১০টি কোরআন হাদিসের বাণী স্পষ্টরুপে জানুন
কোরবানি সম্পর্কে আয়াত ও হাদিস কোরআন হাদিসের বাণী সম্পর্কে জানতে এই লিংকে ক্লিক করে এখানে এসেছেন তাই না? কোরআন হাদিসের বিভিন্ন ধরনের বাণী রয়েছে তবে এখানে উল্লেখযোগ্য ১০ বা তার অধিক বাণী নিয়ে লেখার চেষ্টা করব। এতে মন দিন লাভ হবে।
আর আপনি যদি উক্ত প্রাণীগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকেন তাহলে কোরআন এবং হাদিসের বাণীগুলোর কি যে মহিমা রয়েছে সেটি আপনি অনুধাবন করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। তো চলুন আর দেরি না করে নিম্নে বিষয়টি নিয়ে আরম্ভ করি!
পেজ সূচীপত্রঃ ১০টি কোরআন হাদিসের বাণী সহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো স্পষ্টরুপে জানুন১০টি কোরআন হাদিসের বাণী
১০টি কোরআন হাদিসের বাণী শিরোনামটি এখানে প্রথমত আলোচনা করছি। সর্ব প্রথমে আমাদের জানতে হবে যে কোরআন হচ্ছে ইসলাম ধর্মের ধর্মীয় গ্রন্থ আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা'আলার বাণী বা কথা। আর হাদিস হচ্ছে বিশ্বনবী মুহাম্মদ (স) এর মুখনিঃসৃত বাণী বা কথা। আর আমরা এখানে পবিত্র মহা গ্রন্থ আল কোরআন এবং হাদিসের বাণী থেকে দশটি বাণী নিম্নে পেশ করার প্রয়াস করছি (আল্লাহ যদি ক্ষমতা দান করেন)।
এখানে পবিত্র কোরআন কারীম থেকে পাঁচটি বাণী নিচে পেশ করছি যে বাণী গুলো
অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ।
এক নম্বরে, কোরআনের বাণীতে রয়েছে যে, মানুষ পাপ করলে নিরাশ হওয়া যাবেনা
আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে হবে।তাহলে আল্লাহ তাআলা মাফ করবেন এটি আল্লাহ
তাআলার ওয়াদা। তবে পাপ করে বা অন্যায় অপরাধ করে বসে থাকা যাবে না, আল্লাহর কাছে
মাফ চাইতে হবে। এক জায়গায় রয়েছে যে, যদি মানুষ জাতি পাপ না করে
ছোট হয়ে স্রষ্টার কাছে মাফ না চাইত, তাহলে এই মানুষ জাতিকে ধ্বংস করে দিয়ে আর
একটা জাতিকে সৃষ্টি করা হতো। কারণ পাপ ক্ষমা চেয়ে ছোট হওয়ার মাঝে বিনয়
প্রকাশ পায়। আর এটাই প্রভু চান!
