হজ্জের নিয়ম সম্পর্কে যত বিষয় আছে বিস্তারিত জানুন
সালাত মানুষের জন্য এত গুরত্ব ও মাহাত্ম্যপূর্ণ কেন?হজ্জের নিয়ম সম্পর্কে যত বিষয়াদি আছে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত জানবেন। সম্মানিত পাঠক, হজ হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর জন্য আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। একজন মুসলিমের একনিষ্ঠ হজ করার মাধ্যমে সে নিষ্পাপ হয়ে যাওয়ার গ্যারান্টি এসেছে হাদিসে।
তাই হজ্জ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গুনাহ থেকে নিষ্কলুষ করণের অনেক কার্যকরী ইবাদাহ্। তো চলুন আজকে হজ্জে নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জেনে নিই। যেহেতু, এ হজ্জকারী একজন দুনিয়াতে সম্মানিত ও বটে।
পেজ সূচীপত্রঃ হজ্জের নিয়ম সম্পর্কে যত বিষয় আছে বিস্তারিত জানুনহজ্জের নিয়ম
হজ্জের নিয়ম সম্পর্কে লেখার চেষ্টা করছি। হজ্জের বিভিন্ন নিয়ম কানুন রয়েছে। যেমন কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে সুন্নত, কিছু নিয়ম রয়েছে ওয়াজিব বা আবশ্যকীয় আবার কিছু নিয়ম রয়েছে যেগুলো হচ্ছে ফরজ বা অত্যাবশ্যকীয়। হজের ফরজ নিয়মগুলো পুরোপুরি সম্পূর্ণই মানতে হবে যদি একটি বর্জন করা হয় তাহলে হজ হবে না। আর ওয়াজিবগুলোর যদি একটি ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে গুনাহ হয় এবং কিছু ওয়াজিবের ক্ষেত্রে দম দিতে হয়।
অর্থাৎ ওই ভুলে যাওয়া বা ভুল হওয়া ওয়াজিব রুকনের ক্ষেত্রে একটা যবেহ করতে হয়। সুন্নতগুলো পালন করলে পরে হজের শতভাগ সওয়াব পাওয়া যায়।এমনকি যদি কেউ বিনা কোন কারণ বা অজুহাত ছাড়া কোন ওয়াজিব ছেড়ে দেয় তাহলে দম দিয়েও বা পশু যবেহ করেও কোন ক্ষমা হবে না বরঞ্চ তাওবা করতে হবে এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে খুব বিনয়ের সাথে মাফ চাইতে হবে।
আরো পড়ুনঃ সালাত মানুষের জন্য এত গুরত্ব ও মাহাত্ম্যপূর্ণ কেন?
হজের নিয়ম হচ্ছে প্রধানত তিনটি অর্থাৎ এর তিনটি ফরজ যেগুলোর একটি ছুটে গেলে হজ হবে না বিশেষ করে যদি আরাফায় অবস্থান করা না হয় তাহলে হজ হবে না। এক নম্বর হচ্ছে ইরাম বাধা বা সিলাইবিহীন দুইটি কাপড় পরিধান করা এবং হজের জন্য নিয়ত বা সংকল্প করা। একটু বড় করে যেটা বলা যাবে সেটা হচ্ছে যে হজ করার মন মানসিকতা অন্তরে ধারণ করতে হবে।
মানে মনে মনে ইচ্ছা করতে হবে যে আমি বাইতুল্লাহ বা আল্লাহর ঘর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে যাচ্ছি এইটা ইহরামের কাপড় পরিধান করার পর নিয়ত বা ইচ্ছা করতে হয়। দ্বিতীয় হচ্ছে উকুফে আরাফাহ বা আরাফার ময়দানে অবস্থান করা। এর ব্যাখ্যা হচ্ছে ৯ ই জিলহজ্জ সূর্য হেলা বা জোহর থেকে থেকে নিয়ে সূর্য ডোবা বা মাগরিবের আগ পর্যন্ত সময়ের যে কোন সময় আরাফার মাঠের সীমার মাঝে অবস্থান করা।
