যাকাতের গুরত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে যত মর্মকথা বিস্তারিত জানুন

হজ্জের নিয়ম সম্পর্কে যত বিষয় আছে বিস্তারিত জানুনযাকাতের গুরত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আজকের আর্টিকেলে লিখছি। প্রিয় পাঠক, যাকাত ধনী-গরীবের মাঝে সমতা বিধানকারী এক বিধানের নাম। কুরআন কারীমে এসেছে বিত্তশালীদের বিত্তে বা সম্পদে অসহায় দুস্থ এবং গরীবদে হক্ব বা অধিকার রয়েছে। 

যাকাতের-গুরত্ব-ও-তাৎপর্য

হাদীসে যাকাতের নেসাব পরিমাণ সম্পদ হলে আর সেটির যাকাত নে দেওয়া হলে কিয়ামতে সাপ হয়ে দংশন করার কথা এসেছে। অতএব অতি সতর্কতার সাথে নেসাব হলেই যাকাত বের করে দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। চলুন আলোচনা করি বিস্তারিত।

পেজ সূচীপত্রঃ যাকাতের গুরত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে যত মর্মকথা বিস্তারিত জানুন 

যাকাতের গুরত্ব ও তাৎপর্য

যাকাতের গুরত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে জানাচ্ছি। যাকাত অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি বিধানের নাম। এটি ইসলামের হিজরী সনের দ্বিতীয় হিজরীতে অবতীর্ণ হয়েছে। যাকাত এর গুরুত্ব এত বেশি যে এটি আল কুরানুল কারীমে বহু জায়গায় বর্ণিত হয়েছে। বিশেষ করে আল কোরআনুল হাকিমে সালাতের কথা সবচেয়ে বেশি এসেছে 82 বার এবং যাকাতের কথা প্রায় ৩২ বারেরও বেশি এসেছে। 

কোরআন মাজিদে যাকাত এর বিষয়টি সালাত বিষয়টির সাথে অঙ্গাভঙ্গি ভাবে জড়িত হয়ে আছে। কুরআন মাজিদে তাকালেই দেখা যায় যেখানেই সালাত সেখানেই যাকাতের কথা। যাকাত সম্পর্কে কোরআন মাজিদে এভাবে এসেছে, ইসলামে বিশ্বাসীগণকে বলা হয়েছে যে সালাত যেমন আদায় করতে হবে অনুরূপ যাকাত প্রদান করতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ সালাত মানুষের জন্য এত গুরত্ব ও মাহাত্ম্যপূর্ণ কেন?

আরো বলা হয়েছে যে সম্পদশালীদের সম্পদে অসহায়দের বা দুস্থদের অধিকার রয়েছে। অর্থাৎ যাদের সম্পদ রয়েছে যেটি কিনা একটা নির্দিষ্ট সমপরিমাণ হলে সেটার একটা অংশ গরিবদের মাঝে বন্ধন করতে হবে। যাকাত না দেওয়ার ব্যাপারে হাদিসে অনেক ভয়ংকর হুঁশিয়ারি এসেছে। বলা হয়েছে যে যাকাত এর নির্দিষ্ট পরিমাণ হওয়া সত্ত্বেও যদি না দেওয়া হয় তাহলে এই সম্পদ হাশরের মাঠে সাপ বিচ্ছুর আকার ধারণ করবে। 

যেটি গলায় ঝুলে যাবে এবং বলবে যে আমি তোমার গচ্ছিত সম্পদ তুমি আমাকেই আগলে রেখেছিলে সেটি দুনিয়াতে থাকাকালীন গরিবদের দাও নাই এর হক বের করো নাই। যাকাত না বের করলে দুনিয়াতেও অনেক হুমকি ও ক্ষতি রয়েছে। যেমন যাকাতের মাল না দেওয়া হলে এটি যে কখন কিভাবে নষ্ট হয়ে যাবে ধ্বংস হয়ে যাবে বুঝাই যাবে না। 

বিভিন্ন বালা মুসিবত এসে ধ্বংস করে দেবে। এমনকি সম্পদ আর জমিতেই রয়েছে আর মনে মনে নিয়ত রয়েছে যে সম্পত্তির যাকাত যথাযথ বের করবে না। এক্ষেত্রে স্রষ্টা খুব হিকমতের সাথে তার জমিনে বিভিন্ন আসমানী বালা এবং জমিনে বালা দিয়ে তার ক্ষেত খামারকে ধ্বংস করে বা শেষ করে দিয়ে থাকেন। তার এক্ষেত্রে আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করে যাকাতের মাল বের করে দেওয়াই নির্দিষ্ট সমপরিমাণ হলেই উচিত।

যাকাতের গুরত্ব এর ব্যাপারে কোরান কি বলছে?