দ্বিতীয়ত, কোরআনের বাণীতে রয়েছে যে, একজন মানুষ আরেকজন মানুষ এর কাছে ভুল করলে এবং ভুলকারী ব্যক্তি যার সাথে অপরাধ করলো তার কাছে মাফ চাইলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া একটি নেক বা মহৎ গুণ। এই নেক গুণটা যারা অর্জন করতে পারবে, মহান আল্লাহর ঘোষণা রয়েছে যে সে ব্যক্তি নেককার ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি নেকীওয়ালা হবে সে নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে এক মহা প্রতিদান পাওয়ার আশা করবে। আর এক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা তার ওয়াদা অনুসারে অবশ্যই তাকে পুরস্কৃত করবেন।
তৃতীয়ত, কোরআনের বাণীতে রয়েছে যে মাতা পিতার সাথে সুন্দর আচরণ করতে হবে। তাদের সাথে এমন ভাবে চলতে হবে যে আপনার আচরণে যেন তাদের মুখ থেকে উহ শব্দ পর্যন্ত বের না হয়ে আসে। অথবা আপনার বাবা-মা কোন কাজ করার জন্য নির্দেশ দিতে গিয়ে একটু বেশি কথা বলায় আপনি ওহ্ শব্দ বলছেন তাও করা যাবে না। অর্থাৎ আপনার মুখ থেকে ওহ্ শব্দ বের হওয়া তাদের কোনো কারণে অথবা তাদের মুখ থেকে ওহ্ শব্দ বের হওয়া আপনারা কোনো কারনে কোনোটিই করা যাবে না।
চতুর্থত, কুরআনের বাণীতে রয়েছে যে, মানুষ এবং জিন জাতিকে মুসলিমদের যে নির্দিষ্ট দৈনিক পাঁচবার পালনীয় প্রার্থনা সালাত এর মাধ্যমে এবং বিপদে সবর এর মাধ্যমে মহান রবের দরবারে সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে। এটি হচ্ছে ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের প্রতি একটি কর্তব্য এবং করনীয় বার্তা। আর এই বার্তা যারা মনে প্রাণে ধারণ করতে পারবে তাদের নামাজ এবং ধৈর্যের মাধ্যমে বাস্তব জীবনে কৃতকার্য হতে পারবে, তাই মোটেই অবহেলা করা যাবে না।
আরো পড়ুনঃ কুরআন তিলাওয়াতের আদব কয়টি তা সুষ্টপষ্ট হয়ে যান
পঞ্চমত, কোরআনের আরো একটি বাণীতে রয়েছে যে মানব এবং দানবকে অর্থাৎ মানুষ এবং জিন জাতিকে সদা সর্বদা আল্লার কথা তাদের অন্তরের ভিতরে রাখতে হবে তথা স্মরণে রাখতে। আল্লাহর এই স্মরণ যদি কোন ব্যক্তির ভিতরে থাকে তাহলে তার দ্বারা কোন অন্যায় বা খারাপ কাজ সংঘটিত হবে না, এবং সে সর্বদা ভালো কাজে লিপ্ত থাকবে এবং তাকে একদিন মরতে হবে এটাও সে স্মরণে রাখবে। আর মরনের কথা যার মনে থাকবে, তার দ্বারা কোনো অশ্লীল কাজ সংঘটিত হতে পারে না।
প্রিয় পাঠক আপনার সামনে এখন হাদিসের ৫টি বাণী লেখার চেষ্টা করছি, অবশ্যই
হাদিসের এই বাণী গুলো মনোযোগ সহকারে করার চেষ্টা করবেন অনেক উপকৃত হবেন।
প্রথমত, হাদিসের বাণীতে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি নিজে কোরানের বাণী শিক্ষা গ্রহণ করে, আর একজন মানুষকে শিক্ষা দিবে, সে ব্যক্তি গোটা পৃথিবীর মাঝে শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তি হিসেবে পরিগণিত হবে। এই দীনী বিদ্যা অর্জন করা অর্থাৎ ইসলাম ধর্মের সুস্পষ্ট গ্রন্থ কোরআনের বাণী শিক্ষা অর্জন করা এটা মহা পুণ্যের কাজ। এক হাদীসে আছে কোরআনের একটি বর্ণের বিনিময়ে দশটি পুণ্য লিখা হয়। শুধু তাই নয়, কোরআনের পাঠকের তার পঠন-পাঠন এর মাধ্যমে বিভিন্ন বিপদ, চিন্তাভাবনা সমস্যা ইত্যাদি দূর হয়। তাই বিষয়টি আমলে নেওয়া উচিত।