আরাফাতের ময়দানের বা মাঠের সীমানা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে কারণ সীমানার বাইরে অবস্থান করলে অবস্থান করাটা ধার্য হবে না। আর অবস্থানের সময় নিয়ে দ্বিমত রয়েছে, ইমাম হাম্বল রহমাতুল্লাহ আলাইহি এর বক্তব্য অনুযায়ী জিলহজ মাসের ৯ তারিখ সূর্য উদয় থেকে নিয়ে দিবাগত রাত্রের ফজল উদয়ের আগ পর্যন্ত যেকোনো সময় আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করলেই হজের ফরজ আদায় হয়ে যায়।
আর তৃতীয় হচ্ছে হজের ফরজের- তাওয়াফে যিয়ারাহ বা ইফাযাহ আদায় করা। এর ব্যাখ্যা হচ্ছে আরাফার মাঠে অবস্থান করার পর মিনায় কুরবানী করে মক্কায় এসে বাইতুল্লাহ বা কাবার চারপাশে আবারো তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করা বা ঘোরা। এটি হজের সব কার্য শেষ করে হজ সমাপ্ত করার সমাপনী তাওয়াফ যেটার মাধ্যমে সাধারণত সাধারণ জীবনে যে কাজগুলো করা যায় সব করা যাবে তবে শুধু স্ত্রী সহবাস করা যাবে না। যেহেতু এরপরে হজের অন্যান্য হুকুম আহকাম ওয়াজিব সুন্নত রয়েছে।
হজের নিয়ম যেগুলো ওয়াজিব সেগুলো এখানে বলা হচ্ছে। এক নম্বরে হচ্ছে সাঈ করা বা সাফা মারওয়ার মাঝে সাতবার দৌড়ানো। দ্বিতীয় হচ্ছে ইরাম বাধা যেটি এ রকম যে নির্দিষ্ট মিকাতেই সেলাই বিহীন দুইটি কাপড় পরিধান করা। তৃতীয় আরাফার মাঠে অবস্থান করা সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত এ সময়টাকে লম্বা করা। চতুর্থ মুজদালিফায় রাতে সময় কাটানো। অর্থাৎ আরাফা থেকে মিনায় আসার পথে মুজদালিফায় রাতে সময় যাপন করা।
পঞ্চম মুজদালিফায় রাত্রি জাপনের পর মিনায় অবশ্যই দুই-রাত্রি যাপন করা বা সময় কাটানো। ষষ্ঠ রময়ি জিমার বা জামরায় পাথর নিক্ষেপ করা। সপ্তম কেরান ও তামাত্তু হাজিদের জন্য কোরবানির পশু যবেহ (হাদী) করা। অষ্টম হচ্ছে মাথার চুল ছোট করা বা চুল কাটা আর নবম হচ্ছে হজ্জের সব কাজ শেষে তাওয়াফে বিদা' বা সমাপনী তাওয়াফ বা বিদায়ী তাওয়াফ করা ইত্যাদি।
হজ্জের নিয়ম এর সুন্নতগুলো লিখছি। এ সুন্নতগুলো অনেক রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য এখানে ছয়টি সুন্নত লিখা হলো। যেমন- প্রথম গোসল করতে হবে ইহরামের আগেই। দ্বিতীয় যারা পুরুষ তাদের জন্য সাধারণের এহরামের কাপড় পড়তে হবে। তৃতীয় তালবিয়া বা লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...
এটা পড়তে থাকতে হবে। চতুর্থ ৮ ই জিলহজ্জ দিন পার হয়ে রাতে গিয়ে মিনায় অবস্থান করতে হবে।পঞ্চম জামরাতে ছোট-বড় পাথর বা পংকর নিক্ষেপ করতে হবে আর ৬ষ্ট হচ্ছে তাওয়াফে কুদুম করতে হবে অর্থাৎ ইফরাদ ও কেরান হাজীদে জন্য প্রথমে বায়তুল্লাহ য় বা কাবায় তাওয়াফ করতে হবে।
মহিলাদের হজ্জের নিয়ম
মহিলাদের হজ্জের নিয়ম সম্পর্কে লিখছি। পুরুষ ও মহিলার হজের নিয়মের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে যেমন ইরাম বাধার ক্ষেত্রে পুরুষকে সিলাইবিহীন দুইটি কাপড় পড়তে হবে কিন্তু মহিলাকে সিলাইযুক্ত যে কোন স্বাভাবিক কাপড় পড়তে হবে যাতে করে পর্দার লঙ্ঘন না হয় তবে সাদা পোশাক পড়া বেশি ভালো। আর মিনায়, মুজদালিফায় এবং আরাফাতে অবস্থান করার বিষয়গুলো পুরুষের মতোই কিন্তু মাহরাম পুরুষের সাথে পর্দার সহিত অবস্থান।
