পার্বত্য চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থান - চট্রগ্রাম দর্শনীয় জায়গা

বাংলাদেশের সেরা ১০ দর্শনীয় স্থানপার্বত্য চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করেছেন নিশ্চয়। আজকের আর্টিকেলে চট্রগ্রাম বিভাগের পার্বত্য অঞ্চলের যে জায়গাগুলো দর্শনীয় সেগুলো জানবেন প্রিয় পাঠক। 

পার্বত্য-চট্রগ্রামের-দর্শনীয়-স্থান

মানুষ ভ্রমণ প্রিয়, টুরিস্ট জায়গাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখলে মন ফ্রি হয় এবং অনেক হালকা হালকা লাগে। এক্ষেত্রে কারো দুংখ ভারাক্রান্ত হৃদয় থাকলে দেখার মতো জায়গা ঘুরুন অবশ্যই মনের ভারত্ব দূর হবে।

পেজ সূচীপত্রঃ পার্বত্য চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থান কোনগুলো জানুন

পার্বত্য চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থান

পার্বত্য চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থানগুলো বাংলাদেশের সবচেয় মনোমুগ্ধকর ও ন্যাচারাল বিউটি মানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর। পার্বত্য চট্রগ্রাম দেশের দক্ষিণ ও পূর্ব অঞ্চলের একটি বিভাগ এবং যে দিকে তাকাই সেদিকে শুধু পাহাড় দেখতে পারবেন। এ ছাড়া চট্রগ্রামের পার্বত্য জেলা বন-বনানী, ঝর্ণা এবং নদী ও রয়েছে। আবার এখানে রয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতি ও উপজাতি এবং নানান শ্রেণীর মানুষ রয়েছে। বিধেয় পার্বত্য জেলা দর্শনার্থী ও পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। তো চলুন জেনে পার্বত্য চট্রগ্রামের দর্শনীয় উল্লেখযোগ্য কিছু স্থান।

কাপ্তাই লেক বা হ্রদঃ এটি বাংলাদেশের মাঝে সবচেয়ে বড় একটি লেক বা হ্রদ আর এটি কাপ্তাই লেক কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের সময় বানানো হয়েছিল। কাপ্তাই লেকের দৃশ্য বা সিনারী অত্যাধিক মনোরম ও মুগ্ধকর ও লোকেদের কাছে অনেক জনপ্রিয়।

রাঙ্গামাটিঃ পার্বত্য চট্রগ্রামের একটি জেলা যেটি পাহাড়ের রানী নামে প্রসিদ্ধ। এই জেলায়ও নানান দর্শনীয় জায়গা রয়েছে। যথা- ঝর্ণা, নদী ও পাহাড় ইত্যাদি। নিম্নে আলোচনা থাকছে রাঙ্গামাটি নিয়ে।

কাঁকড়াঝাড়ঃ এটি একটি বিক্ষাত ঝর্ণামায় জায়গা এবং খুব মনোরম দৃশ্যময় পাহাড়ি একটি সিটি বা শহর।

শুভলং ঝর্ণাঃ বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয় উঁচু ঝর্ণা হিসেব বিক্ষাত ও জনপ্রিয় ট্যুরিষ্টদের কাছে।

মাইসিংঝাড়িঃ রাঙ্গামাটির মাঝে মাইসিংঝাড়ি উপজাতিদের একটি ভিলেজ বা গ্রাম। এখানে উপজাতিদের নানান জীবন ধারা ও সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো জানা যাবে।

খাগড়াছড়িঃ এটিও পার্বত্য জেলাগুলোর আরো একটি জেলা যেটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। এ জেলাটি পাহাড়ের 'রাজা' নামে সুপরিচিত। এখানেও নদী, ঝর্ণা এবং পাহাড় রয়েছে। নিচে দেওয়া হলো চট্রগ্রাম খাগড়াছড়ির দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে।

মহালছড়ি ঝর্ণাঃ এটি বাংলাদেশের সেকেন্ড বিগেস্ট ঝর্ণা মানে দ্বিতীয় সর্ব উন্নত ঝর্ণা।