যাকাতের গুরত্ব ও তাৎপর্য এর ব্যাপারে আল কুরআনুল কারীম যা বলছে এখানে বিষয়টি বিশদভাবে বলা হলো। যাকাত শব্দটি আরবি শব্দ যার অর্থ হচ্ছে বৃদ্ধি পাওয়া, বেড়ে যাওয়া এবং বারাকাহ হওয়া। আর পারিভাষিক অর্থ হচ্ছে যাকাত হচ্ছে এমন সম্পদের নাম যেটি নেসাব বা নির্দিষ্ট পরিমাণ হলে সেটি বের করে দেওয়া। আল কোরআনে এসেছে যে আর তাদের অর্থাৎ ধনীদের সম্পদে গরীব এবং মাহরুম তথা বঞ্চিতদের জন্য হক বা অধিকার রয়েছে। 

এবং আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদের অন্যত্রে সালাত আদায় করতে হবে এবং যাকাত প্রদান করতে হবে এ কথা কথা বলছেন। আল কোরআনুল কারিমে যাকাত দিতে যারা অস্বীকার করে তাদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে যে, যারা স্বর্ণ এবং রৌপ্যকে আল্লাহর রাস্তায় খরচ না করে জমা করে রাখে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার নাবিকে বলেছেন তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির কথা শোনাতে। এবং হাশরের মাঠে হিসাব হওয়ার পরে জাহান্নামে তাদের কপালে এবং তাদের পার্শ্বদেশে এবং তাদের পৃষ্ঠদেশে লোহা গরম করে তাপ দেওয়া হবে এ কথা বলা হয়েছে। 

আর বলা হবে তখন যে এটা হচ্ছে তোমাদের স্বর্ণ ও রুপা বা সম্পদ জমা করে রাখার শাস্তি। আল কুরআনুল মাজীদে আরো বলা হয়েছে যে যে লোকেরা তাদের উত্তম সম্পদ থেকে ব্যয় না করে কার্পণ্য করে জমিয়ে রাখে তাদেরকে ঐ সম্পদ কল্যানময়ী হবে এটা এটা মনে করতে কে নিষেধ করা হয়েছে। আর এই সম্পদকে যেটি সে কার্পণ্যবশত দেয় না এটি কেয়ামতের মাঠে তার গলায় পেঁচিয়ে দেয়া হবে...। 

যাকাতের তাৎপর্যের সম্পর্কে হাদীসের কথা

যাকাতের গুরত্ব ও তাৎপর্য এর ক্ষেত্রে হাদিস কি বলে বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করছি। যাকাতের ক্ষেত্রে হাদীসে অনেক কথা এসেছে। যাকাতের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে একজন সাহাবী নাম হচ্ছে মুআয তার প্রতি আল্লাহর রাসূলের এই নির্দেশ ছিল যে তিনি যেন ইয়ামান দেশে গিয়ে বিত্তশালীদের কাছ থেকে সম্পদ নিয়ে গরিবদের মাঝে বণ্টন করে দেয়। এটা হচ্ছে যাকাতের সম্পদের পবিত্রতা স্বরূপ। 

এবং আরো বলা হয়েছে যে যারা যাকাত দিবে না যাকাত দিতে ও স্বীকৃতি জানাবে তাদের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই এবং যুদ্ধ ঘোষণা করার কথা এসেছে। আর এক হাদিসে এসেছে যে জান্নাতে যাওয়ার খুব শর্টকাট রাস্তা হচ্ছে যে সালাত আদায় করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে সে সু-সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক না করে শুধুমাত্র তার সন্তুষ্টির জন্য এবাদত করবে তার জন্য জান্নাত যাওয়া খুবই সহজ। 

আর এ ব্যাপারটি একজন সাহাবীর দিকে ইশারা করে আল্লাহ রাসূল বলেছেন যে জান্নাতি মানুষ দেখতে চাও এবং আনন্দ পেতে চাও তাহলে তোমরা উমুককে দেখো যে শুধু এই কাজগুলো করে। হযরত আবু বকর এর ব্যাপারে একটি কথা রয়েছে যে তিনি একজন লোক যাকাতের একটি ছোট্ট অংশ না দেওয়াই তার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। 

