নফল রোজার ফজিলত এর যত আলোচনা বিস্তারিত জানুন

যাকাতের গুরত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে যত মর্মকথানফল রোজার ফজিলত সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব। প্রিয় পাঠক, নফল রোজার পারলৌকিক গুরুত্ব ও ফজিলতের পাশাপাশি ইহলৌকিক অনেক উপকারিতা ও সুবিধা রয়েছে যেগুলো বাস্তবে রোজা পালনকারীরা দেখতে পায়।

নফল-রোজার-ফজিলত

যেমন নফল রোজার মাধ্যমে শারীরিক উপকারিতা রয়েছে অনুরূপ মানসিক উপকারিতা রয়েছে। আবার যেকোনো রোজা রাখার মাধ্যমে অটোফেজির বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে যেটি বর্তমান বিজ্ঞান এর এক অভূতপূর্ব আবিষ্কার।

পেজ সুচীপত্রঃ নফল রোজার ফজিলত এর যত আলোচনা বিস্তারিত জানুন

নফল রোজার ফজিলত

নফল রোজার ফজিলত নিয়ে এই জায়গায় সর্ব প্রথমে বর্ণনা করছি। ফরজ রোজার পরে যার অবস্থান সেটি হচ্ছে নফল রোজা। নফল রোজা মানে অতিরিক্ত রোজা যেটি পালন করলে অনেক সওয়াব রয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে ফরজ রোজায় রোজাদাররা পালন করতে গিয়ে যে ত্রুটিবিচ্যুতি ও ঘাটতি হয়ে থাকে সেগুলো নফল রোজার মাধ্যমে পূর্ণতা লাভ করে। 

প্রত্যেক ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি সেই নির্দিষ্ট ইবাদতের নফলও রয়েছে। প্রিয় নবীর উক্তি রয়েছে যে, নফল ইবাদত গুলোর মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে অনেক বেশি সন্তুষ্ট ও খুশি করা যায়। এই নফল ইবাদত করলে যেমন ফরজের ঘাটতি মেলে পাশাপাশি এতে প্রচুর সওয়াব বা নেকি বিদ্যমান। কাল কিয়ামতের ময়দানে যেদিন একটি নেকির জন্য মানুষ দৌড়াদৌড়ি ছোটাছুটি করবে। 

আরো পড়ুনঃ ১০টি কোরআন হাদিসের বাণী স্পষ্টরুপে জানুন

সেদিন এই নফল রোজার মত ইবাদতগুলো অনেক অগ্রনীর ভূমিকা পালন করবে ও বিপদের বন্ধু হয়ে দাঁড়াবে। রমজান মাসের ৩০ টি রোজা হচ্ছে ফরজ আর রমজান মাস ব্যতীত বাকি যে মাসগুলোতে রোজা রাখা হয় সেগুলোর কোনোটি সুন্নত আর কোনটি নফল। তবে ফরজ ইবাদত বাদ দিয়ে সবগুলোই হচ্ছে নফল ইবাদত। ফরজ মানে অত্যাবশ্যকীয় আর নফল মানে এক্সট্রা বা অতিরিক্ত যেটা করলে সওয়াব না করলে কোন গুনাহ হবে না। 

তবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নফল ইবাদত করতে বেশি উৎসাহ ও উদ্বুদ্ধ করেছেন। এইজন্য নফল ইবাদত বেশি বেশি করা প্রত্যেক ঈমানদার মুমিন ব্যক্তির জন্য খুব আগ্রহের সাথে করা উচিত। হাদিসে বলা হয়েছে রোজা হচ্ছে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে ঢাল হয়ে যায়। ইবনে খুজাইমা ও হাকিম দুইজন হাদিসের বর্ণনাকারী আল্লাহর নাবীকে বললেন যে, নাবি যেন আর তাদেরকে কিছু আমল করার উপদেশ দেন। 