ধুলাছড়ি ঝর্ণাঃ এটি ও একটি ঝর্ণা যেটি খুব মনোরম ও মনোমুগ্ধকর এবং যা বিক্ষাত তার ৭ ধাপের।

আলুটিলাঃ এটি আরো একটি ঝর্ণা পার্বত্য চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থান সমূহের। আবার এটিও আকর্ষণীয় ও মনোরম দৃশ্যময় ঝর্ণা।

বান্দরবানঃ এই জেলাটিও পার্বত্য চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থানগুলোর মাঝে আরো একটি। যেখানে নানান মনোরম দৃশ্যমান পাহাড়, নদী, ঝর্ণা রয়েছে আবার আরো রয়েছে উপজাতি শ্রেণী যারা খুব চমৎকার। নিম্নে থাকছে দর্শনীয় স্থান গুলো জেলাটির যেটিও রানী নামে আখ্যায়িত।

নিলাচরিঃ এটি সাদা বালি ও নীল পানির জন্য প্রখ্যাত এবং মনোরম সাগর বিচের শহর।

মায়াঝিরিঃ এটি পাহাড় ওয়ালা শহর যা মুগ্ধকর ও বিক্ষাত মনোরম সিনারিফুল ঝর্ণা।

চিম্বুকঃ পার্বত্য চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থানসমূহের আরো একটি উপজাতি গ্রাম যেখানে তাদের জীবনধারা ও সংস্কৃতিগুলো জানা যাবে।

সাঙ্গুঃ এটি আরো একটি জেলা চট্রগ্রাম বিভাগের যেটি "রাজা" নামে সুপরিচিত। যেটি আবার উপজাতি ভিত্তিক পাশাপাশি পাহাড়, নদী এবং ঝর্ণাময়। নিম্নে কিছু দর্শনীয় স্থান থাকছে।

মৌলভী বাজারঃ এটিও মনোরম দৃশ্য ও পাহাড়ী শহর এবং ঝর্ণাময় স্থান।

জাফলংঃ এটি আরো একটি গ্রাম উপজাতিদের যেখানে উপজাতিদের বিভিন্ন কিছু জানতে পারবেন।

লংমাঃ আরো একটি জেলা পাহাড়ি জেলা সমূহের যেটি খুব মনোরম ও ঝর্ণাময়।

চুম্বি ঝর্ণাঃ অত্যন্ত মনোরম ঝর্ণা আর এটি তার ৩টি ধাপের জন্য সুখ্যাত।

বৈদ্যনাথঃ এটি আরও একটি ঝর্ণা যেটি অত্যাধিক মন জয়কারী ও নয়নাভিরাম সাথে সাথে পাহাড়ি শহর ও বটে এটি।

রাখাইনঃ পার্বত্য চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থান সমূহের আরো একটি জেলা যেটি আবার "রাজা" নামে পরিচিত এবং এখানেও নানান মনোরম ও মুগ্ধকর নদী, ঝর্ণা, পাহাড় এবং উপজাতি রয়েছে। 

চট্রগ্রাম দর্শনীয় জায়গা

চট্রগ্রাম দর্শনীয় জায়গাগুলোর মাঝে আরো নানান পর্যটক স্থান রয়েছে যেগুলো এখানে থাকছে। চলুন জায়গাগুলো জেনে নেই। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত যেটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিচ বা সৈকত আর বাংলাদেশে সবচেয় বড় সমুদ্র সৈকত। খুরশি সমুদ্র সৈকত আরো একটি দর্শনীয় জায়গা যেটি হোয়াইট স্যান্ড বা সাদা বালি এবং নীল জল এর জন্য ফেমাস। আন্দরকিল্লা এটি মোঘল শাসণ আমলের এটি কেল্লা বা দুর্গ যেটি চট্রগ্রামের সেন্টারে সিচুয়েটেড। জাতীয় যাদুঘর এটি আরো একটি দর্শনীয় জায়গা যেটি ইতিহাস ও সংস্কৃতি ডিসপ্লে করে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যেটি ঘুরাঘুরির জন্য বিক্ষাত এবং বাংলাদেশের কেন্দ্রে অবস্থান করছে।

চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান ফয়েজ লেক

চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান ফয়েজ লেক এটি অত্যন্ত নাম করা মানুষের হাতে বানানো বা কৃত্রিম লেক বা হ্রদ। এটি ৩৩৬ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত ও অবস্থিত। আর বিশেষ যে কথাটা বলব তা হচ্ছে ফয়েজ লেক টা পাহাড়তলী লেক বা পাহাড়তলী হ্রদ নামে সুপ্রসিদ্ধ। এটি আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে এর পক্ষ থেকে ১৯২৪ সালে তৈরী হয়েছিল। লেকটিতে রয়েছে কৃত্রিম ফয়েজ লেক উন্মুক্ত মনোরম সিনারিতে পরিবেষ্টিত এবং এটিতে ঘেরাও রয়েছে বন, পাহাড় ইত্যাদি। এখানে নৌকায় ভ্রমণ করা যায়, পিকনিক খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে, বিনোদন ভরপুর করা যায় আবার স্বাদে ও মানে নানান বৈচিত্রময় খাবার ও রয়েছে। একবার ঘুরে আসুন এবং প্রাণভরে উপভোগ করেন। ফয়েজ লেকে প্রবেশ মূল্য অ্যাডাল্ট ২০ এবং বেবি ১০ টাকা।

একদিনে চট্টগ্রাম ভ্রমণ

একদিনে চট্টগ্রাম ভ্রমণ বলতে যেটি আপনাকে বলব সেটি হচ্ছে চট্রগ্রামে পৌঁচার পরের কখন কোথায় ঘুরপাক করবেন সেটা। তো চলুন বুঝিয়ে দেই। সকাল ৮ টায় শহর পৌঁছবেন। এরপর ৯ টায় জাদুঘরে যাবেন। এরপর ১১ টায় আন্দরকিল্লা ভিজিট করুন। এরপর দুপুর চট্রগ্রাম বাজারে গিয়ে নানান সুস্বাদু খাবার উপভোগ করুন। এরপর ২ টায় ফয়েজ লেক এ বোটে মন ভরে এনজয় করুন। এরপর বিকেল ৪ টায় উপকূলীয় রাস্থায় হাঁটুন এবং গাড়ী ড্রাইভ করেন। এরপর ৬ টায় সমুদ্র সৈকতে সূর্যাস্ত ঘুরুন। এরপর ৮ টায় স্থানীয় রেস্তোরাঁয় ফুডস উপভোগ করুন। এরপর রাতে ১০টায় বিশ্রাম নিন।

চট্টগ্রাম পিকনিক স্পট

চট্টগ্রাম পিকনিক স্পটগুলো নিয়ে এখন বলছি। প্রথমে পিকনিক, বার্বিকিউ এবং বিশেষত নোকা জার্নির জন্য খুব জনপ্রিয় স্পট হচ্ছে ফয়'স লেক। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও পিকনিকের জন্য আরো একটি স্পট । ইনানি বিচ ও পিকনিক এর জন্য আরো একটি স্পট। খুরশি বিচ ও আরো একটি পিকনিক স্পট। আরো কিছু হচ্ছে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়া ছড়ি এর বিভিন্ন উপভোগীয় পিক স্পট রয়েছে যেগুলো মনোরম ঝর্ণা, নদী ও পাহাড়ি শহড় ইত্যাদি। 