দ্বিতীয়ত, হাদিসের বাণীতে রয়েছে যে একজন ইসলামের অনুসারীর ঈমান বা বিশ্বাসের সর্বোচ্চ স্তর বা শাখা হচ্ছে "আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবুদ নেই" এর যে আরবি (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এটি বলা। আর ঈমানের ৬০টি শাখা এবং উপশাখা রয়েছে, যার নিম্নতম হচ্ছে, রাস্তা থেকে কোন কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা। এক্ষেত্রে ঈমানের কালিমা বলা এবং রাস্তা থেকে কোন কষ্টের জিনিস হটিয়ে ফেলা দুইটাই অনেক সওয়াবের কাজ, তাই এসব মেনে চলা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
তৃতীয়ত, হাদিসের বাণীতে আরো রয়েছে যে, একজন ইসলাম ধর্মের বিশ্বাসী হওয়ার জন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে, একজন মুসলিম মানুষ আর একজন মুসলিম মানুষকে কষ্ট দেবে না তার হাত ও মুখ দ্বারা আর এটি হচ্ছে একটি মহান বৈশিষ্ট্য। কারণ যদি কেউ তার মুখ হাত দ্বারা আর একজনকে কষ্ট না দেয়, তাহলে পরস্পরের মাঝে কোন ঝগড়া, বিবাদ, ফ্যাসাদ, দুশমনি ও শত্রুতা কিছুই হবে না। কাজেই এ বিষয়টি মেনে চলার দ্বারা সমাজ শান্তিময় থাকবে, আর এটিই কাম্য।
চতুর্থত, হাদিসের আরো এক বাণীতে রয়েছে যে, যদি কোথাও কোন অন্যায় দেখা যায়, তাহলে প্রথমতঃ হাত বা শক্তি প্রয়োগ করে দ্বিতীয়তঃ মুখ দিয়ে প্রতিবাদ করে তৃতীয়তঃ অন্তরে ঘৃণা করে বিষয়টি সমাধান করতে হবে। আর এই গুরুত্বপূর্ণ নবীজির হাদিস বা বাণীটি গ্রহণ কিংবা বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে নামাজে অন্যায় দূর হবে এবং দেশ বা রাষ্ট্রও শৃঙ্খলা পূর্ণ হবে। আর দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী ও সমাজের একজন সমাজপতি এই বিষয়টাই চাইবে যে, দেশ ও সমাজ সমস্যা ও বিশৃঙ্খলমুক্ত থাকুক।
পঞ্চমত, হাদিসের আরো একটি বাণীতে রয়েছে যে দুস্থ মানুষকে দান করার মাধ্যমে সহযোগিতা করতে হবে এবং এই দানের দ্বারা মানুষের বিপদ আপদ দূর হবে। শুধু তাই নয়, দান হচ্ছে অনেক শক্তিশালী এক জিনিস, যেটি মহা নবীজির সাহাবীরা এবং মহানবী নিজেও অত্যাধিক পরিমাণে দান করতেন তাই। আর মহিলাদেরকেও একটি খেজুরের আঁটির অর্ধেক সমপরিমাণ হলেও দান করার কথা বলেছেন। কারণ জাহান্নামে অধিকাংশই মেরাজের রাত্রিতে তিনি (নবী) নারী দেখেছেন, আর এটি থেকে বাঁচতে দানের ব্যাপারটি বলেছেন।
কোরআন হাদিসের বাণী এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১০ টি বাণী উপরে লিখেছি। সুপ্রিয়
পাঠক, আপনি যদি উক্ত কোরআন হাদিসের বাণীগুলো মনোযোগ সহকারে স্টাডি করে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই আমলে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। সুতরাং এইগুলো মান্য করার দ্বারা
আপনি দুনিয়া এবং আখেরাতে অনেক লাভবান হবেন, পাশাপাশি আপনার মন ফ্রেশ থাকবে আর
মন ফ্রেশ থাকলে শরীর ভালো থাকবে ইনশাআল্লাহ!
