2024 সালের ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় ১৫টি সহজ কাজ

সহজে অনলাইনে ইনকাম করার সেরা উপায়২০২৪ ইং সালের ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় ১৫টি সহজ কাজ আপনার সম্মুখে পেশ করব সুপ্রিয় পাঠক। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য এই আর্টিকেলটি। ফ্রিল্যান্সিং এক অপার সম্ভাবনাময় অনলাইন সেক্টর।
2024-সালের-ফ্রিল্যান্সিং-এর-সবচেয়ে-জনপ্রিয়-১৫টি-সহজ-কাজ
আপনি যদি মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়লে ফ্রিল্যান্সিং এর ১৫টি জনপ্রিয় সহজ কাজ সহ 2024 সালে কোন কাজের চাহিদা বেশি ইত্যাদি বিষয় জানতে পারবেন। আরো জানবেন ফ্রিল্যান্সিং এর সেরা মার্কেটপ্লেস ও এর ভবিষ্যত এবং জনপ্রিয় সেক্টর সম্পর্কে।

পেজ সূচীপত্রঃ

ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় ১৫টি সহজ কাজ

ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় ১৫টি সহজ কাজ নিয়ে এখানে বলব। সর্ব প্রথমে আপনাকে জানাতে চাচ্ছি যে ফ্রিল্যান্সিং শব্দের ব্যখ্যা। তো এখানে ফ্রি মানে মুক্ত আর ল্যান্সিং মানে পেশা দুই শব্দের সমন্বয় অর্থ হয় মুক্ত পেশা। একটু বিশদ আকারে এভাবে সংজ্ঞা আসে যে, অনলাইনে ঘরে বসে স্বাধীনভাবে অন্য মানুষের কাজ করে দিয়ে যে উপার্জন করা হয় সেটি হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। নিচে ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয় সহজ ১৫টি কালজ লেখা হলো।

১. ব্লগিং বা আর্টিকেল লেখাঃ প্রিয় পাঠক বর্তমানে ২০২৪ এ আপনার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় সহজ যে কাজটি হবে সেটি হচ্ছে ব্লগিং বা আর্টিকেল লেখা। আপনার যদি লেখালেখিতে অভ্যাস থাকে বা যে কোন বিষয়ে আপনার ধারণা থাকে অথবা আপনি সুন্দর করে গুছিয়ে লিখতে পারেন, তাহলে এই ব্লগিং বা আর্টিকেল লেখার কাজটা আরেকটু ভালোভাবে শিখে আপনার ক্যারিয়ার অগ্রসর করতে পারেন।

২. অনুবাদঃ আপনার যদি ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান থাকে তাহলে এই অনুবাদ এর কাজটা আপনার জন্য খুব সহজ হতে পারে। অথবা যদি এ অনুবাদ বা ট্রান্সলেশন সম্পর্কে আমি নাও জানেন তবে কোন সমস্যা নেই, অনলাইনে একটু ঘাটাঘাটি করে হয় গুগল বা ইউটিউবে রিসার্চ বা গবেষণা করে আপনি ট্রান্সলেশন বা অনুবাদের কাজটা কিভাবে করতে হয় সেটি জানতে পারবেন। যেমন Google Translation সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে তাহলে এক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারবেন।

৩. বুককিপিং বা হিসার রক্ষণের কাজঃ আপনি আপনি বুককিপিং বা হিসাব রক্ষণের কাজ করতে পারেন যেটা কি অ্যাকাউন্টিংও বলা হয়। কারণ এই কাজটিও করার জন্য অনলাইনে হায়ার বা ভাড়া করা হয়। আর এই কাজটি খুব বেশি জটিলও নয়, আপনি যদি মাইক্রোসফট এর এক্সেল বা গুগল স্প্রেডশিট এর কাজ শিখা আপনার একিবারে সহজ। আর এই কাজটির ডিমান্ডেবল বা মার্কেটে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

৪. ট্রান্সক্রিপশনঃ ট্রান্সক্রিপশন বা রুপান্তরের কাজ করতে পারেন, অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের অডিও ফাইল এবং ভিডিও ফাইল এগুলোতে যে বর্ণনা বা বিবরণগুলো থাকবে বা কথাগুলো থাকবে সেগুলো লেখায় কনভার্ট বা ট্রান্সক্রিপশন বা পরিবর্তন করতে হবে। অবশ্যই এটি সহজ কাজ যদি শিখতে পারেন তাহলে এর মাধ্যমে আপনি একটি হ্যান্ডসাম ইনকাম জেনারেট করতে পারেন।