আর পবিত্র কাবা তাওয়াফ করা, সাফা মারওয়া সাঈ করা এর ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে মহিলারা একটু ধীরস্থিরতার সাথে হুকুমগুলো পালন করবে। আর মহিলার যেহেতু বিশেষ ওযর যেমন ঋতু ও নেফাত ইত্যাদি রয়েছে সেহেতু এসব ক্ষেত্রে পবিত্র না হওয়ার আগ পর্যন্ত হজের সব কাজগুলোই করতে পারবে কিন্তু নামাজ পড়া এর ক্ষেত্রে বিরত থাকতে হবে। এবং জরুরি কারণে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে যেমন শিক্ষা দেওয়া অন্যকে ইত্যাদি। তবে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে প্রয়োজন না হলে নিজে না পড়াই ভালো।
হজ্জের দোয়া
হজের দোয়া বিভিন্ন রকম রয়েছে। একজন হাজকারী হজ করতে গিয়ে সে যা চাইবে তাই আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারবে তবে বিশেষ কিছু দোয়া রয়েছে। যেমন-সে পড়বে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ইউহয়ি ওয়া ইউমিতু ওয়াহু অ আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর। এই দোয়াটা হজ ও ওমরা এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বলতে থাকতে হয়।
এই দুয়ার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবুদ নেই যিনি একক, যার কোন শরিক নেই, তার জন্য সমস্ত রাজত্ব, এবং তার জন্যই সকল প্রশংসা, তিনি জীবিত রাখেন এবং মৃত্যু দান করবেন এবং তিনি সর্বশক্তিমান। আবার পবিত্র কাবা প্রদক্ষিণ করার সময় পাথর লাগানো জায়গার দিকে তাকিয়ে যেটি চুম্বন করতে হয় বলতে হয়" রব্বানা জালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাহফিরলানা ওয়া তারহামনা লানা কুনান্না মিনাল খাসিরীন।
যার অর্থ হচ্ছে হে আমাদের প্রভু আমরা আমাদের নিজেদের প্রতি খুব অন্যায় করে ফেলেছি আপনি যদি আমাদের ক্ষমা না করেন এবং দয়া না করেন তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব। আরো বিভিন্ন দোয়া রয়েছে যেগুলো পড়ে আল্লাহর কাছে চাইতে হবে তাহলে আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই দিবেন।
হজ করতে কতদিন লাগে
হজ করতে যতদিন সময় লাগে বিষয়টি বিবরনে আনছি। হজ করতে বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন সময় লাগে যেটা সরকারের নির্ধারিত কাফেলার মেয়াদ অনুসারে হয়ে থাকে অথবা বেসরকারি হজ কাফেলার সময় অনুসারে হতে পারে। যেমন বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার দিন থেকে নিয়ে বাড়িতে আসার দিন পর্যন্ত প্রায় ৪০-৪৫ দিন সময় লাগে।
হজের কার্যগুলো প্রতিবছর আরবি হিজরী সনের বারো মাসের ১২ তম বা শেষ মাস জিলহজ মাসে হজের নিয়ম-কানুন বা হুকুম আকামগুলো পালন হয়ে হজ শেষ হয়। এটি প্রায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পবিত্র মক্কায় আগত বা গমনরত হাজিরা জিলহজ মাসের আগেই সেখানে গিয়ে হজের বিভিন্ন কার্যাবলী আদায় করে। কেউ একসাথে হজ ও ওমরা দুটোই করে, কেউ শুধু হজ করে আবার যার যা নিয়ত তা সে পালন করতে পারে।
ওমরা হজ্জ করার নিয়ম