ছোট ছোট হাদিসের বাণী পড়ুন
ছোট ছোট হাদিসের বাণী বিষয়টি খুবই আমলের ব্যাপার। সম্মানিত সুধী, হাদিসের বাণী এর মাঝে অসংখ্য বাণী রয়েছে যে হাদীস গুলো বড় ও রয়েছে আবার ছোট ছোট বাণীও রয়েছে। তো আপনি যেটাই পড়বেন আমল করার জন্য পড়ার চেষ্টা করবেন, তাহলে বাস্তব জীবনে বিষয়টি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে ভূমিকা রাখবে। তো চলুন হাদিসের ছোট ছোট বাণী গুলো পড়তে চেষ্টা করি।
সব সময় একজন আরেকজনকে ভালবাসতে হবে এ বিষয়টি হাদিসে এভাবে রয়েছে যে, কেউ কাউকে
দেখলে ইসলামের যে সম্ভাষণ সালাম এটি দিলে পরস্পরের মাঝে ভালোবাসা বৃদ্ধি
পায়। তাই বেশি বেশি একজন আরেকজনকে সালাম প্রদান করা উচিত। তাহলে ভালোবাসা
অর্জিত হবে এবং মায়া ছড়াবে।
বিনয় নম্রতা প্রদর্শন করতে হবে, কারণ মহামানব মহানবীর হাদিসে আছে যে, যে ব্যক্তি বিনয়ী হয়ে থাকে আরেকজনের প্রতি, এ বিষয়টির মাধ্যমে জান্নাতে আল্লাহর রাসূলের সাথে থাকার অঙ্গিকার বা ঘোষণা
রয়েছে। তাই আমাদের প্রত্যেককেই পরস্পরের প্রতি বিনয় নম্রতা দেখানো উচিত।
আল্লাহর ভয় ভিতরে লালন করা উচিত, কারণ যার ভিতরে আল্লাহর ভয় থাকবে, তার
দ্বারা দুনিয়ার কাঁটাযুক্ত পথে চললে যেমন শরীরের কাপড়কে সতর্কতার সাথে
সেঁটে চলতে হয়, তেমনি ভাবে যদি আল্লাহর ভয় অন্তরের ভিতরে
থাকে, তাহলে তার দ্বারা আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজগুলো সংঘঠন হবেনা, আর নির্দেশিত কাজ
গুলো ফলিত হবে। তবেই সফল হওয়ার পথ ধরে আপনি এগিয়ে যেতে পারবেন।
হাদিসের বাণী বাংলা কি হতে পারে
হাদিসের বাণী বাংলা বিষয়টি এখন বলার পালা। তো চলুন বলি। বাংলা হাদিস আপনাকে বেশি বেশি পড়তে হবে। আপনি যদি একজন সত্যিকারের মুসলিম হয়ে থাকেন আর যেহেতু আপনি আরবি জানছেন না সেহেতু বাংলা ভাষায় আপনাকে নবীজির বাণীগুলো পড়তে হবে। তাহলে আপনি ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবেন ও বুঝতে পারবেন। আর একজন মুসলিমের জ্ঞানী থাকতে হবে, জ্ঞান চর্চা করতে হবে এবং বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করতে হবে।
আপনার জন্য একটি বাংলা হাদিস হচ্ছে যে, হাশরের মাঠে একজন মানুষকে পাঁচটি জিনিসের
হিসাব দিতে হবে। একটি হচ্ছে বয়স সম্পর্কে, দ্বিতীয়টি যৌবন সম্পর্কে, তৃতীয়টি উপার্জনের উৎস সম্পর্কে, চতুর্থটি ব্যয়ের পথ সম্পর্কে, এবং পঞ্চমটি ইসলামী
জ্ঞান অনুযায়ী আপনি কতটুকু আমল করেছেন এ সম্পর্কে। পাঁচটি বিষয় এর হিসাব
যতক্ষণ আল্লার সামনে না দিতে পারবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এক পা নড়তে পারবেন
না। কাজেই হাশরের মাঠের হিসাবের চিন্তা করে সামনের পথ চলা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী।
কুরআন আল্লাহর বাণী কি না?