৫. টিউটরিংঃ আজকাল অফলাইনে যেমন টিউটরিং বা গৃহ শিক্ষকতার প্রচলন দেখা যায়, তদ্রূপ অনলাইনে ও টিউটর বা গৃহ শিক্ষক হওয়ার সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তো আপনি যদি বিভিন্ন টপিক বা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে থাকেন বা আপনার জ্ঞান থেকে থাকে, তাহলে আপনার এই জ্ঞান অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে গৃহ শিক্ষক হওয়ার দ্বারা সার্ভিস বা পরিষেবায় রূপান্তর করতে পারেন।

৬. গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ শিখতে পারেন। যেখানে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর বিভিন্ন শাখা প্রশাখা রয়েছে। যেগুলোর একটি কাজ শিখলে এবং ভালোভাবে রপ্ত করতে পারলে এটার মাধ্যমে আপনার ক্যারিয়ারকে বহুগুনে লম্বা করতে পারবেন। যেমন লোগো ডিজাইন এর কাজ, ব্যানার ডিজাইন এর কাজ, ব্রসিওর তৈরি করার কাজ, পোস্টার ডিজাইনের কাজ, টি-শার্ট বা গেঞ্জির ওপর এর ডিজাইনের কাজ ইত্যাদি কাজ শিখতে পারেন। যেগুলোতে একটু টাইম দিলেই শিখা সহজ হয়ে যাবে আর এগুলো খুব জনপ্রিয়।

৭. কপিরাইটিংঃ আপনি কপিরাইটিং এর কাজ শিখতে পারেন। কপিরাইটিং মানে অনেক বিজনেস বা ব্যবসার অনেক সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখার প্রয়োজন পড়ে, অথবা ব্যবসার প্রমোশনের বা প্রচারের জন্য কিছু লেখার দরকার হয়। তো সেই লেখাগুলো একটু সময় ব্যয় করে আপনি শিখে নিলেন। তাহলে একটি মাধ্যমে আপনি ঐ কোম্পানির বা ব্যবসার লেখা লিখে দিলেন সাথে কিছু আয় করলেন।

৮. ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজঃ আপনি ডিজিটালী বা অনলাইনে মার্কেটিংয়ের কাজ শিখতে পারেন। কারণ আজ মার্কেটিং এর জন্য বিভিন্ন কোম্পানির বা ব্যবসায়িক মালিকদের জন্য ডিজিটাল মার্কেটের অভাব দেখা দিচ্ছে। আর ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন শাখা উপ-শাখা রয়েছে, যেগুলোর যেকোনো একটি কাজ বা একাধিক কাজ শিখে নিয়ে সার্ভিস দিতে পারেন। এবং এটির একটা কোয়ালিটি টাকা ইনকাম করতে পারেন।

এছাড়াও, আরো পড়ুনঃ দাঁতের রুট ক্যানেল কেন করা হয় এবং এটার চিকিৎসা কী?

৯. ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশনঃ আজকাল বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট মালিকদের জন্য ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশন এক্সপার্টদের দরকার হয়। আর ওয়ার্ডপ্রেস হচ্ছে খুব সহজে একটি ওয়েবসাইটকে সাজানোর জন্য (cms) বা কন্টেন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। অর্থাৎ একটা ওয়েবসাইট এর বিভিন্ন কনটেন্ট কে সহজ সিস্টেম বা পদ্ধতিতে ব্যবস্থাপনা দেওয়া হয় বা সাজানো হয়। আর এই কাজটি মার্কেটে প্রচুর ডিমান্ড। তাই দেরি না করে কাজটি শিখুন এবং প্রচুর ইনকাম করুন।

১০. ফটো এডিটিংঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন এর একটি উপশাখা হচ্ছে ফটো এডিটিং বা কাট ছাট করা। সাম্প্রতিক সময়ে ছবি এডিটিং বা একটি ছবিকে কিভাবে সাজাতে হবে, কোন অংশটি কাট করতে হবে, কোন অংশে কিছু জোড়া দিতে হবে, বা একটু কালার করতে হবে, বা একটু ব্রাইটনেস বা উজ্জ্বলতা বাড়াতে হবে এটিই ফটো এডিং। এই কাজটি শেখা খুব জনপ্রিয় এবং সহজ। 