তখন নবী আলাইহিস সালাম রোজা রাখতে বললেন আর বললেন যে এর সমকক্ষ আর কিছু হতে পারে না। আবার একই কথায় উপদেশ চাইলে তিনি সেটাই বললেন যে রোজা রাখতে হবে। একজন সাহাবী নাম তার মুয়াজ তার বর্ণনা যে, আল্লাহর রাসূল এর বলা কথা হলো রমজান মাস ছাড়া যে কেউ অন্য সময় একটি রোজা রাখবে, তার জন্য শুভ সংবাদ হচ্ছে যে ১০০ বছরে একটা দ্রুতগামী ঘোড়া যে পরিমাণ রাস্তা অতিক্রম করবে ততটুকু তার থেকে জাহান্নাম দূরে সরে যাবে। 

আর আবু সাঈদ এর বর্ণনা যে আল্লাহর খুশির জন্য একটি রোজা রাখা হলে জাহান্নামের আগুন থেকে তার মুখমন্ডলকে সাত শত বছরের রাস্তায় দূরে করে দিবেন। ইমামতা তাবারানী বর্ণনা করেন যে একটি নফল রোজা রাখা এটি পৃথিবীর সমপরিমাণ সোনা এর মত যা দান করলে তার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে।

সোমবারে রোযা রাখার ফজিলত

নফল রোজার ফজিলত এই শিরোনামেরই সাথে সংশ্লিষ্ট সোমবারে রোজা রাখার ফজিলত বিষয়টি লিখার চেষ্টা করছি। সোমবার রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অভ্যাস ছিল সোমবারে রোজা রাখা। নাবি কে প্রশ্ন করা হলে সোমবারে রোজা রাখার ব্যাপারে তার কাছ থেকে যেটি উত্তর আসে সেটি হচ্ছে এই দিন বান্দা যে আমল করে সেগুলো আল্লাহর নিকট পেশ করা হয়। 

আবু ক্বতাদাহ এর বর্ণনা রয়েছে যে সোমবার দিন নফল রোজা রাখার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে উত্তরটি প্রদান করেছিলেন সেটি হচ্ছে যে এই সোমবারের দিনটা হচ্ছে এমন একদিন যেদিন আমি জন্ম লাভ করেছি এবং এই দিনেই আমার উপর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মহাগ্রন্থ আল কোরআন অবতীর্ণ করেছেন। এক বর্ণনায় রয়েছে আল্লাহ রাসূল বলছেন যে এই সোমবারের দিনেই আমাকে নবী করে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবারে রোযা রাখার ফজিলত

নফল রোজার ফজিলত এ বিষয়টির সাথে বৃহস্পতিবারে রোজা রাখার ফজিলত বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট। সোমবারের দিন রোজা রাখার যেমন ফজিলত বৃহস্পতিবারের দিনেও রোজা রাখার অনুরূপ ফজিলতের কথার রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছে। তাই সোমবারে ও বৃহস্পতিবারে রোজা পালন করা হচ্ছে মুস্তাহাব তথা ভালো কাজ এবং আল্লাহর রাসূলের সুন্নত। 

সে কথাটাই বলবো যেটি সোমবারের ব্যাপারে বলেছি যে আল্লাহ রাসূলকে জিজ্ঞেস করা হলে বৃহস্পতিবারে রোজা রাখার ব্যাপারে তার পক্ষ থেকে কথা এসেছে যে এই সোমবার এবং বৃহস্পতিবার এই দুইদিন আল্লাহ তাআলার কাছে বান্দার কর্মগুলো সাবমিট করা হয়। আর যে অবস্থায় বান্দার আমলগুলো আল্লাহর কাছে পেশ করা হবে এই অবস্থাটায় কি আমি রোজা পালনকারী হবো না? 

তার ব্যাখ্যাটা এই রুপ ছিল যে আমার পছন্দ হচ্ছে যে সময় আমল পেশ করা হচ্ছে এ সময়টাই আমি একজন আল্লাহর সন্তুষ্ট অর্জনকারী এবং রোজা পালনকারী হয়ে থাকবো। আবু হুরাইরা আর বর্ণনা রয়েছে যে এই দুইদিন তথা সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমলগুলো পেশ করার সাথে সাথে বেহেশতের দরজা খোলা হয় এবং ওই লোকগুলোকে ক্ষমা করে দেয়া হয় যারা আল্লাহর সাথে শরীক সাব্যস্ত করে না।