কুরআন আল্লাহর বাণী কিনা বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু লোকের সন্দেহ রয়েছে। কোরআন আল্লাহর বাণী হয় কিনা ব্যাপারটি যারা সন্দেহ করে তাদের ঈমানের ব্যাপারটি প্রশ্নবিদ্ধ। যারা কাফির তারা তো কোরআন হাদিস এমনকি ইসলামটাকেই মানে না, বিশ্বাস করে না, তাইতো তারা অস্বীকারকারী বা কাফের।
কিন্তু একজন মুসলিম হয়ে তার ভিতরে যদি কোরআন আল্লাহর বাণী বিষয়টি নিয়ে সন্দেহের জাগরণ হয়, তাহলে বুঝতে হবে শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিচ্ছে। কারণ, যারা ইসলাম নিয়ে চর্চা করবে না, কুরআন হাদিসের সাথে থাকবে না, তাদেরকে খুব সহজেই শয়তান গ্রাস করতে পারে এবং কাবু করতে পারে। তার এক্ষেত্রে তাদের কলব বা অন্তরের ভিতরে ধোকা দেওয়া কিংবা সন্দেহের বিজ ঢুকিয়ে দেওয়া খুব সহজ হয়।
আর আল কুরআনের রয়েছে যে, প্রত্যেক মানুষের সাথে একজন শয়তানকে সঙ্গী হিসেবে নির্ধারণ করা রয়েছে। তাহলে বিষয়টি বুঝা সহজ হয়ে গেল যে, একজন শয়তান তো তার সাথে রয়েছেই, আবার কোরআন থেকে দূরে থাকার কারণে আরো সহজ হয় শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দেওয়ার বিষয়টি।১০টি কোরআন হাদিসের বাণী শিরোনাম শীর্ষক আলোচনাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রিয় পাঠক, সত্যিকার অর্থে আপনি যদি একজন মুসলিম হতে চান, তাহলে কোরআন যে আল্লাহর বাণী শতভাগ বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে, তাহলেই আপনি খাঁটি মুসলিম হতে পারবেন। সাথে সাথে কোরআন এবং হাদিসের মধ্যে যতগুলো বিষয় রয়েছে সেগুলো মানতে হবে, যেগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে সেগুলো থেকে আপনি বিরত থাকবেন, তাহলেই ১০০% মোমীন হতে পারবেন নচেৎ নয়।
কুরআনের শ্রেষ্ঠ বাণীগুলো কী?
কুরআনের শ্রেষ্ঠ বাণীগুলো কী এগুলো নিয়ে আলোচনা পেশ করছি। কুরআন কারীম আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার পক্ষ থেকে মহানবীর প্রতি নাযিলকৃত এক ঐশী বাণী। কোরআনের ভিতরে যা কিছু রয়েছে সবকিছুই হচ্ছে সন্দেহ মুক্ত। আর কুরআনের প্রত্যেকটি বাণী দুনিয়ার অন্যান্য মানুষের লেখা গ্রন্থের তুলনায় অনেক ঊর্ধ্বে এবং শ্রেষ্ঠতম বাণী। তো চলুন পড়ার চেষ্টা করি।
কুরআনের শ্রেষ্ট বাণীগুলোর মাঝে একটি হচ্ছে পড়তে হবে, কারণ এই পড়ার মাধ্যমে জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাষিত হয়ে নিজের ভিতরকার অন্ধকার দূর করে একজন মানুষের মত মানুষ হওয়া যায়। তাই পড়া থেকে বঞ্চিত হবেন না। আর পড়তে হবে আল্লাহর নামে, তাহলে পড়া-লেখায় বরকত হবে এবং আমার আপনার সব কিছু কল্যাণময় ও পূণ্যময় হবে অর্থাৎ বিসমিল্লাহ বলে যে কোনো ভালো কাজ করলে।
কুরআনের শ্রেষ্ঠ বাণীগুলোর আরেকটি হচ্ছে, যিনা বা ব্যভিচার করা যাবে না। কারন যেনা অত্যন্ত গর্হিত ও নিকৃষ্ট কর্ম, যার মাধ্যমে মরণঘাতী ব্যাধি এইডস ছড়ায় এবং এটি হচ্ছে এক ধরণের ভাইরাস জনিত রোগ। আর এই যেনা বা ব্যাভিচারের মাধ্যমে পৃথিবী কলুষিত হয় ও যেনাকারী ও যেনাকারীনীর বিভিন্ন শারীরিক ও মানষিক দূরারোগ্যতা সৃষ্টি হয়। তাই সাবধান হওয়া মাস্ট জরুরী।