১১. সাইবার সিকিউরিটিঃ বর্তমান সময়ে ২০২৪ এ যারই  একটা ব্যবসা রয়েছে তার ওই একটা ওয়েবসাইট রয়েছে। আর এটি হচ্ছে ই-কমার্স ওয়েবসাইট। তো এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন সময় সাইবার এটাক হতে পারে। মানে বিভিন্ন ব্যক্তি শয়তানি করে বা শত্রুতা করে বিজনেসম্যানদের ই-কমার্স সাইটগুলিকে হ্যাক করার চেষ্টা করে। তো আপনি একটা সাইটকে কিভাবে সিকিউর বা নিরাপদ রাখা যায়। 

আর এ কাজটি শেখার জন্য আপনাকে হ্যাকিং শিখতে হবে। আর যেটি মূলত ৩ ধরণের, ১টা হচ্ছে- White hat hacking, আর ২য়টা হচ্ছে- Black hat hacking, আর ৩য়টা হচ্ছে- Gray hat hacking। আর এই হ্যাকিং এর কাজ শিখা অনৈতিক নয়। যারা অনৈতিক কাজ করে তাদের থেকে রক্ষা পেতে এটা শিখা হয়।  এ কাজটা শিখে আপনার ক্যারিয়ারকে হ্যান্ডসাম আয়ের উৎস করতে পারেন।

১২. ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টান্সঃ ভার্চুয়াল মানে হচ্ছে আপনি এক জায়গায় বসে আরেক জায়গার কাজ করে দেওয়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে। আর এই ভার্চুয়ালি বিদেশি বিভিন্ন লোকের ইন্টারনেট সম্পৃক্ত বিভিন্ন কাজ এর লোকের দরকার হয়। এক্ষেত্রে আপনি সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট এর কাজ শিখে নিতে পারেন। আর এগুলো শিখে নেওয়া খুব সহজ। যেমন Facebook বা ট্যুটার বা Instagram ইত্যাদি ম্যানেজ এর কাজ দেয়। তো আপনি এই কাজটা শিখে একটা মোটা অংকের টাকা ইনকাম করতে পারেন।

১৩. অ্যাপ্লিকেশন তৈরীঃ ২০২৪ সালে সবচেয়ে জনপ্রিয় যে কাজটি সেটি হচ্ছে এন্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা। আপনি যদি এই কাজটিতে একটু মনোযোগ দেন এবং লাগাতার কয়েক মাস সময় দেন তাহলে এই কাজটিও আপনার জন্য শিক্ষা সহজ হয়ে যাবে। আর এটি শিখে বিভিন্ন ভাবে টাকা ইনকাম করতে পারেন। যেগুলোর মূল্য অত্যন্ত হাই লেভেলের। তাই জীবনকে ক্যারিয়ারময় করতে চাইলে আজই শিখা শুরু করুন।

১৪. ভিডিও এডিটিংঃ ২০২৪ সালের এই সময়ে ফেসবুক ইউটিউব এর যুগে মানুষকে ভিডিও দেখে ভিউ বাড়িয়ে প্রতিদিন প্রচুর আয় করতে পারবেন। আর এই ভিডিওগুলো সাজানো-গোছানো এবং আপটুডেট হতে হবে। আর ভিডিওগুলোকে সুন্দর করে হাতে চাইলে আপনাকে ভিডিও এডিটিং শিখতে হবে। এটি শিখে মানুষ হাজার হাজার টাকা ইনকাম করছে। আপনিও ভিডিও এডিটিং এর মাধ্যমে একটি ফেসবুক পেজ অথবা ইউটিউব চ্যানেল দাড় করাতে পারেন।

১৫. ওয়েব ডিজাইন ও ডেভলপমেন্টঃ যদিও ১৫ নম্বরে এই ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্টের কাজ শিখার বিষয়টি বলা হচ্ছে, তথাপিও, সংখ্যার দিক দিয়ে এটি সর্বোচ্চ। তো সুপ্রিয় পাঠক, এই ওয়েব ডিজাইন ডেভেলপমেন্টের যেকোনো একটি কাজ শিখলে অথবা দুইটি কাজ শিখলে তো আরো ভালো, এটির মাধ্যমে আপনি মার্কেটে সার্ভিস দিয়ে দেশীয় ব্যবসায়িক লোকদের ওয়েবসাইট বানিয়ে দিয়ে দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা কামাতে পারেন। তাই হাই ডিমান্ডেবল জনপ্রিয় কাজটি শিখুন আর অনেক দূর বহুদূর চলে যান।

এছাড়াও, আরো বিভিন্ন কাজ রয়েছে যে কাজগুলো জনপ্রিয় এবং সহজ এবং মার্কেটে প্রচুর চাহিদা সেগুলো রিসার্চ বা গবেষণা করে শিখুন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট করুন। 

ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজের চাহিদা বেশি 2024?