আইয়্যামে বীযে রোযা রাখার ফজিলত

নফল রোজার ফজিলত বিষয়টির সাথে আইয়্যামে বীযে রোজা রাখার ফজিলত এর ব্যাপারটিও সম্পৃক্ত। আইয়্যামে বীয বলা হয় প্রত্যেক চন্দ্র মাসের বা আরবি মাসের ১৩-১৪ এবং ১৫ তারিখ এর দিনগুলো অত্যন্ত শুভ্র এবং পরিষ্কার হয় আর বীব মানে শুভ্র সাদা এবং পরিষ্কার আর আইয়্যাম মানে দিনসমূহ। যার একসাথে অর্থ হচ্ছে সাদা শুভ্র এবং পরিষ্কার দিন সমূহ। আর জানা রয়েছে যে প্রত্যেক চান্দ্র মাসের ১৩-১৪ এবং ১৫ তারিখ অত্যন্ত পরিষ্কার ও স্বচ্ছ হয়ে থাকে। 
আইয়্যামে-বীযে-রোযা-রাখার-ফজিলত
আর এই নির্দিষ্ট তিন দিন ১৩-১৪ এবং ১৫ তারিখে রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলত সম্পন্ন। আর এটি ও হচ্ছে নফল ইবাদত বা নফল রোজা। আর এটি আমাদের মুসলিম জাতির তথা পুরো মানবজাতির আদি পিতা বা প্রথম মানব এবং প্রথম পিতা এবং প্রথম নবী হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর সুন্নত স্বরূপ এই রোজাগুলোকে পালন করা হয়। আর এই রোজাগুলো রাখার ফজিলত হচ্ছে পুরো এক বছর রোজা রাখলে যে সওয়াব বা পূণ্য হবে ততটুকু সওয়াব বা নেকী আমলনামায় লেখা হবে। 

শাওয়ালের ৬ রোযা রাখার ফজিলত

নফল রোজার ফজিলত বিষয়টির সাথে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখার বিষয়টিও ওতপ্রুত ভাবে জড়িত। কারণ শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত এবং নফল। রমজান মাসে ৩০ টি রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসের যেকোনো দিন ছয়টি রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলত ও তাৎপর্যের কাজ। আল্লাহ তায়ালার কথা রয়েছে যে যে ব্যক্তি যেকোনো ভালো কাজ খুব আগ্রহের সাথে ও রবের সন্তুষ্টির আশায় করবে তার সেই নেক তাকে ১০ গুন বাড়িয়ে দেওয়া হবে। 

শাওয়াল মাসের রোজা রাখা এই এই নেকীর কাজটা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হলে অবশ্যই ১০ গুন সে সব পাবে। সাথে সাথে শাওয়াল মাসের রোজা রাখার যে ফজিলতের কথা হাদিসে এসেছে তা হচ্ছে যে রমজানের একটি মাস রোজা রাখার পর ঈদুল ফিতরের পরের দিন থেকে পরস্পর ছয়টি রোজা রাখলে পুরো এক বছরের সমান নেকী হয়ে যাবে। ঈদের পরের দিন থেকেই শাওয়াল মাসে রোজা রাখার বিষয়টি অত্যন্ত উত্তম একটি কাজ। 

যেহেতু হাদিসে এটাও রয়েছে যে যেকোনো এবাদত এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করলে ওই ইবাদতকে আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয় ও উত্তম হয়ে থাকে। তবে যে কোনো সময় শাওয়াল মাসে রাখলেই আদায় হয়ে যাবে এবং নেকিও পাওয়া যাবে পুরোপুরি ইনশাআল্লাহ। তবে নেকির বেশি আশা থাকলে সিরিয়াল বা ধারাবাহিকতা মেইনটেন্ট করাটা জরুরী।

আশুরার রোযার ফজিলত

আশুরার রোজা রাখার ফজিলত বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশুরার রোজা বলতে মহররম মাসের ১০ তারিখ রোজা রাখা। মহরম মাসের ১০ তারিখ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রাখতেন। আর এই দিন রোজা রাখার ব্যাপারে যে বিষয়টি উঠে এসেছে আল্লাহ রাসূলের কাছ থেকে সেটি হচ্ছে মদিনার আশেপাশে খবর নিয়ে দেখা গেল যে এই দিনে ইহুদিরা রোজা রাখতেছে। 