যাকাতের খাতসমূহ

যাকাতের খাত সমূহ নিয়ে বর্ণনা করছি। যাকাতের খাত বলা হয় যে সমস্ত জায়গায় বা যাদের যাদের যাকাত দিতে হবে সেগুলি হচ্ছে যাকাতের খাত। যাকাতের খাতের ক্ষেত্রে স্পষ্ট আল কুরআনুল কারীমের মাঝে বর্ণনা এসেছে। আর এটি সুস্পষ্ট কুরআন মাজীদের স্পষ্ট ভাষায় ১০ নম্বর পারা, সূরা নাম্বার ৯ এবং আয়াত নাম্বার হচ্ছে ৬০ এ এসেছে যে যাকাতের সম্পর্কে বন্টন করতে হবে আটটি জায়গায় বা তার খাত হচ্ছে আটটি।
যাকাতের-খাতসমূহ
সারাংশ বা সারমর্ম হচ্ছে এটা, বলা হচ্ছে যাকাতের সম্পদ গুলো প্রথম গরিব বা ভিক্ষুক যে চেয়ে খায়, দ্বিতীয়তঃ মিসকিন বা এক সন্ধ্যায় খায় আরেক সন্ধ্যায় খাইতে পাইনা। তৃতীয়তঃ যারা যাকাতের মাল বা সম্পদ আদায় করে এবং সংরক্ষণ করে। চতুর্থ, যে ইসলাম গ্রহণ করেনি কিন্তু করার সম্ভাবনা রয়েছে সে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট। 

পঞ্চম, গোলাম বা দাস যে কারো অধীনে রয়েছে তাকে মুক্ত করার জন্য। ষষ্ঠ, যার ওপরে ঋণ রয়েছে তার ঋণ পরিশোধের জন্য। সপ্তম, যে আল্লাহর রাস্তায় আল্লাহর দ্বীনকে সমুন্নত রাখতে সদা চেষ্টা করছে অর্থাৎ মুজাহিদকে। এবং অষ্টম, যে সফরে বের হয়ে তার পাথেয় বা পথে ব্যয় করার সম্পদ শেষ হয়ে গেছে তাকে দিতে হবে।

যাকাত সালাতের সাথে আসা এক বিধান

যাকাতের গুরত্ব ও তাৎপর্য এর ব্যাপারে যে বিষয়টি এখানে বলব সেটি হচ্ছে যে যাকাত হচ্ছে কুরআন মাজীদে সালাত বা নামাজের সাথে আসা এক অত্যাবশ্যকীয় বিধান। আমরা ইতিমধ্যেই উল্লেখ করেছি যে যাকাত শব্দটি আল কোরআনুল কারীমে সালাত যেমন অধিক সংখ্যক বার এসেছে অনুরূপভাবে যাকাত শব্দটাও বা যাকাতের ব্যাপারটাও অনেকবার এসেছে। 

এক্ষেত্রে, একটি বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে সালাতের ব্যাপারটি এসেছে ৮২ বারের ওপর এবং যাকাতের ব্যাপারটি এসেছে ৩২ বারের ওপর। যে দুইটা বিধান আল কুরআনুল কারিমে সবচেয়ে বেশি বর্ণিত হয়েছে। আর তাৎপর্য যেটি উঠে আসছে এর বেশি আসার জন্য সেটি হচ্ছে যে সালাত যেমন মানব জীবনের জন্য এক অতি আবশ্যকীয় ইবাদত যেটি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে আদায় না করলে হাশরের মাঠে মানুষ ফেসে যাবে বা আটকে যাবে এক পা এগোতে পারবে না। 

অনুরূপভাবে, যাকাত ও হচ্ছে অতি আবশ্যকীয় ইবাদত যেটি মানুষ তার সম্পদ থেকে গরীব এবং বঞ্চিতদের জন্য না বের করে দিলে কাল কেয়ামতের ময়দানে বিষধর সাপ হিসাবে গলায় লটকে যাবে এবং তাকে দংশন করতে থাকবে আর বলতে থাকবে যে আমি তোমার সেই জমিয়ে রাখা সম্পদ এবং আমি তোমার গচ্ছিত সম্পদ।

বর্তমানে কত টাকা থাকলে যাকাত ফরয হয়?

