকে ডাকা হবে বিষয়টি আলোকপাত করছি। জান্নাতের একেক দরজা
থেকে একেক জনকে ডাকা হবে। জিহাদকারীকে এক দরজা দিয়ে ডাকা হবে। সিয়াম আদায়কারীকে
আরেক দরজা দিয়ে ডাকা হবে। সালাত বা নামাজ আদায়কারীকে আরেক দরজা দিয়ে ডাকা হবে।
দানকারীকে আরেক দরজা দিয়ে ডাকা হবে। ইত্যাদি।
আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url