তখন তাদের অভিজ্ঞ এবং ন্যায় ইনসাফগার ব্যক্তিদের কাছ থেকে খবর নিয়ে যেটা দেখা গেল সেটা হচ্ছে যে এই দিনে হযরত মূসা আলাইহিস সালাম রোজা রাখতেন। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে ইহুদীর মাহের ব্যক্তিগণ বলেন যে হযরতে মূসা আলাইহিস সালাম এই দিন ফেরাউনের কবর থেকে নাজাত পেয়েছিলেন। আর এর শুকরিয়া স্বরূপ হযরতে মূসা আলাইহিস সালাম রোজা রাখতেন। 

তখন আল্লার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহুদিদের বিরোধিতা করে মহরমের ১০ তারিখের সাথে আরো এক তারিখ বাড়িয়ে হয় নবম অথবা ১১ তম দিন তিনি রোজা রাখলেন আর সাহাবীদেরকেও রাখতে বললেন। আর বললেন এই দিন আমার ভাই মূসা আলাইহিস সালাম যেহেতু রোজা রেখেছেন আমরাও তার অনুসরণে রোজা রাখব।

জিলহজ্জ মাসে ও শা'বান মাসে রোযা রাখার ফজিলত

জিলহজ মাসে রোজা রাখার বিষয়টি নফল ইবাদতের সাথে সংশ্লিষ্ট। জিলহজ মাসের ইবাদতের ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি বলেছেন জিলহজ্ব মাসের প্রথম ১০ দিন আরো যত দিন আছে সেগুলোর থেকে আলাদা এবং অত্যন্ত মর্যাদা সম্পূর্ণ দিন। আরো বলেছেন যে এই দশ দিনে যে আমলগুলো করা হয় সেগুলো অত্যন্ত এবং অধিকতর আল্লাহ তাআলার কাছে চয়েসফুল বাপ পছন্দনীয়। নবীজির সাথীরা বা সাহাবীরা তাকে জিজ্ঞেস করলে যে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার চেয়েও বেশি? তখন আল্লাহ নবী বললেন জি হ্যাঁ। 

তবে তার কথা আলাদা বা ভিন্ন যে স্বয়ং তার জান মাল নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে গেছে এবং সে ফিরে আসেনি। আর শাবান মাসে রোজা রাখার ব্যাপারটিও নফল ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। রমজান মাসের আগে শাবান মাসে রোজা রাখাও খুবই ফজিলত এর একটি কাজ। আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসের অধিকাংশ দিনগুলিতে তিনি রোজা রাখতেন গুটিকয়েক দিন ছাড়া। তবে তিনি সাবান এবং রমজানকে মিলিয়ে দিতেন না। 

শাবানের কয়েকটা দিন বাদ রাখতেন বাকি প্রায় সব দিনগুলোতেই রোজা রাখতেন। আর বলতেন তিনি যে সামনে যেহেতু রমজান আসছে সেহেতু ফরজ রোজা আদায়ের আমি প্র্যাকটিস করছি। আরও তিনি বলতেন যে এ মাসটি হচ্ছে সেই মাস যেটিতে আল্লাহর কাছে বান্দার আমল সাবমিট করা হয়। আর আমার পছন্দ রোজা রাখা অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর কাছে পেশ হোক।

নফল রোযা রাখার নিয়ত

নফল রোজা রাখার নিয়তের ব্যাপারে ইসলামের পন্ডিতগণ যে বিষয়গুলো বলেন তা এখানে আলোচনা করছি। নফল রোজা রাখার নিয়ত রোজা রাখার আগেই করতে হবে এমনটি নয়। কেউ যদি ইচ্ছে করে যে সে আজকে সকালে কিছু খাবে না রোজা রেখে দিবে তাহলে দিনের বেলায় নিয়ত করলেই হয়ে গেল। এক্ষেত্রে রোজা রাখার আগে যে তাকে নিয়ত করতে হবে যে আজকে দিনের বেলায় সে রোজা রাখবে নফল রোজার ক্ষেত্রে এমনটি না করলেও চলবে রোজা হয়ে যাবে সমস্যা হবে না। 
নফল-রোযা-রাখার-নিয়ত
তবে ফরজ রোজার ক্ষেত্রে অর্থাৎ রমজান মাসের রোজার ক্ষেত্রে এমনটি করলে চলবে না। রমজান মাসের রোজার নিয়ত আগেই করতে হবে। অর্থাৎ দিনের বেলা বা মাসের শুরুতে অথবা যেদিন সে রোজা রাখবে সেদিন ভোর রাতে উঠে। অথবা সে রাত্রের শুরুতে শোয়ার সময় যে আজকে রোজা রাখবে এভাবে নিয়ত করতে হয় ফরজ রোজার ক্ষেত্রে। তবে নফল রোজার ক্ষেত্রে দিনের যে কোন সময় নিয়ত করলেই রোজা হয়ে যাবে। 