ফ্রিল্যান্সিংয়ে আজ ২০২৪ সালে যে কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি বিভিন্ন রকম রয়েছে। তবে আপনাকে জানতে হবে যে আপনি কি বিষয়ে বেশি আগ্রহী এবং কোন কাজটি আপনার জন্য সহজ সেটি আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। আর এখানে ২০২৪ এর ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের চাহিদা সম্পন্ন যে কাজ সেগুলো নিম্নালোকে লিখার চেষ্টা করছি। তো পাঠক, মন দিয়ে পড়ুন এবং কাজে নেমে যান।

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন কাজ হল ডাটা এন্ট্রি। ডাটা এন্ট্রি মানে বিভিন্ন ইনফরমেশন বা তথ্য সুবিন্যাস করে এক জাগায় সমবেত করা। আর এটি হচ্ছে ডাটা। আর এই ডাটা বিভিন্ন এক্সেল বা স্প্রেডশিটে বা মাইক্রোসফটের এক্সেসে এন্ট্রি বা প্রবেশ করে না। এটা কি মূলত পারফেক্ট ডাটা এন্ট্রি বলে। তবে ডাটা এন্ট্রির বিভিন্ন শাখা প্রশাখা রয়েছে। যেমন বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করা। বিভিন্ন ব্যক্তির নাম ফোন নাম্বার এবং ইমেইল কালেক্ট করা ইত্যাদি।

এছাড়াও আপনি শিখতে পারেন যেগুলো প্রচুর চাহিদা সম্পন্ন, যেমন- সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হওয়ার কাজ, কন্টেন্ট রাইটিং বা একটি বিষয়ে বিষয়বস্তু লেখা, আবার সম্পাদনার কাজ, ডিজাইনের কাজ, ডেভেলপমেন্ট তথা অ্যাপ বা ওয়েব সাইট বানানোর কাজ ইত্যাদি।

ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজ নতুনদের জন্য সহজ?

ফ্রিল্যান্সিং এ যে কাজ নতুনদের জন্য সহজ হবে। নতুনদের জন্য মুক্ত পেশা বা স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য সহজ কাজ হিসেবে আখ্যায়িত হবে এইগুলো। যেমন- আপনি যদি স্বাধীন পেশা বা ফ্রিল্যান্সিংয়ে নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আপনি সোশ্যাল মিডিয়াম মার্কেটিং এর কাজ করতে পারেন যা শিখা একেবারে পানির মত ইজি। আবার ব্লগ পোস্টিং বা আর্টিকেল লেখার কাজ। যে কাজগুলো শিখা অন্যান্য কাজের তুলনায় অত্যন্ত সহজ। 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলতে ফেসবুকে অথবা ইনস্টাগ্রামে অথবা অথবা টুইটার ইত্যাদিতে মার্কেটিং বা বা এই সোশ্যাল মিডিয়া গুলোর ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য দৈনিক পোস্ট করা, হয় লেখা পোস্ট করা, অথবা ছোট ছোট ভিডিও পোস্ট করা। আর ছোট ভিডিওগুলোকে ফেসবুক এবং instagram এর ভাষায় রিলস বলা হয়, আর টিকটকের ভাষায় tiktok ভিডিও এবং ইউটিউব এর ভাষায় শর্ট ভিডিও। একসময় ফলোয়ার বেশি হলে সেই ফলোয়ারদেরকে বিভিন্ন প্রোডাক্ট সেলে কনভার্ট এর জন্য মার্কেটিং করা আর এটি হচ্ছে মূলত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয়?

ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ যেভাবে করতে হয় সেটা এখানে স্পষ্টভাবে লেখার প্রয়াস চালাচ্ছি, তো চলুন। মূলত ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং একটি আরেকটির বিপরীত। ফ্রিল্যান্সিং মানে ঘরে বসে স্বাধীনভাবে যেকোনো সময় কোন মানুষের কাজ করে দেওয়া। আর অপরপক্ষে, আউটসোর্সিং হলো একজন এডমিন বা মালিকপক্ষ কোনো মানুষকে কাজ দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া যেটি হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ বা যে এটি করে তাকে ফ্রিল্যান্সার বলে। 

তো আপনি ফ্রিল্যান্সিং যেভাবে করবেন সে ক্ষেত্রে প্রথমত আপনাকে অবশ্যই লক্ষ্য ঠিক রাখতে হবে। কারণ, লক্ষ্য ছাড়া কোন কাজে সফল হওয়া যায় না বা গন্তব্যে পৌঁছা যায় না। এই জন্য আপনি কোন কাজ শিখবেন এবং সে কাজটি আপনার জন্য সহজ হবে সেটি নির্ণয় করে ঐ কাজটি মার্কেটওপ্লেসে ক্লাইন্ট বা গ্রাহকদের কাছ থেকে কাজ নিয়ে সার্ভিস বা সেবা প্রদান করা।

তাহলে বুঝা গেল যে সর্বপ্রথমে আপনাকে একটা লক্ষ্য নিয়ে একটা কাজ বা একটা স্কিল বা একটা দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আর সে দক্ষতাটা অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে একটা পোর্টফলিও বা বায়োগ্রাফিতে সুন্দর করে সাজিয়ে লিখতে হবে। এরপর পোর্টফোলিও একজন কাস্টমার সর্বপ্রথমে দেখবে এবং আপনার কাজটি যদি তাদের পছন্দ হয় তাহলে সিলেক্ট করবে এবং আপনাকে কাজ দিবে ও সেই কাজের একটা পারিশ্রমিক পাবেন। এইভাবে মুক্ত পেশার কাজ করতে হয়।

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি?

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য যেটি সবচে সেরা মার্কেটপ্লেস সেটি নিয়ে বলব। ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য এবং দক্ষতা সম্পন্ন কাজের সার্ভিস দেওয়ার জন্য এবং সেই কাজটি পাওয়ার জন্য অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস রয়েছে। তবে একেক মার্কেট প্লেসের এক একটা রুলস এবং রেগুলেশন রয়েছে যেগুলো খুব ভালো করে জানতে হবে। 

আজ ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং সেক্টরে বিভিন্ন নতুন ছেলে এসে একটা কাজ শিখে মার্কেটপ্লেসের নিয়ম-কানুন না জেনে অ্যাকাউন্ট খুলে বসে। ফলে মার্কেটপ্লেসের রুলস ভঙ্গ হলেই সাথে সাথেই মার্কেটপ্লেসের এডমিন বা প্রশাসকগণ সেই নতুন ফ্রিল্যান্সারের একাউন্ট কে সাথে সাথে ব্যান করে। আর যেটি তার জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক। 

নতুন-ফ্রিল্যান্সারদের-জন্য-সেরা-মার্কেটপ্লেস-কোনটি

কারণ, সে অনেক আশা করে  কাজ করতে এসেছে। কিন্তু তাদের টার্মস এন্ড কন্ডিশন বা নিয়ম ও শর্তাবলী না জেনে অ্যাকাউন্ট করাতে যখন একাউন্টগুলো নষ্ট হয়ে যায় তখন সে আশা হতো হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যে ঝরে পড়ে। কাজেই মার্কেটপ্লেসে যাওয়ার আগে রুলস এবং রেগুলেশন গুলো নির্দিষ্ট মার্কেটপ্লেসের ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। 

প্রিয় পাঠক, ২০২৪ সালে ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় ১৫টি সহজ কাজ করার জন্য সবচেয়ে সেরা এবং নামিদামি কিছু মার্কেটপ্লেসের নাম নিচে দেওয়া হলো_

  1. ফাইভার (Fiverr)
  2. ফ্রিল্যান্সার ডট কম (Freelancer.com)
  3. পিপল পার আওয়ার (People Per Hour)
  4. গুরু ডট কম (Guru.com)
  5. আপওয়ার্ক (Upwork)
  6. টপটাল ( Toptal)
  7. নাইনটি নাইন ডিজাইনস ( 99designs)
  8. আকুয়েন্ট (Aquent)
  9. ড্রিবল (Dribble)
  10. সিমপ্লাই হায়ার্ড (Simply Hired)

এছাড়াও আরো বিভিন্ন রকম মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেগুলো রিসার্চ করলে আপনি জানতে পারবেন। প্রিয় পাঠক একটা মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে তাদের নিয়ম-নীতি, কন্ডিশন, রুলস ও টার্মস আয়ত্ত করে এরপর মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট করবেন। 

কাজেই, এটি হবে লং-টাইম বা দীর্ঘস্থায়ী মার্কেটপ্লেসে কাজ করার জন্য বুদ্ধিমান ফ্রিল্যান্সারের প্রসেস!

ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন?

ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় ১৫টি সহজ কাজ বা মুক্ত পেশায় কাজ করার জন্য যে বিষয়গুলো দরকার সেগুলোর নিম্নে লেখা হলো।স্বাধীনভাবে মানুষের কাজ করার জন্য সর্ব প্রথমে আপনার লক্ষ্য থাকা প্রয়োজন। এর পরে নির্দিষ্ট একটা বা একাধিক স্কিলস অর্জন করা। আর এই লক্ষণীয় স্কিলস গুলো অর্জন করে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য আপনার জন্য প্রয়োজন হবে।

  • সর্বপ্রথমে, আপনার সুন্দর একটি ইন্টারনেট বা নেট কানেকশন থাকা 
  • দ্বিতীয়ত, আপনার হাতে একটি স্মার্টফোন অথবা একটি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ বা কম্পিউটার থাকা
  • তৃতীয়ত, আপনার কম্পিউটার সম্পর্কে বেসিক ধারণা নেওয়া 
  • চতুর্থত, ব্রাউজিং সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা, অর্থাৎ কোন কিছুতে অসুবিধা হলে গুগল সার্চ করে বা ইউটিউবের ভিডিও দেখে সমাধান করতে পারার দক্ষতা নেওয়া।
  • পঞ্চমত, ইংরেজি ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা কেননা মার্কেটপ্লেস এ বায়ারদের সাথে ইংরেজিতেই কমিউনিকেশন করা লাগে। 

এ বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারলেই আপনি একজন সফল এবং আশাবাদী ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন।

Freelancing এর সবচেয়ে জনপ্রিয় সেক্টর কোনটি?

ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় সেক্টর যেটি এ সম্পর্কে উপরে বলেছি, তথাপিও এখানে বলছি। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরটি বিলিয়ন ডলারের সেক্টর। বিদেশি মানুষ অর্থাৎ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা প্রভৃতি দেশের মানুষ আউটসোর্সিং করিয়ে ডলার বাঁচাতে চায়, কারণ যে সময়ই তারা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত কাজগুলো করবে সেই সময়টাতে তারা অন্য বিজনেসের কাজ করে তাদের ডলারকে বহুগুনে বাড়ি নিতে পারবে এ আশায়। 

Freelancing-এর-সবচেয়ে-জনপ্রিয়-সেক্টর-কোনটি

আর বাস্তবে তাই ও হয়। আর এই ডলারগুলো পার্শ্ববর্তী কান্ট্রি তথা ভারত ও পাকিস্তান খুব সহজেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়ে নিচ্ছে। আর আমাদের বাংলাদেশের মানুষও এটা থেকে পিছিয়ে নেই। তাই আপনাকে জানতে হবে যে এই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজের সেক্টর কোনটি? 

সম্মানিত দর্শক শ্রোতা ও পাঠক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে বর্তমানে জনপ্রিয় এবং ডিমান্ডেবল সেক্টর হচ্ছে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও ডিজাইন অথবা ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টকে একসাথে করতে পারলে এটাকে ফুল স্ট্যাক ডেভেলপমেন্ট বলা হয়। এটা আরো প্রফিটেবল। তাই এই কাজটিতে সময় দিয়ে আপনি আপনার ক্যারিয়ারের যাত্রাকে অগ্রসরমান করুন!

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ

ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন কাজ রয়েছে যেগুলো শিখলে একটা হ্যান্ডসাম সেলারি বা ইনকাম অর্জন করা যায়। ইতিমধ্যেই ফ্রিল্যান্সিং এর অনেকগুলো কাজ আপনাকে উপরে ধাপে ধাপে বলার প্রয়াস করেছি। এরপরেও এই জায়গায় সিরিয়ালি কিছু Felancing এর কাজ লিখা হলো যেগুলো খুবই কাজের এবং সহজ ও জনপ্রিয়!