বর্তমানে কত টাকা থাকলে যাকাত ফরজ হয় বিষয়টি লেখার চেষ্টা করছি। টাকার যাকাতের নেসাবের মাপকাঠি হচ্ছে টাকার ক্ষেত্রে স্বর্ণ বা রৌপ্য, অর্থাৎ স্বর্ণ সারে সাত তোলা বা সাড়ে সাত ভরি দাম সমপরিমাণ প্রায় পাঁচ লাখ ৭০ হাজার টাকা হলে টাকার যাকাত বের করতে হবে। অথবা রূপার দাম অনুসারে যাকাত বের করতে হবে। রুপা বা সোনা যেকোনোটাকে মানদন্ড ধরে যাকাত দিতে হয়। 

তবে, রুপাকে মানদন্ড ধর্তব্য করা বেশি উত্তম এবং এক্ষেত্রে গরিব বা অসহায় ব্যক্তিরা বেশি উপকৃত হবে। টাকার যাকাতের ব্যাখ্যাটা এরূপ যে, যদি টাকা প্রায় ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা হয় তাহলে শতকরা ২.৫% হারে যাকাত বের করতে হবে অর্থাৎ প্রতি ১০০ টাকায় ২.৫০ টাকা যাকাত বের করতে হবে। আর রুপার ক্ষেত্রে, বর্তমান বাজার মূল্য সাড়ে সাত ভরি এর দাম প্রায় 84 থেকে 85 হাজার টাকা। 

এই সমপরিমাণ টাকা যদি যেকোনো ব্যক্তির কাছে থাকে এক বছর, তাহলে তাকে যাকাত বের করতে হবে। অর্থাৎ সোনা এবং রুপার মূল্য অনুসারে যেটাই হবে সে অনুযায়ী প্রত্যেক ৪০ টাকা থেকে এক টাকা করে যাকাত বের করতে হবে এবং ১০০ টাকায় আড়াই টাকা যাকাত বের করতে হবে। ১০০০ টাকায় ২৫ টাকা যাকাত বের করতে হবে। অর্থাৎ ৪০ ভাগের এক ভাগ বা ১০০ ভাগের ২.৫ ভাগ করে যাকাত বের করতে হবে। 

বর্তমানে ১ ভরি সোনার দাম এক এক ক্যারেটের এক এক রকম। তবে দাম যেটাই হোক আমরা যদি সর্বনিম্ন দাম ধরে ছিয়াত্তর হাজার টাকা তাহলে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণের দাম হয় 5 লাখ 70 হাজার টাকা। আর এই ৫ লাখ ৭০ হাজার এই দামটাকেই সাধারণত যাকাতের মান হিসেবে আগে নির্ণয় করা হতো। আর রুপার দাম হচ্ছে বর্তমান বাজার মূল্য একে ক্যারেট এক এক রকম। যদি এক ভরি রুপার দাম সাধারণত ১২০০০ টাকা হয় তাহলে সাড়ে সাত ভরি আর রুপার দাম ৯০ হাজার টাকা। 

তাহলে যদি কারো বাৎসরিক ৯০০০০ টাকা থাকে তাহলে তাকে যাকাত দিতে হবে। এই হলো মোটামুটি হিসাব। পাঁচ লাখ সত্তর হাজার টাকায় ১৪২৫০ টাকা যাকাত বের করতে হবে। আর ১ লাখ টাকায় আড়াই হাজার টাকা। এটি সোনার দাম অনুসারে। রুপার দাম অনুসারে, ৯০০০০ টাকায় ২২৫০ টাকা যাকাত বের করতে হবে। আর ১২০০০ টাকায় ৩০০ টাকা যাকাত বের করতে হবে। এই হলো যাকাতের টাকার হিসাব।

কোন কোন সম্পদের উপর যাকাত ফরজ হয়?

যে সব জিনিসে উপর যাকাত ফরজ হয় সেগুলো এখানে তুলে ধরা হলো। বিভিন্ন জিনিসে উপর যাকাত ফরজ হয় যেমন সোনা, রুপা তো আছেই তার সাথে টাকা পয়সা এর উপর যাকাত ফরয। আবার, পশু প্রাণী এর ক্ষেত্রে গরু, উট, ছাগল, ভেড়ি ও দুম্বা ইত্যাদির উপর ও যাকাত ফরজ হয়। পাশাপাশি খেত খামার ফসলাদির উপরও যাকাত ফরজ। যেমন ধান, গম, শরিষ, জব, কিসমিস, খেজুর, আঙ্গুর ইত্যাদির উপরও যাকাত ফরজ।

আর একটা সংখ্যা রয়েছে অর্থাৎ চার (৪) ধরণের সম্পদে যাকাত ফরজ যেমন- এক নম্বর, জমি থেকে যে সমস্ত ফসল বা শস্য এবং ফল-মূল উৎপন্ন হয় যেমন এগুলোর ক্ষেত্রে ২টি ভাগ ১, যেগুলো আসমানী পানি দ্বারা হয় সেগুলো ১০ ভাগের এক আর ২, যেগুলো নিজে সেঁচ দিয়ে চাষ করা হয় সেগুলোতে ২০ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হয়। দুই নম্বর, কিছু প্রাণী যেগুলো চড়ে বেড়িয়ে খায় এবং বংশ বাড়ায় সেগুলোর মাঝে উট ৫টিতে  একটি ছাগল আর ২৫টিতে একটি নির্দিষ্ট জাতের উট। 