কিন্তু দিনের বেলায় রোজা নষ্টকারী বা ভঙ্গকারী কোন জিনিস খাওয়া যাবেনা বা এহেন কোন কাজ করা যাবে না যেটা করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। তবে দিনের বেলায় রোজা নিয়তটা করলে যখন থেকে সে নিয়ত করবে তারপর থেকে সোয়াব হাসিল হবে। রোজা রাখার নিয়ত মুখে বলার কোন শব্দ নেই অন্তরে ইচ্ছে করলে বা মনে মনে কল্পনা করলেই হয়ে যায় যে আজকে আমি রোজা রাখব। তবে নিয়ত করা লাগবে যেহেতু আল্লাহ রাসুলের হাদিস রয়েছে যে যেকোনো আমল নিয়তের ওপরেই নির্ভর করে।

নফল রোজা রাখার নিয়ম

নফল রোজা রাখার নিয়ম এর বিষয়গুলো আমাদের জেনে রাখা দরকার। কারণ শুধু রোজা করলেই নয় রোজা কিভাবে রাখতে হবে এবং কোন পদ্ধতিতে রাখলে রোজাটা আল্লাহর কাছে কবুল হবে অবশ্যই জানা লাগবে। পাশাপাশি আপনি যে রোজা করবেন তাতে কি সওয়াব রয়েছে এবং কি ফজিলত এর এ বিষয়গুলো জানলেও অনেক আগ্রহের সাথে রোজা রাখাটা বাস্তবায়ন হয়। নফল রোজা যেভাবে রাখতে হবে সেটি হচ্ছে যে এটি রাখার আলাদা কোন পদ্ধতি নাই। 

আরো পড়ুনঃ হজ্জের নিয়ম সম্পর্কে যত বিষয় আছে বিস্তারিত জানুন

ফরজ রোজা অর্থাৎ রমজান মাসে যে পদ্ধতিতে রাখা হয় সেভাবেই রাখতে হবে। আরো স্পষ্ট করে যেটা বলব সেটা হচ্ছে যে আপনি ফজরের আগে ভোররাতে উঠে বরকত নেওয়ার উদ্দেশ্যে হালকা কিছু খেয়ে হয় সেটা খেজুর বা দুধ কলা বা মাছ মাংস অথবা হালকা কিছু ভাত খেয়ে নিলেন। এরপরে সারাদিন বিভিন্ন পাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকলেন এবং এমন কোন কাজ করলেন না যেটা করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। এভাবে সারাদিন রোজা রেখে মাগরিবের সময় আপনি রোজা ভঙ্গ করলেন বা ইফতার করলেন। এইতো এভাবেই।

লেখকের শেষ মন্তব্য

নফল রোজার ফজিলত বিষয়টি সহ আরো সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে লিখিত ব্লগটিতে আলোচনা করেছি। সম্মানিত পাঠক, আপনার কাছে যদি আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে সুস্পষ্ট হয়ে থাকে নফল রোজা রাখার ফজিলত সংক্রান্ত বিষয়টি তাহলে আশা করছি আপনি এ ব্যাপারে অনেক কিছু বুঝতে পেরেছেন। যদি আপনি আমাদের এই আর্টিকেলটি বুঝে থাকেন আশা করছি ভবিষ্যতে আনায়ন করা আর্টিকেল গুলোর সাথেই থাকবেন। এবং আমাদের নিত্যনতুন ব্লগগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনার জ্ঞানকে সুপ্রসন্ন ও সমৃদ্ধ করবেন ইনশাআল্লাহ্‌।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url