চট্টগ্রামের পার্ক কোথায়

চট্টগ্রামের পার্কগুলোর অনেক পার্ক রয়েছে যেগুলো খুব বিক্ষাত, যে পার্কগুলো শহরের অভ্যন্তরে অবস্থিত। যেমন ১টি জাম্বুরী পার্ক যেখানে রাইড করা যায়, গেমস খেলা যায় এবং একটি মানুষের হাতে বানানো হ্রদ ও রয়েছে। বার্নার্ড হাইল্যান্ড পার্ক যেখানে খেলার ফিল্ড রয়েছে, হাঁটার রাস্থা রয়েছে, আবার পিকনিকের জন্য একটি সুন্দর জায়গাও রয়েছে। পাহাড়তলী পার্ক যেটি ঐতিহাসিক পার্ক এবং ব্রিটিশ শাসন আমলের কিছু স্থাপত্য শিল্প রয়েছে। আর শহরের বাইরে যে পার্কগুলো অবস্থিত একটি ফয়েজ লেক এখানে পার্ক রয়েছে, রাঙ্গামাটি কাপ্তাই লেক, এবং খাগড়াছড়ি দুলদুলি ঝর্ণা তেও একটি পার্ক রয়েছে। 

চট্টগ্রামের পার্ক সমূহ

চট্টগ্রামের পার্ক সমূহ সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই উল্লেখ করেছি। যেমন জাম্বুরী পার্ক, পাহাড়তলী পার্ক, আবার বার্নার্ড হাইল্যান্ড পার্ক ইত্যাদি। এছাড়া আরো কিছু পার্ক যেমন সেন্ট্রাল পার্ক, বটানিক্যাল গার্ডেন এবং নন্দন কানন ইত্যাদি। আর কিছু হচ্চে যেমন রামু পাহাড়, হাতিয়া এবং কক্সবাজার সি বিচ য়েও অনেক ধরণের পার্ক রয়েছে যেগুলো খুঁজলেই পাবেন জাস্ট আগ্রহ থাকা লাগবে।

চট্টগ্রাম ঘুরাঘুরি

চট্টগ্রাম ঘুরাঘুরির জন্য খুব জনপ্রিয় একটি বিভাগ ও জেলা। এখানে রয়েছে চোখ জুড়ানো নানান পাহাড়ি শহর, নান্দনিক ঝর্ণা, মন স্থিরকারী সৈকত আবার রয়েছে কত রঙ-বেরঙের বৃক্ষলতা যেগুলো পাহাড়ের উপরে রয়েছে। আবার এখানে ঐতিহ্যবাহী তীর্থস্থান এবং অনেক প্রাচীন মন্দির রয়েছে। আবার রয়েছে কত স্থাপত্য শিল্প, পুরাতন পুরাতন বিল্ডিং এবং মাসজিদ, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় স্টেডিয়াম ইত্যাদি। কাজেই চট্রগ্রামে ইচ্ছামত ঘুরাঘুরি করতে পারেন। 

চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক স্থান

চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক স্থান সমূহের মাঝে রয়েছে আন্দরকিল্লা যা অতি প্রাচীন দুর্গ, জামে মসজিদ যেটি ১৯৬০ সালে নির্মিত হয়েছিল, ক্যাথেড্রাল অফ দ্য হলি রোজারি যেটি ঐতিহাসিক একটি গির্জা, বড় মাজার যেটি ১৫ শতকে বানানো হয়েছিল। আবার রয়েছে রামু বিক্ষাত ও ঐতিহাসিক টেম্পল বা মন্দির। আপনি যদি চট্রগ্রাম ভ্রমণ করেন তাহলে দেখতে পাবেন নানান প্রত্নতাত্তিক স্থান এবং ঐতিহ্য ইত্যাদি পাশাপাশি আরো বেস্ট অফ দ্য বেস্ট ট্যুরিস্ট প্লেসেস।

লেখকের শেষ মন্তব্য

পার্বত্য চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থান সংশ্লিষ্ট নানান দর্শন প্রিয় স্থান ও ব্যাপারগুলো উল্লেখ করেছি উক্ত আর্টিকেল বা ব্লগের ভিতর। প্রিয় পাঠক, এই ব্লগটি পড়ে থাকলে আশা করা যায় পার্বত্য চট্রগ্রামের আকর্ষনীয় দর্শনীয় জায়গাগুলোর ব্যাপারে জানতে পেরেছেন। আরো এ রকম নিত্য নূতন আর্টিকেল বা ব্লগ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ইনশাআল্লাহ্‌!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url