আর গরু ৩০টিতে একটি আর ছাগল ৪০টিতে একটি যাকাত বের করতে হয়। আর তৃতীয় সোনা-রুপার যাকাত দিতে হবে আর নেসাব হলো সোনার ২০ দিনার ৮৫ গ্রাম সোনা হলে এবং রুপা ২০০ দিরহাম বা ৫৯৫ গ্রাম রুপা হলে ৪০ ভাগের এক ভাগ যাকাত বের করতে হবে। আর চতুর্থ হচ্ছে ব্যবসায়িক পণ্য অর্থাৎ টাকা পয়সা, জীব জন্ত এবং বিভিন্ন খাবার এর ও ৪০ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে।

যাকাত কত প্রকার ও কি কি?

যাকাত বিভিন্ন প্রকার রয়েছে যেমন ব্যবসায় পণ্য এর যাকাত রয়েছে। আবার সোনা ও রুপার যাকাত বের করতে হয়। আবার পশু প্রাণীর যাকাত দিতে হয়। আবার ব্যাংকের নোট ও চেকের হিসাবে যাকাত দিতে হয়। আবার ফল-ফলাদী এবং মাঠে উৎপাদিত বিভিন্ন ফসলের যাকাত দিতে হয়। আবার গুপ্ত ধন এবং যাকাতুল ফিতর এর যাকাত দিতে হয় ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ ১০টি ঔষধি গাছের নাম ও উপকারিতা যেগুলো খুবই কার্যকরী

এসব বিষয়গুলোর যাকাত দিতে হয় সে যদি মুসলিম হয়, জ্ঞানী হয়, স্বাধীন হয়। এবং  আরো এ সম্পদ গুলো যদি নেসাব সমপরিমাণ এবং যদি এই সম্পদ্গুলোর উপর দীর্ঘ একটি বৎসর অতিবাহিত হয়। তাহলে যাকাতের শর্তগুলো পাওয়া গেল এমতাবস্থায় যাকাত দিতে হবে। অন্যথায় যাকাত নে দেওয়ার শাস্তি তাকে ভোগ করতে হবে। বিষধর সাপ এর শাস্তি। তাই সাবধান থাকতে হবে এবং যাকাত দিতে বাধ্য থাকতে হবে।

যাকাতের ফরজ কয়টি ও কি কি?

যাকাতের ফরজ রয়েছে যে কয়টি এখানে পর্যায়ক্রমে লিখা হলো। যাকাতের কয়েকটি ফরজ রয়েছে যেমন সেগুলো হলো ইসলামের অধিবাসি হওয়া। যাকাত দানকারীকে অবশ্যই স্বাধীন হতে হবে। আবার সেই সম্পদটির পূর্ণ এক বছর মালিকানায় থাকা। এবং সেই সম্পদটি নেসাব পরিমাণ হওয়া অর্থাৎ প্রত্যেক মালের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে সেটা হওয়া। এ ৪টি হচ্ছে যাকাতের ফরজ।
যাকাতের-ফরজ-কয়টি-ও -কি-কি
ইসলাম এর অনুসারী না হলে তার উপর যাকাত নেই। আবার স্বাধীন না হলে মানে গোলাম হলে যাকাত নেই। আবার নেসাব পরিমাণ না হলে যাকাত নেই। আবার পূর্ণ এক বছর না হলে যাকাত নেই। তাই বিষয়গুলো বিবেচনা করে সদা সজাগ থাকতে হবে না হলে অনেক বড় গোনাহগার হতে হবে। সম্মানিত পাঠক অবশ্যই যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বুঝতে পেরেছেন। আমল করতেই হবে অন্যথায় ধরা খেতে হবে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

যাকাতের গুরত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে লেখার চেষ্টা করলাম। আশা করছি প্রিয় পাঠক যাকাতের গুরত্ব তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়টি সহকারে বুঝতে পেরেছেন। আজকের এই আর্টিকেলটি যদি নূন্যতম আপনার উপকারে এসে থাকে তাহেল অবশ্যই সাপোর্ট করবেন এবং সাথেই থাকবেন। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে আপনি আমাদের সাথে থাকলে আরো সুন্দর সুন্দর উপকারী ব্লগ উপহার পাবেন ইনশাআল্লাহ্‌।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url