ওমরা হজ্জ করার নিয়ম বিষয়টা স্পষ্ট করছি। ওমরা শব্দটি আরবী শব্দ যার অর্থ লিকা বা সাক্ষাৎ করা।ওমরা বছরের যেকোনো সময় করা যায় তবে যারা হজ করতে যাবে তারা একসাথে হজ সহকারে উমরাও করতে পারবে সমস্যা নেই। যারা একসাথে হজ ও ওমরা করে তাদের হজটাকে হজ্জে কেরান এবং তামাত্তু বলে। ওমরা করা এটি ফরজ নয় যেকোনো মানুষ একটু সম্বল হলে সেই ইচ্ছা করলেই পবিত্র মক্কা জিয়ারত করতে পারে।
পবিত্র মক্কা জিয়ারত যেটাকে ওমরা বলা হয়। ওমরা করার বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে অর্থাৎ ওমরা করার চারটি কাজ যেগুলো আদায় করলে ওমরা হজ্জ সম্পন্ন হয়ে যায়। যেমন একটি হচ্ছে ইহরাম বাধা বা পুরুষদের সেলাই বিহীন কাপড় পরিধান করা এবং মহিলাদের সেলাই যুক্ত স্বাভাবিক কাপড় পরিধান করা। দ্বিতীয়ত পবিত্র কাবা তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করা আর এই দুইটি হচ্ছে ফরজ। এবং তৃতীয়ত সাফা ও মারওয়া সাঈ করা এবং চতুর্থত মাথার চুল মহিলার ক্ষেত্রে ছোট করা এবং পুরুষের ক্ষেত্রে ছেঁটে ফেলা আর এই দুইটি কাজ হচ্ছে ওয়াজিব।
ওমরা হজ্জকরার নিয়ম ও দোয়া
ওমরা হজ্জকরার নিয়ম ও দোয়া বিষয় নিয়ে বলছি। ওমরা হজ আদায় করার নিয়ম আমরা ইতিমধ্যেই লিখেছি। অর্থাৎ ওমরা হজ আদায় করতে হয় বিশেষত চারটি কাজ করার মাধ্যমে সর্বপ্রথমে ইহরাম বাঁধতে হবে এরপরে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করতে হবে এরপরে সবুজ বাতির ভিতরে অর্থাৎ সাফা মারওয়ায় সাঈ বা দৌড়াতে হবে এবং সর্বশেষে মাথা মুণ্ডন করতে হবে এতেই ওমরা হজ আদায় হয়ে যাবে।
আদায় করার সময়ই বিভিন্ন দোয়া রয়েছে যে দোয়াগুলো হজের সময় পড়তে হয় সেগুলো যথাক্রমে পড়লেই হবে। যেমন এহরাম বাধার পরে হেরেমের মধ্যে ঢোকার সময় মসজিদে যেমন ঢুকলে দুয়া করতে হয় অনুরূপ দোয়া পড়তে হবে, এরপরে তাওয়াফ করার সময় যে দোয়া পড়তে হয় রাব্বানা জালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফির লানা ওয়া তার হামনা লানা কুনান্না মিনাল খ-সিরীন ইত্যাদি দুয়া পড়তে হবে।
এক নজরে হজের কার্যক্রম
এক নজরে হজের কার্যক্রম সারসংক্ষেপে লেখার চেষ্টা করছি। হজ করতে হলে তিনটি কাজ করতেই হবে একটি হচ্ছে ইহরাম বাঁধতে হবে এরপরে আরাফর মাঠে অবস্থান করতে হবে এবং শেষে তাওয়াফে জিয়ারত করতে হবে। এরপরে হজের ছয়টি কাজ করতে হবে সাফা মারওয়া সাঈ করতে হবে, মুজদালিফায় অবস্থান করতে হবে, শয়তানকে পাথর মারতে হবে, দমে শুকর করতে হবে, মাথার চুল মুন্ডন করতে হবে এবং বিদায়ী তাওয়াফ করতে হবে।
যে কাজগুলো করা যাবে না- জুতা পরিধান করা যাবে না, পুরুষকে সেলাই যুক্ত কাপড় পরিধান করা যাবে না। মাথা ও মুখমণ্ডল ঢাকা যাবে না। পায়ের পৃষ্ঠা ঢেকে যায় এমন জুতা পরিধান করা যাবে না। চুল কাটা যাবে না অর্থাৎ ছেঁটে ফেলতে হবে। নখ কাটা যাবে না। সুগন্ধিযুক্ত তেল বা আতর ব্যবহার করা যাবে না। স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা যাবে না। কোন খারাপ কথা বা কাজ করা যাবে না। শিকার করা যাবে না। ঝগড়া বিবাদ ও ফ্যাসাদ করা যাবে না। চুল দাড়ি চিরুনি করা যাবে না। শরীরের সাবান ব্যবহার করা যাবে না ইত্যাদি।
হজ্জ কিভাবে করতে হয়?