কুরআনের বাণীগুলোর মাঝে আরো একটি শ্রেষ্ঠ বাণী হচ্ছে যে, পর্দা করতে হবে। কারণ পর্দার মাধ্যমে ইহজগত ও পরজগত উভয় জাহানে সফলকাম হওয়া যায়। দুনিয়াতে পর্দা করার দ্বারা বিয়ের ভালো পাত্র পাওয়া যায় এবং শরীরের ত্বক সুন্দর ও সুশ্রী থাকে, আর বিশেষ করে আল্লাহর হুকুম বা নির্দেশ ফলিত ও বাস্তবায়িত হয়। আর পরকালে চির সুখের জায়গা জান্নাত লাভ সহজ হয়। পর্দা একজন মহিলার গলার স্বর ও পায়ে হাঁটা-চলার ভিতরেও রয়েছে।
আর মহিলার মতো পুরুষকেও মহান মালিক পর্দার কথা বলেছেন, যেমন পুরুষের চোখকে সদা নিচে নামিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। একজন মানুষের সর্বপ্রথম চোখ দিয়ে দেখে তারপরে কল্পনায় নিয়ে পাপ শুরু হয়। তাই যেকোনো মানুষ তার চোক্ষুকে হিফাযত করতে পারা অনেকটাই সে বিভিন্ন পাপের কাজ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে নিতে পারার জন্য ক্ষমতাবান হয়ে যাবে।
হাদিসের বাণী চিরন্তনী দেখুন
হাদিসের বাণী চিরন্তনী নিয়ে এখন লিখছি। তো বিষয়টি হলো যে, হাদিসের বাণী হচ্ছে আল্লাহর রাসূলের বাণী। আর আল্লাহর রাসূল (স) আল্লাহর পক্ষ থেকে ছাড়া নিজে কিছু বানিয়ে বলতেন না, তার মানে রাসূলের বাণী প্রকারন্তরে আল্লাহর বাণী। আর আল্লাহর বাণী অবশ্যই চিরন্তনী বা স্থায়ী, যার বাণীর ভিতর বিন্দু মাত্রই সন্দেহের অবকাশ পর্যন্ত নেই।
শুধু পার্থক্য সরাসরি আল্লাহর বাণী পড়লে নেকী বা পূণ্য রয়েছে, আর রাসূলের বাণীর শব্দ ও অক্ষরগুলোতে এমনটি পূণ্য নেই। হাদিসের বাণী হচ্ছে আল্লাহর বাণীর ব্যাখ্যা স্বরুপ। আর সেটি অধ্যয়ণ করলে কিংবা গবেষণা করে নিজের পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনীতি, রাষ্ট্রীয় জীবনে বাস্তবায়ন করলে পূণ্য হবে এবং এবং শান্তিময় জীবন ও পরিচালনা করতে পারবেন। তাই বিষয় ভেবে ও বুঝে আমল করা উচিত।
হাদিস সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?
হাদিস সম্পর্কে ইসলাম কি বলে ব্যাপারটি নিয়ে এখন বলার চেষ্টা করছি। হাদিস হচ্ছে ইসলামের দ্বিতীয় প্রধান গ্রন্থ বা বাণী। হাদিস হচ্ছে কোরআনের ব্যাখ্যা স্বরূপ। আপনি যদি কোরআন পড়েন তাহলে দেখতে পাবেন বিভিন্ন জায়গা এমন রয়েছে যেখানে সংক্ষেপ আলোচনা আছে, সেটি হাদিস দ্বারা ব্যাখ্যা না নিলে বুঝতে পারবেন না। এজন্য হাদিস পড়তেই হবে এবং বুঝতে হবে, সাথে সাথে মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে।
কোরআনের ভিতরে কুরআন বিষয়টি হাদীস শব্দের দ্বারা বলা হয়েছে ১৪ টি জায়গায়। অর্থাৎ ১৪ টি জায়গা এমন রয়েছে যেখানে হাদিস শব্দটি কুরআনের অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অনেকেই এমন রয়েছে যে শুধু তারা কোরআনকে মানে কিন্তু হাদিস মানে না তাদেরকে আহলে কোরআন বলা হয়।
এ আহলে কুরআন এর নীতি হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে শুধু কোরআন এসেছে, হাদিস তো আসে নাই। এইজন্য শুধু তারা কোরআনকে মানবে হাদিসকে মানবে না। অথচ কোরআনের ভিতরেই অসংখ্য আয়াত রয়েছে যেগুলোতে হাদিস মানার কথা বলা হয়েছে। তাহলে কি এটি মূর্খতা নয় যে শুধু কোরআন মানবে হাদিস মানবে না?
হাদিসের তিনটি উপাদান কি কি?