  1. Data entry 
  2. Lead generation
  3. Digital marketing 
  4. Google ads 
  5. Facebook advertisement 
  6. Instagram ads 
  7. Graphics design 
  8. Virtual assistant 
  9. Social media marketing 
  10. Social media manager 
  11. Translation 
  12. Transcription 
  13. Web research 
  14. Web scraping 
  15. Email marketing 
  16. Logo design 
  17. Banner design 
  18. Social media design 
  19. Poster design 
  20. Brochure design 
  21. Flyer design 
  22. Thumbnail making 
  23. App development 
  24. Web design 
  25. Web development

এছাড়াও, আরও বিভিন্ন কাজ রয়েছে যে কাজগুলো শিখে মার্কেটপ্লেসে সার্ভিস দিতে পারলে জীবনকে সুন্দরভাবে ঢেলে সাজানো যাবে।

ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি?

ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল এবং পানির মতো স্বচ্ছ সাদা পরিষ্কার এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। কারণ দিন যত যাচ্ছে মানুষের কাজের গতি তত বাড়ছে, ব্যবসা বাড়ছে, কোম্পানি বাড়ছে, ই-কমার্স ওয়েবসাইট ডেভলপ হচ্ছে। যার কারণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকের অনেক প্রয়োজন পড়ছে। 

এছাড়াও, আরো পড়ুনঃ Carrot: গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাগুলো কী বিস্তারিত জানুন

তাই কোনরূপ দ্বিধাদ্বন্দ্ব না করে আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ে আজই আসতে পারেন এবং স্কিলস অর্জন করতে পারেন। আর এই স্কিলগুলো সার্ভিস এ রূপান্তরিত করে জীবনের সুন্দর একটা ক্যারিয়ার দাঁড় করাতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। তাই আজই নেমে পড়ুন, শুরু করুন, শিখুন দক্ষতা বাড়ান এবং মার্কেটপ্লেসে পোর্টফোলিয়ও তৈরি করুন, ক্লায়েন্ট বা বায়ারদের কাজ করে রেভিনিউ জেনারেট করুন!

লেখকের শেষ মন্তব্য

ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় ১৫টি সহজ কাজ 2024 সাল কে ঘিরে আর্টিকেলটি লেখেছি। আর এই ব্লগে লেখার চেষ্টা করেছি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলো কি কি, আরো লেখেছি ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যত কেমন? আবার বর্ণনা করেছি কোন মার্কেটপ্লেস নতুনদের সেরা ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট বিষয়সহ আরো অনেক কিছু। আশা করছি সম্মানিত পাঠক আপনি উক্ত ব্লগটি মনোযোগসহ পড়ে ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয় সহজ কাজগুলো বুঝেছেন। 

তাই আপনি যদি আমাদের সাথে থাকেন, তাহলে আরও এরকম নিত্য নতুন অনলাইন ইনকাম এবং ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় আপনাদের সামনে আনব, এবং এর দ্বারা আপনারা উপকৃত হবেন ও জ্ঞানের ভান্ডারকে সম্পৃক্ত করুন ইনশাআল্লাহ।

FAQs
ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম কোনটি?

বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার বা মুক্তপেশাজীবীদের ফ্রিল্যান্সিং স্বাধীন কাজ করে টাকা পাওয়ার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম বা উপায় হচ্ছে পেওনিয়ার (Payoneer)। যেটি সবচেয়ে জনপ্রিয়। এছাড়াও, রয়েছে যেমন স্ক্রিল, ওয়াইজ, ওয়েবমানি ইত্যাদি।

ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে ভালো দক্ষতা কোনটি?

ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে ভালো দক্ষতা যেটি সেটি হলো ওয়েব ডেভলপমেন্ট ও ওয়েব ডিজাইন, এ ছাড়াও, অ্যাপ ডেভলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও (SEO) ইত্যাদি

2024 সালের বাংলাদেশে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুর করব?

2024 সালে বাংলাদেশে যেভাবে ফিল্যান্সিং করা যাবে তা হচ্ছে একটা লক্ষ্য নিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে কাজ শিখতে হবে। এরপর সেই উন্নত মানের দক্ষতাগুলো মার্কেটপ্লেস বা আউট অফ মার্কেটপ্লেস সার্ভিস প্রদান করে ফ্রিল্যান্সিং এর গতিকে তরান্নিত করা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আব্দুন নূর আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url