হজ যেভাবে করতে হয় বিষয়টি আমরা উল্লেখিত ব্লগের মধ্যে ইতিমধ্যেই আলোচনা করার প্রয়াস পেয়েছি। হজ্জ বিভিন্ন প্রকার রয়েছে যেমন হজ্জে ইফরাদ, হজ্জে কেরান এবং হজ্জে তামাত্তু ইত্যাদি। হজে ইফরাদ হচ্ছে যে হজ্জটার জন্য শুধুমাত্র ইহরাম বেঁধে ওমরা না করে একমাত্র হজ্জটিই আদায় করা হয়। আর হজ্জে কেরান হচ্ছে মিকাত বা বা হজ্জ এর নির্দিষ্ট এইরাম বাধার জায়গা থেকে ওমরা ও হজ্জ করার জন্য একসাথে নিয়ত করা হয় এবং হজ্জ টি সম্পন্ন করা হয় এটি হজ্জে কেরান।
আর হজ্জে তামাত্তু হচ্ছে মিকাত থেকে শুধুমাত্র ইহরাম বেঁধে ওমরার নিয়ত করা হয় এবং পবিত্র মক্কায় গিয়ে ওমরা সম্পন্ন করতে হয় এরপরে আবার হজ্জের জন্য আলাদা করে নিয়ত করে হজ্জ আদায় করতে হয় আর এটি হচ্ছে হজ্জে তামাত্তু। আর আমরা ইতিমধ্যে ওমরা করা এবং হজ্জ করার নিয়মগুলো লিখেছি যেগুলো পর্যায়ক্রমে আদায় করলে ওমরা ও হজ্জ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
হজ মোট কতদিন লাগে?
হজ করতে যতদিন সময় লাগে আমরা ইতিমধ্যেই বিষয়টি লিখেছি এরপরেও এখানে ভিন্ন কিছু লেখার চেষ্টা করছি। হজ করতে আসলে আমি বলব একদিন সময় লাগে আমরা জানি যে শুধুমাত্র আরাফার মাঠে ৯ ই যিলহজ্জ যোহর থেকে সেদিন দিবাগত রাত্রি হওয়ার আগ পর্যন্ত এ সময়টির যেকোনো সময় আরাফাতের মাঠে অবস্থান করলেই হজ্জ আদায় হয়ে যায়।
তবে সম্পূর্ণরূপে আদায় করতে জিলহজ মাসের ৮ তারিখ থেকে দশ তারিখ পর্যন্ত অর্থাৎ ৮,৯, ১০, ১১ এবং এবং আরো দুই দিন ১২ ও ১৩ এই মোট পাঁচ দিনের মধ্যে হজ্জের যাবতীয় কার্য শেষ হয়ে যায়।তবে ৮ তারিখ যোহরের পরে মিনায় অবস্থান করে ৯ তারিখ আরাফায় অবস্থান করতে হবে। এবং ৯ তারিখ সুবহে সাদিকের পর একটু আরাফায় অবস্থান করে সূর্য উদয় হওয়ার আগেই মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ১০টি কোরআন হাদিসের বাণী স্পষ্টরুপে জানুন
এবং এরপর পথিমধ্যে মুযদালিফায় অবস্থান করতে হবে। এরপর মিনায় দুই রাত্রি যাপন করতে হবে এবং এর মাঝে তামাত্তু হজ্জ কারীদের জন্য কুরবানী করতে হবে এবং জামরাতে ৭টি করে ছোট বড় মিলিয়ে ২১টি পাথর মারতে হবে। আর এগুলোর ধারাবাহিকতা মেইনটেনইন করতে হবে, অন্যথায় দম দিতে হবে। অবশেষে হজ্জে যিয়ারত বা ইফাযাহ করে হজ্জের কার্যাদী শেষ করতে হবে।
হজের সফর কতদিন?
হজের সফর কতদিন ব্যাপারটি আমরা ইতিমধ্যেই লিখে ফেলেছি। আর সেটি হচ্ছে যে হজ করতে মোট সময় লাগে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট অনুসারে ৩৭ দিন অথবা ৪০ থেকে ৪৫ দিন প্রায় দেড় মাস। আর হজের কার্যগুলো প্রায় শেষ হয়ে যায় পাঁচ দিনের মধ্যে অর্থাৎ জিলহজ মাসের ৮ তারিখ থেকে নিয়ে ১৩ তারিখের মধ্যেই।
- হজ্জের দেড় মাসে সফরে ৭ই যিলহাজ্জ মক্কায় আগমন করতে হয়।
- ৮ ই যিলহাজ্জ মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতে হয় এবং মিনায় গিয়ে অবস্থান নিতে হয়।
- ৯ ই যিলহাজ্জ আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যোহর ও আসর ইমামের সাথে পড়তে হয়।
- ১০ ই যিলহাজ্জ মিনায় গিয়ে কুরবানী, পাথর নিক্ষেপ এবং অন্যান্য সালাত, যিকর ও দুয়া ইত্যাদি করা লাগে।
- ১১- ১২/২৩ তারিখ হজ্জের বাকী কাজ সেরে মক্কা ত্যাগ করতে হয়।
আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url