হাদিসের তিনটি উপাদান কি কি ব্যাপারটি নিয়ে এখন লিখার চেষ্টা করছি। হাদিস হচ্ছে আল্লাহ রাসূলের বাণী যেটি আল্লাহর পক্ষ থেকে আদেশ না পেয়ে তিনি বলেন নাই। কোরআনের ভিতরে রয়েছে যে, আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা আছে, তার নাবী যদি বাণীয়ে কোন কথা তার সাহাবাদের সামনে বলতো তাহলে আল্লাহ তার গলা কেটে দিতেন বা চেপে ধরতেন এ ধরনের কথা।
তাই হাদিস যে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আল্লাহর রাসূলের প্রতি পরোক্ষ বাণী এতে সন্দেহ করা মোটেও একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য হতে পারেনা। হাদিসের তিনটি উপাদান একটি হচ্ছে হাদিসের সনদ বা রাবিগণ বা বর্ণনাকারীগণ, আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে মতন বা হাদীসের মূল বক্তব্য, আর তৃতীয়টি হচ্ছে হাদিসের মানটা কি সহীহ বা বিশুদ্ধ নাকি যয়ীফ কিংবা দুর্বল ইত্যাদি।
হাদিস ও কুরআনের মধ্যে পার্থক্য কি?
হাদিস ও কুরআনের মধ্যে পার্থক্য কি হতে পারে বিষয়টি নিয়ে লিখার প্রয়াস চালাচ্ছি। কুরআন ও হাদিসের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য রয়েছে, তবে এখানে উল্লেখযোগ্য যেগুলো না বললেই নয় সেগুলো আপনার সামনে লিখছি। সুপ্রিয় ও সম্মানিত পাঠক, নিম্নে ছক বা টেবিল আকারে হাদিসও কোরআনের পার্থক্যটি তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
হাদিস | কুরআন |
---|---|
হাদিস মানে শাব্দিক পার্থক্য কথা বা বাণী | আর কোরআন মানে পঠিত বা মিলিত |
হাদিসের পারিভাষিক পার্থক্য হাদিস মানে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা কর্ম ও কাজ এবং মৌন সম্মতি | আর কোরআনের পারিভাষিক মানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ফেরেশতা জিব্রাইল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরে ২৩ বছরের বিভিন্ন সময়ে যখন যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু অবতীর্ণ করেছেন আর এটি হচ্ছে কোরআন |
হাদিসের সনদের দিক থেকে পার্থক্য হাদিসের সনদ মুতাওয়াতির বা ধারাবাহিকভাবে বর্ণিত যেটি খুব শক্তিশালী হাদিস বা গায়ের মুতাওয়াতির কিংবা মুতাওয়াতির নয় দুটাই হতে পার | কিন্তু কোরআন মাজীদ শুধুমাত্র মুতাওয়াতির হাদিসসমূহ দ্বারা বর্ণিত। |
হাদিসের ৫টি গুরুত্ব কি কি?
হাদিসের পাঁচটি গুরুত্ব কি কি এ বিষয়টি নিম্নে লেখা চেষ্টা করছি। ১. হাদিস হচ্ছে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখনিসৃত বাণী, ২. হাদিস হচ্ছে আল কোরআনুল কারীমের ব্যাখ্যা কারী গ্রন্থ, ৩. হাদিস হচ্ছে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে (যেটাকে সনদ বলা হয়) আসা নিঃসন্দেহে (আল্লাহর) নবীর বাণী,
আরো পড়ুনঃ দাঁতের রুট ক্যানেল কেন করা হয় এবং এটার চিকিৎসা কী?
৪. এই হাদিসের গ্রন্থ যেটি আল কুরআনের পরে সারা বিশ্বের মানুষদের কাছে সর্বজন স্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য হিসেবে রয়েছে সেটি হচ্ছে সহীহুল বোখারী, ৫. হাদিস হচ্ছে এমন বাণী যেটাকে গয়রে মাতলূ বলা হয়, অর্থাৎ হাদিসের শব্দগুলো পড়লে সওয়াব হবে না, কিন্তু বুঝলে এবং তা অনুযায়ী আমল করলে সওয়াব হবে।
Hello Reader, Commenting you can stay with us and enjoy our posts.